সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চার দশক বাদে চুরাশির শিখ দাঙ্গার দায় স্বীকার করলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। স্পষ্ট বললেন, “কংগ্রেসের ইতিহাসের বহু ‘ভুলে’র সময় আমি উপস্থিত ছিলাম না। কিন্তু সেইসব ভুলের জন্য যদি দায় নিতে হয়, তাহলে আমি হাসিমুখে সেই দায় মেনে নেব।” লোকসভার বিরোধী দলনেতার কথাতেই স্পষ্ট, শিখ দাঙ্গাকে তিনি কংগ্রেস তথা রাজীব গান্ধীর ঐতিহাসিক ভুল বলেই মনে করেন।
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর হত্যার পর ১৯৮৪ সালে কার্যত শিখনিধন যজ্ঞ চলেছিল দেশজুড়ে। ১৯৮৪-র দাঙ্গায় সবচেয়ে বেশি মানুষ গণহত্যায় মারা গিয়েছিলেন৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের রিপোর্ট অনুযায়ী, সেই ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ছিল ৩৩২৫ জন। বেসরকারি হিসাবে সংখ্যাটা অনেক অনেক বেশি। ৪০ বছর পরেও শিখ দাঙ্গার কালো দাগ মুছে ফেলতে পারেনি কংগ্রেস। সেই ঘটনার জন্য ইতিমধ্যেই পাঞ্জাববাসীর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ডঃ মনমোহন সিং। ক্ষমা চেয়েছেন ইউপিএ চেয়ারপার্সন সোনিয়া গান্ধীও। রাহুল নিজেও এ প্রসঙ্গে ক্ষমা চেয়েছেন।
এরপরও শিখ দাঙ্গার ক্ষত পিছু ছাড়েনি কংগ্রেসের। সম্প্রতি রাহুল গিয়েছিলেন আমেরিকায়। সেখানেই শিখ দাঙ্গা এবং শিখদের সঙ্গে কংগ্রেসের করা ‘অন্যায়’ নিয়ে অপ্রীতিকর প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয় তাঁকে। এক শিখ যুবক রাহুলকে প্রশ্ন করলেন, “আপনি বলেন বিজেপি জমানায় আমাদের পাগড়ি পরার স্বাধীনতা থাকছে না, সঙ্গে কৃপাণ রাখার অনুমতি মিলবে না। কিন্তু আমরা তো শুধু এটাই চাই না। আমরা আমাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা চাই, ধর্মাচরণের স্বাধীনতা চাই। যেটা কংগ্রেসের সময়ও বারবার লঙ্ঘিত হয়েছে।”
ওই শিখ যুবকের প্রশ্নের জবাবেই রাহুল গান্ধী বলেন, “আমি সেসময় বলতে চেয়েছিলাম, এমন এক ভারত তৈরি হওয়া উচিত নয়, যেখানে কেউ নিজের ধর্মাচরণ করতে গিয়ে ভয় পাবে। আর কংগ্রেস পার্টির ভুলের কথা যদি বলেন, সেগুলির বেশিরভাগই সেসময় ঘটে গিয়েছে যখন আমি ছিলাম না। তবে আমি হাসিমুখেই সেই দায় স্বীকার করতে রাজি।” এরপরই রাহুল শিখ দাঙ্গার জন্য ক্ষমা চেয়ে নিয়ে বলেন, “আমি আগেও প্রকাশ্যে বলেছি আটের দশকে যা হয়েছিল, সেটা ভুল। আমি বহুবার স্বর্ণমন্দিরে গিয়েছি। শিখদের সঙ্গে আমার সম্পর্কও খুব ভালো।” শিখ দাঙ্গার সময় প্রধানমন্ত্রী ছিলেন রাহুলের বাবা রাজীব। রাহুল কি ঘুরিয়ে মেনে নিলেন, তাঁর বাবা ভুল করেছিলেন?