শিলাজিৎ সরকার: ডার্বির আগে লাল-হলুদ সমর্থককুলের মধ্যে হতাশা ছিল মহম্মদ রশিদের না থাকা নিয়ে। পিতৃবিয়োগের জন্য শুক্রবার রাতে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন যিনি। রবিবার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের ডুরান্ড কাপ থেকে নকআউট করার পর ইস্টবেঙ্গল শিবিরেও শুধু প্যালেস্টাইনের মিডফিল্ডারের কথা।
শৌভিক চক্রবর্তী যেমন। ম্যাচের আগেই বলেছিলেন, জিতে পিতৃহারা সতীর্থকে উৎসর্গ করতে চান তিনি। খেলা শেষে টিম বাসে ওঠার আগে বঙ্গ মিডফিল্ডার বলছিলেন, “আমরা আজ একটা দল হিসাবে খেলে সাফল্য পেয়েছি। আগেই বলেছিলাম, জয়টা রশিদকে উৎসর্গ করতে চাই। এই জয় ওর জন্য।” কোচ অস্কার ব্রুজোও বলছিলেন, “ডার্বির পরিকল্পনা রশিদকে রেখেই করেছিলাম। ও না থাকায় সেই পরিকল্পনা বদল করতে হয়েছে। আমরা ওর পাশে আছি। এই জয় ওকে উৎসর্গ করতে চাই।” ডার্বির শেষ প্রস্তুতি শেষে চেনা সাংবাদিককে রশিদ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, “কোয়ার্টার ফাইনালে কোনও সম্ভাবনা নেই। তবে সেমিফাইনালে খেলবে রশিদ।” তখনই যেন ডার্বি জয়ের গন্ধ পেয়ে গিয়েছিলেন লাল-হলুদের স্প্যানিশ হেডস্যর। টিমবাসে ওঠার আগে বললেন, “আশা করছি সেমিফাইনালে রশিদকে পাব। লাল-হলুদ শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকারও আশাবাদী, বুধবার ডায়মন্ডহারবার এফসি-র বিরুদ্ধে শেষ চারের লড়াইয়ে পাওয়া যাবে প্যালেস্তাইনের মিডফিল্ডারকে। এদিন সমর্থকরাও চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের টিপ্পনি কাটলেন, “এবার রসিদ (পড়ুন রশিদ) ছাড়া হারলাম, পরেরবার জিএসটি সহ হারাব!”
গত মরশুমে এমনই এক ডার্বির কয়েক ঘণ্টা আগে ইস্টবেঙ্গলের দায়িত্ব নিতে কলকাতা এসেছিলেন অস্কার। ভোররাতে শহরে পৌঁছেই সন্ধ্যায় বসে পড়েছিলেন লাল-হলুদ ডাগআউটে। সেদিন তো বটেই, পরের ম্যাচেও মোহনবাগানের কাছে হার মেনেছিল অস্কারের দল। কিন্তু এদিন যেন সুদে-আসলে সব পুষিয়ে নিলেন। ম্যাচ শেষে বলছিলেন, “গতবছর ডার্বিতে আমরা ভালো খেলতে পারিনি। এবার সেই আক্ষেপ মেটালাম। সঙ্গে পাশে থাকার জন্য সমর্থকদের ধন্যবাদ।”
ডার্বি জিতেই সেমিফাইনালের ভাবনা শুরু করে দিয়েছেন অস্কার। বলে গেলেন, “আমরা ডুরান্ডে আরও একটা ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছি। কাল থেকে সেমিফাইনালের জন্য পরিকল্পনা শুরু করে দেব। গতবার দল হিসাবে আমরা বারবার কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছি। এবার তেমন কিছু হোক চাই না।” ডার্বি জয়ের মধ্যেও হামিদ আহদাদের চোট নিয়ে উৎকণ্ঠা রয়েছে সমর্থকদের মধ্যে। মরোক্কান ফরোয়ার্ডের চোট বিশেষ গুরুতর নয় বলেই খবর। কোচ অস্কার অবশ্য জানালেন, সোমবার পরীক্ষার পরই পরিস্থিতি পরিষ্কার হবে।
এরমধ্যেই সেমিফাইনালের টিকিট বিক্রির বিজ্ঞপ্তি জারি করলেন ডুরান্ড আয়োজকরা। সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত ইস্টবেঙ্গল গ্যালারির অফলাইন টিকিট পাওয়া যাবে লাল-হলুদ তাঁবুর বক্স অফিসে। ডায়মন্ডহারবার এফসি-র অফলাইন টিকিট পাওয়া যাবে মহামেডান ক্লাবের বক্স অফিসে। অনলাইন টিকিটের ‘রিডাম্পশন’ হবে মহামেডানের বক্স অফিসে। সবটাই হবে বেলা ১১টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত।