সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: সোনম ওয়াংচুকের ‘অবৈধ’ গ্রেপ্তারিতে হস্তক্ষেপের আবেদন করে ও অবিলম্বে তাঁর মুক্তির আর্জি জানিয়ে রাষ্ট্রপতিকে চিঠি লিখলেন সোনমের স্ত্রী গীতাঞ্জলি আংমো। আবেদনপত্র পাঠানো হল প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী, লাদাখের উপরাজ্যপাল ও লাদাখ পুলিশের কাছেও।
জম্মু-কাশ্মীর পুনর্বিন্যাস আইন ২০১৯ সালে পাশ হওয়ার পর থেকেই লাদাখের ষষ্ঠ তফসিলের দাবিতে আন্দোলন করছেন লাদাখবাসী। এই আন্দোলনের অন্যতম প্রধান মুখ আন্তর্জাতিক পুরস্কার জয়ী সোনম। আগাগোড়া তাঁদের আন্দোলন ছিল শান্তিপূর্ণ। গত সপ্তাহে হঠাৎ করেই যা হিংসাত্মক হয়। প্রাণ যায় চারজনের। আহতের সংখ্যা আশির বেশি। এরপরই জাতীয় সুরক্ষা আইনে গ্রেপ্তার করে যোধপুরের জেলে নিয়ে যাওয়া হয় সোনমকে। আগেই দীর্ঘ দুই সপ্তাহ অনশনে থাকা সোনমের শারীরিক অবস্থাও একেবারেই ভালো নয়। এই পরিস্থিতিতে গীতাঞ্জলির অভিযোগ, আটক করার পর থেকে সোনমের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করা যায়নি। এককাপড়ে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে পৈতৃক ভিটে থেকে।
দাবি, দীর্ঘ অনশনের পর অসুস্থ সোনমের আদৌ কোনও চিকিৎসা হচ্ছে কিনা, সেই সম্পর্কেও কোনও তথ্য নেই তাঁদের কাছে। এই পরিস্থিতিতে দেশের প্রথম নাগরিকের শরণাপন্ন হয়ে গীতাঞ্জলির প্রশ্ন, এই দেশে কি শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করার অধিকার নেই? জলবায়ু রক্ষার কথা বলা কি অপরাধ? তাঁর কি স্বামীর সঙ্গে কথা বলার অধিকার নেই? সোনমের কি আইনি লড়াই করার কোনও অধিকার নেই? গোটা পরিস্থিতির ব্যাখ্যা করে সোনমকে মুক্ত করতে হস্তক্ষেপ করার আবেদন করে রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হলেন গীতাঞ্জলি।
উল্লেখ্য, ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পাকিস্তানে আয়োজিত হয়েছিল রাষ্ট্রসংঘের জলবায়ু সম্মেলন। সেখানে যোগ দিয়েছিলেন লাদাখের সমাজকর্মী তথা পরিবেশবিদ সোনম ওয়াংচুক। এই ইস্যুকেই হাতিয়ার করে কুৎসা করা হচ্ছে সোনমকে নিয়ে, দাবি তাঁর স্ত্রীর। পাকিস্তানের সঙ্গে যোগ থাকার অভিযোগ খারিজ করে সোনমের স্ত্রী বলেছেন, ‘‘সোনম ওয়াংচুকের সঙ্গে যে পাক যোগের তত্ত্ব ছড়ানো হচ্ছে তা মিথ্যা ও মানহানিকর। আমাদের রাষ্ট্রসংঘের জলবায়ু সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল ওখানে। পরিবেশ রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে ওই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রশংসা করেছিলেন উনি।’’ সেই অনুষ্ঠানের ভিডিও সোশাল মিডিয়াতে শেয়ারও করেন গীতাঞ্জলি।