সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লাদাখে ‘গণবিক্ষোভে’ উসকানির অভিযোগে আন্দোলনের প্রধান মুখ তথা সমাজকর্মী সোনম ওয়াংচুককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ‘র্যাঞ্চো’র গ্রেপ্তারিতে এবার ফুঁসে উঠলেন তাঁর স্ত্রী গীতাঞ্জলি আংমো। পাশাপাশি, গোটা ঘটনাকে তিনি ‘গণতন্ত্রের সবচেয়ে খারাপ রূপ’ বলেও আখ্যা দিয়েছেন।
গীতাঞ্জলি বলেন, “পুলিশ যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করেই ওয়াংচুককে হেফাজতে নিয়েছে। তারা সোনমের বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে। তাঁকে দেশবিরোধী হিসাবে দাগিয়ে মিথ্যা বর্ণনা ছড়ানো হয়েছে। এটি গণতন্ত্রের সবচেয়ে খারাপ রূপ। কোনও কারণ ছাড়াই, সোনমকে একজন অপরাধীর মতো ধরে নিয়ে গিয়েছে।” এরপরই বিজেপিকে তোপ দেগে তিনি বলেন, “রাজনৈতিক এবং পরিবেশ সংক্রান্ত সমস্যাগুলি নিয়ে যারা কথা বলছেন, গেরুয়া শিবির ইচ্ছাকৃতভাবে তাঁদের কণ্ঠস্বর রোধ করছে। ক্ষমতার অপব্যবহার করছে শাসকদল। যারা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছেন, তাঁদের ভাবমূর্তি নষ্টের জন্য সরকার যা খুশি তাই করছে।” কেন্দ্রকে চ্যালেঞ্জ করে তিনি বলেন, “আমি সরকারের প্রতিনিধিদের চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি, তাঁরা টেলিভিশনে আমার সঙ্গে বিতর্কসভায় অংশগ্রহণ করুন।”
লাদাখে ‘গণবিক্ষোভে’র ২ দিন পর শুক্রবার আন্দোলনের প্রধান মুখ পরিবেশকর্মী সোনম ওয়াংচুককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের উসকানি এবং হিংসায় ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগ তোলা হয়। শুক্রবার এক সাংবাদিক সম্মেলন করার কথা ছিল সোনমের। সেই সাংবাদিক সম্মেলনের ঠিক পাঁচ মিনিট আগে তিনি গ্রেপ্তার হন। সূত্রের খবর, গ্রেপ্তারির পরই সোনমকে লাদাখ থেকে সরিয়ে রাতারাতি নিয়ে যাওয়া হয় লেহ থেকে ১৪০০ কিলোমিটার দূরে রাজস্থানের যোধপুরে।
সোনমের গ্রেপ্তারির পর লেহ-তে যাতে অশান্তি না ছড়ায় সেটা নিশ্চিত করতে শহরের ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। কড়া পুলিশি প্রহরায় রাখা হয়েছে গোটা শহরকে। জমায়েতেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এদিকে ওয়াংচুকের বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই আইনে সরকার স্রেফ সন্দেহের বশে সন্দেহভাজনকে দিনের পর দিন আটকে রাখতে পারে। মেলে না জামিনও। সোনমের সঙ্গেও তেমনটা হতে পারে বলে তাঁর অনুগামীদের আশঙ্কা।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবারই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক একটি বিবৃতিতে জানিয়েছিল, ‘বহু নেতা সোনমকে অনশন প্রত্যাহারের আহ্বান জানালেও তিনি তা শোনেননি। আরব বসন্তের কায়দায় বিক্ষোভে উসকানি দিয়ে গিয়েছেন। শুধু তাই নয়, নেপালের জেন জি আন্দোলনের উল্লেখ করে জনগণকে বিভ্রান্ত করেছেন।’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছিল, ‘সোনমের উসকানিমূলক বক্তৃতায় উদ্বুদ্ধ হয়ে একদল জনতা অনশনস্থল ত্যাগ করে হিংসাত্মক আন্দোলনে যোগ দেন। একটি রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ের পাশাপাশি লেহ-এর সরকারি দপ্তরেও হামলা চালানো হয়েছে। এটা স্পষ্ট যে, সোনমের উসকানিমূলক মন্তব্যের কারণেই জনতা প্রভাবিত হয়েছেন।’ উল্লেখ্য, সোনমের শিক্ষামূলক সংস্থার বিদেশি তহবিল গ্রহণের অনুমোদন ইতিমমধ্যেই বাতিল করেছে কেন্দ্র।