সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল থেকে দক্ষিণ চিন সাগর, চোখ রাঙাচ্ছে লাল ফৌজ। তাই চিনকে রুখতে শক্তিশালী জোট ‘স্কোয়াড’ তৈরি করেছে আমেরিকা। কিন্তু প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই জোটে রাখেননি ভারতকে। তবে ক্ষমতায় ফিরে সেই পথে হাঁটছেন না ডোনাল্ড ট্রাম্প। বেজিংয়ের ‘দাদাগিরি’ রুখতে দিল্লিই তাঁর ভরসা! এবার এই ‘স্কোয়াড’-এ ডাক পেতে চলেছে ভারত। পাশাপাশি আমন্ত্রণ জানানো হবে দক্ষিণ কোরিয়াকেও।
এই মুহূর্তে দক্ষিণ চিন সাগরে সামরিক মহড়া জোরদার করেছে বেজিং। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের কৃত্রিম দ্বীপেও সামরিক ঘাঁটি তৈরি করছে লাল ফৌজ। ফলে বিপন্ন ‘ওপেন ট্রেড রুট’ বা মুক্ত বাণিজ্যপথ। পাশাপাশি গত কয়েকমাস ধরে তাইওয়ান সীমান্তেও একাধিকবার অনুপ্রবেশ ঘটিয়েছে চিনা যুদ্ধবিমান ও রণতরী। যা নিয়ে আমেরিকা ও চিনের মধ্যে সংঘাত আরও তীব্র হচ্ছে। তাই কমিউনিস্ট দেশটির গা জোয়ারি রুখতে গত বছর প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে নয়া কৌশল নেয় ওয়াশিংটন। প্রাক্তন মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিনের নেতৃত্বে গঠন করা হয় স্কোয়াড। এই জোটে আমেরিকার সঙ্গে রয়েছে জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও ফিলিপিন্স। কিন্তু রাখা হয়নি ভারতকে।
এদিকে, আমেরিকার নেতৃত্বেই তৈরি হয়েছিল কোয়াড বা কোয়াড্রিল্যাটারাল সিকিউরিটি ডায়ালগ জোট। যার অংশ ভারত। রয়েছে অস্ট্রেলিয়া, জাপানও। একাধিকবার এই জোটের সামরিক মহড়ায় সাগরে শক্তি প্রদর্শন করেছে দিল্লি। কিন্তু কোয়াডে থাকলেও সরাসরি চিনের সঙ্গে লড়াই যেতে চায় না ভারত। কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যা সমাধানে বিশ্বাসী সাউথ ব্লক। রাশিয়ার সঙ্গেও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ভারতের। অন্যদিকে, নিজস্ব বিদেশনীতির জন্য পশ্চিমা বিশ্বের সমস্ত সিদ্ধান্তে সায় দেয় না ভারত। এই ব্যাপারগুলো খুব একটা ভালোভাবে নেননি প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই কারণে স্কোয়াডে তখন ভারতকে রাখেনি হোয়াইট হাউস।
কিন্তু এখন আমেরিকায় ট্রাম্প জমানা। আর তিনি বিলক্ষণ জানেন, এশিয়া মহাদেশে এই মুহূর্তে সামরিক মহড়ায় চিনকে টেক্কা দেওয়ার মতো শক্তি ভারতেরই রয়েছে। শুল্কযুদ্ধ, অভিবাসন নীতি-সহ একাধিক ইস্যুতে দিল্লি-ওয়াশিংটনের মধ্যে চাপানউতোর চললেও, লাল ফৌজের আগ্রাসন রুখতে এক জোট দু’দেশ। এই পরিস্থিতে জানা গেল, এবার স্কোয়াডে যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হবে ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়াকে। চলছে এমনই পরিকল্পনা। এনিয়ে ফিলিপিন্সের সেনাপ্রধান জেনারেল রোমিও এস ব্রাওনার জানিয়েছেন, “জাপান এবং অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে আমরা স্কোয়াড জোটের সম্প্রসারণ করতে চাইছি। এর জন্য ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়াকে আমন্ত্রণ জানানো হবে।”
ব্রাওনার আরও বলেন, “আমরা ভারতের সঙ্গে হাত মেলাতে চাই কারণ আমাদের শত্রু একজনই। আমার বলতে কোনও বাধা নেই যে চিন আমাদের শত্রু। আমরা সকলেই এই দেশের আগ্রাসন রুখতে। তাই এই মুহূর্তে আমাদের একজোট হওয়া খুবই প্রয়োজন।” তাৎপর্যপূর্ণ দিল্লিতে এক সামিটে যোগ দিয়ে তিনি এই কথা জানান। ফলে মনে করা হচ্ছে, ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে দিল্লির সঙ্গে কথা হয়েছে স্কোয়াডের প্রতিনিধিদের।