সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে তৃতীয়বারের জন্য আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির খেতাব পকেটে পুরল ভারত। ফাইনালে টানটান ম্যাচে কিউয়িদের ৪ উইকেটে হারিয়ে সেরার শিরোপা অর্জন করল টিম ইন্ডিয়া। প্রশ্নাতীতভাবেই গোটা টুর্নামেন্টে দল হিসাবে সবচেয়ে ভালো পারফর্ম করেছে মেন ইন ব্লু। ব্যাটিং থেকে বোলিং, আর কোনও দল সেভাবে ভারতের ধারেকাছেও আসতে পারেনি। আর সেটাই রোহিতদের সাফল্যের চাবিকাঠি। একনজরে টিম ইন্ডিয়ার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ের পাঁচ কারণ।
স্পিন টু উইন: টুর্নামেন্টের শুরুতে ভারতীয় দল যখন পাঁচজন স্পিনার নিয়ে দুবাই গেল, তখন অনেকেই ভ্রু কুঁচকেছিলেন। কিন্তু দুবাইয়ের পিচে স্পিনাররা যে কতটা প্রভাবী হতে পারে সেটা ভালোমতো জানতেন রোহিত শর্মারা। টিম ইন্ডিয়ার সেই স্পিন অস্ত্রেই গোটা টুর্নামেন্টে ঘায়েল করল বিপক্ষকে। বরুণ চক্রবর্তী, কুলদীপ যাদবরা তো বটেই, অক্ষর প্যাটেল রবীন্দ্র জাদেজারাও একাধিক ম্যাচে দলকে জেতানোর মতো বোলিং করলেন। টুর্নামেন্টে স্রেফ ভারতের স্পিনাররাই ২৭টি উইকেট পেয়েছেন। রান দিয়েছেন চারের আশেপাশে।
অনবদ্য ব্যাটিং বিভাগ: সেরা ফর্মের বিরাট কোহলি। শুরুতে ওপেনিং জুটির ভালো খেলা। দরকারের সময় শ্রেয়স আইয়ার, কে এল রাহুলদের নিখুঁতভাবে নিজেদের কাজটা করে দিয়ে যাওয়া। ফ্লোটার হিসাবে অক্ষর প্যাটেল, হার্দিক পান্ডিয়াদের রানের গতি বাড়ানোর প্রবণতা। গোটা টুর্নামেন্টে ভারতের ব্যাটিং বিভাগের প্রত্যেক ব্যাটার নিজেদের দায়িত্ব পালন করে গিয়েছেন। বিশেষ করে বিরাট কোহলি যেভাবে চেজ করতে গিয়ে একাধিক ম্যাচে টিমকে জেতালেন, বা ফাইনালের মতো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে রোহিত, শ্রেয়স, রাহুলরা যে ইনিংসটা খেলে দিলেন, সেটা নিঃসন্দেহে প্রশংসাযোগ্য।
দলে অলরাউন্ডারদের উপস্থিতি: হার্দিক পাণ্ডিয়া, অক্ষর প্যাটেল, রবীন্দ্র জাদেজা। বিশ্বের আর কোনও দল এই মানের তিনজন অলরাউন্ডারের উপস্থিতির কথা ভাবতেই পারে না। অক্ষর, জাদেজা এবং হার্দিকের উপস্থিতি টিম ইন্ডিয়াকে ভারসাম্যের নিরিখে টুর্নামেন্টের সেরা দল হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। হার্দিক প্রায় প্রতি ম্যাচে দ্বিতীয় পেসারের ভূমিকা পালন করেছেন বলেই বরুণ চক্রবর্তীকে প্রথম একাদশে শামিল করা গিয়েছে। ব্যাট-বল কোনও বিভাগেই দরকারের সময় অধিনায়ককে নিরাশ করেননি অক্ষর প্যাটেল। জাদেজাও বল এবং ব্যাট হাতে অবদান রেখেছেন।
রোহিতের অধিনায়কত্ব ও শান্ত ড্রেসিং রুম: চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ঠিক আগে বর্ডার গাভারকর ট্রফির লজ্জার হারে টিম ইন্ডিয়ার ড্রেসিংরুম থেকে একের পর এক অশান্তির খবর প্রকাশ্যে আসছিল। দলের অন্দরের পরিবেশ যে সেসময় সুখকর ছিল না সেটা বলার অপেক্ষা আসে না। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শুরুতেই অদ্ভুদভাবে সবটাই যেন বদলে যায়। রাতারাতি গোটা দল শান্ত। রাতারাতি দল হিসাবে খেলা শুরু করে দেয় ভারত। আসলে ওয়ানডে ফরম্যাটটা অধিনায়ক রোহিত শর্মার প্রিয় ফরম্যাট। তিনি নিজে ব্যাট হাতে পারফর্মও করেছেন। ফলে দলের নিয়ন্ত্রণও অনেক বেশি করে নিজের হাতে রাখতে পেরেছেন। তাছাড়া এই ফরম্যাটে সেই বিশ্বকাপ থেকেই জয়ের ফর্মুলা রপ্ত করে ফেলেছে ভারত। সেকারণেই আদর্শ টিমগেমে রোহিতরা ফের সেরার সেরা হলেন।
একই ভেন্যুতে সব ম্যাচ: অস্বীকার করার কোনও উপায় নেই, একই ভেন্যুতে খেলার কিছুটা হলেও সুবিধা দিয়েছে ভারতকে। টিম ইন্ডিয়াকে গোটা টুর্নামেন্টে একটুও ‘জার্নি’ করতে হয়নি। একই মাঠে, একই পরিবেশে খেলার ফলে ভারতকে নিজেদের জয়ের ফর্মুলাতেও বিশেষ বদল আনতে হয়নি। তাছাড়া দুবাইয়ের পরিস্থিতিও ভারতের অনুকূলও ছিল। তবে দুবাইয়ের মাটিতে পাওয়া এই সামান্য সুবিধার দোহাই দিয়ে কোনওভাবেই টিম ইন্ডিয়ার কৃতিত্বকে ছোট করা উচিত হবে না।