ধীমান রক্ষিত: ফের স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে কসবা আইন কলেজ। সম্ভবত সোমবারই শুরু হতে পারে পঠনপাঠন। আলিপুর আদালতে এমনই জানালেন আইনজীবী। তবে বন্ধ থাকবে গার্ডরুম ও ইউনিয়ন রুম। ক্রাইম সিন যেমন ঘেরা রয়েছে তেমনই থাকবে। পুলিশও মোতায়েন থাকবে কলেজ চত্বরে। কলেজে ঢোকার ক্ষেত্রে পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলক। ইতিমধ্যেই নাকি কলেজ খোলা নিয়ে গভর্নিং বডির সঙ্গে একপ্রস্থ কথা বলেন অধ্যক্ষ। আগামী সোমবারও গভর্নিং বডি বৈঠকে বসবে। শিক্ষাদপ্তরও ইতিমধ্যে একটি বৈঠক সেরেছে। এদিকে, গণধর্ষণের তদন্তে শুক্রবার ভোর চারটেয় চার অভিযুক্তকে নিয়ে কলেজে যান সিটের সদস্যরা। ঘণ্টাচারেক ধরে চলে পুনর্নির্মাণ। তারপর ধৃতদের নিয়ে লালবাজারে যান তদন্তকারীরা। কলেজের ইউনিয়ন রুম, গার্ডরুমে থ্রি ডি ম্যাপিং করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ২৭ জুন, শুক্রবার সকাল থেকে কসবার আইন কলেজে গণধর্ষণের ঘটনা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। নির্যাতিতা দাবি করেন, ২৫ জুন, বুধবার সন্ধ্যায় তাঁকে ডাকা হয়েছিল কলেজে। অভিযোগ, সেখানে গেলে তাঁর উপর চড়াও হন তিনজন। গণধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। কাউকে কিছু না বলতে হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। পরে ওই ছাত্রী কসবা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। লালবাজারের সূত্র জানিয়েছে, প্রথমে বিশেষ তদন্তকারী দল বা ‘সিট’-এর পাঁচজন সদস্য কাজ শুরু করেন। এদিন ‘সিট’-এর সদস্য সংখ্যা বাড়ানো হয়। এখন ন’জন ‘সিট’ সদস্য তদন্ত করছেন। নির্যাতিতা ছাত্রী ও তিন অভিযুক্তর রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সেগুলি ডিএনএ পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
ঘটনার রাতে কলেজে ছাত্রীর গণধর্ষণের যে ভিডিওগুলি তোলা হয়, সেগুলি একটি সোশাল মিডিয়ার বিশেষ গ্রুপে শেয়ার করা হয়েছিল বলে খবর আসে পুলিশের কাছে। পুলিশ সেই তথ্য যাচাই করছে। ওই গ্রুপে রয়েছে মনোজিৎ, জায়েব, প্রমিত ও মনোজিতের খুব ঘনিষ্ঠ কয়েকজন। ওই গ্রুপের কেউ বাইরে ভিডিওগুলি ছড়িয়েছে কি না, সেই তথ্য পুলিশ জানার চেষ্টা করছে। তথ্য যাচাইয়ের জন্য গ্রুপের অন্য সদস্যদের পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করবে। পরীক্ষা করা হতে পারে তাঁদের মোবাইলও। অভিযুক্তদের কলেজে নিয়ে গিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ হয়। ইউনিয়ন রুম, গার্ডরুম-সহ কোথায় কী ঘটনা ঘটেছিল, তার বিবরণ দিয়েছে অভিযুক্তরা। চলছে তদন্ত। একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে আসছে। গোটা পরিস্থিতি বিবেচনা করে অনির্দিষ্টকালের জন্য আইন কলেজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় গর্ভনিং বডির সদস্যরা। যদিও শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু সম্প্রতি দাবি করেন, খুব তাড়াতাড়ি স্বাভাবিক ছন্দে ফিরবে কসবা আইন কলেজ। সেই মতো পড়ুয়াদের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে আগামী সোমবার থেকে সম্ভবত শুরু হতে পারে পঠনপাঠন।