স্টাফ রিপোর্টার: চিঠি-পালটা চিঠিতে জেরবার আইএফএ। কলকাতা লিগ নিয়ে জট অব্যাহত। বৃহস্পতিবার আইএফএ ইস্টবেঙ্গল-ডায়মন্ডহারবার এফসি ম্যাচ দিলেও, ম্যাচটিতে নামছে না ডায়মন্ডহারবার। তাদের তরফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, আই লিগ দ্বিতীয় ডিভিশন ও আরএফডিএলে খেলার জন্য ১৩ তারিখের ম্যাচটির দিন পরিবর্তন করতে চায় তারা। এই পরিস্থিতিতে আইএফএ ঘরোয়া লিগের সূচি পরিবর্তন না করে আরএফডিএলের ১৪ ফেব্রুয়ারি ম্যাচটি পিছিয়ে দিতে অনুরোধ করে কর্তৃপক্ষকে। সেই অনুরোধ মেনে শুক্রবারের ডায়মন্ডহারবার এফসির ম্যাচ পিছিয়ে দেয় আরএফডিএল।
কিন্তু বুধবার সন্ধ্যায় এই তথ্য জানতে পেরে বৃহস্পতিবার ঘরোয়া লিগের ম্যাচ খেলতে রাজি হয়নি ডায়মন্ডহারবার এফসি। তাদের স্পষ্ট জবাব, গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের চব্বিশ ঘণ্টারও কম সময়ের আগে এই পরিবর্তনের খবর আসায় তাদের পক্ষে ইস্টবেঙ্গল ম্যাচ খেলা সম্ভব নয়। ডায়মন্ডহারবার এফসির সহ-সভাপতি আকাশ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “চব্বিশ ঘণ্টাও বাকি নেই। ম্যাচের আগের দিন সন্ধ্যা ছটার সময় আইএফএ জানাচ্ছে, শুক্রবার আরএফডিএলের ম্যাচ হবে না। বৃহস্পতিবার ঘরোয়া লিগ খেলতে হবে। এত কম সময়ে কি এত গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের মানসিক প্রস্তুতি নেওয়া যায়? আমরা চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছি, বৃহস্পতিবার ম্যাচ খেলতে পারব না। যেহেতু তিনটে দলের খেলা বাকি ছিল, তিনজনকে নিয়ে বসে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হতে পারত।” আইএফএ সচিব ডায়মন্ডহারবার এফসির চিঠির প্রাপ্তিস্বীকার করে বলেন, “বৃহস্পতিবারের ম্যাচের দিন পরিবর্তন সম্ভব নয়। আমরা এই ম্যাচের দিন ঘোষণা করেছিলাম ২০ জানুয়ারি। ম্যাচের চব্বিশ ঘণ্টা আগে সূচি প্রকাশ করেছি এমনটা নয়।” লাল-হলুদের শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার জানিয়েছেন, “বৃহস্পতিবার কিশোরভারতী স্টেডিয়ামে উপস্থিত থাকবে ইস্টবেঙ্গল।”
এখানেই শেষ নয়, রাতে আইএফএ-র দুই সহ-সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস ও সৌরভ পাল সচিব অনির্বাণ দত্ত-সহ শীর্ষ আধিকারিকদের ই-মেল করে কলকাতা লিগ পরিচালনা পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। সেই চিঠিতে সরাসরি লিগ পরিচালনা পদ্ধতি নিয়ে বলতে গিয়ে দুই সহ-সভাপতি প্রশ্ন তুলে চিঠিতে লেখেন, “লিগটা যেন আইএফএ সংবিধান মেনে সম্পন্ন করে। যতদূর জানি একটা দলের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের ভিত্তিতে দুটো ডিসিপ্লিনারি কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়নি। পরে সেই ডিসিপ্লিনারি কমিটির কোনও সভাও হয়নি। তারপর আদৌ ডিসিপ্লিনারি সভা ডেকে সিদ্ধান্তে পৌঁছানো গিয়েছে কিনা তাও জানি না। বলা ভালো জানানোর প্রয়োজন বোধ করা হয়নি। সব নিয়ম মেনেই এই ম্যাচ আয়োজন করছে আইএফএ? কী করে যতক্ষণ না কোনও বিতর্কিত ম্যাচের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া না যায়, কীভাবে সেই দলেরই আবার ম্যাচ দেওয়া যায়? আইএফএ-র গঠনতন্ত্রের নিয়ম কী বলছে?” স্বরূপ-সৌরভ ডায়মন্ডহারবার এফসি ম্যাচের কথা উল্লেখ করেছেন ওই চিঠিতে। যে ম্যাচে রেফারির সিদ্ধান্ত নিয়ে ঝামেলা হওয়ায় বিষয়টি ডিসিপ্লিনারি কমিটি পর্যন্ত গড়িয়েছিল। যে সিদ্ধান্ত এখনও নেওয়া যায়নি বলেই দাবি দুই সহ-সভাপতির।
এবার লিগ শুরুর আগে গড়াপেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। গতবার কয়েকটি ম্যাচ সন্দেহজনক বলে ফেডারেশন থেকেও রিপোর্ট এসেছিল আইএফএ-র কাছে। সেই প্রসঙ্গ নিয়েও আইএফএ সহ-সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস বলেন, “আইএফএ-র সংবিধান কি আদৌ মানা হচ্ছে? না কি কিছু মানুষ নিজেদের মতো করে চালনা করছেন? কীভাবে আইএফএ প্রতি পদে পর্যুদস্ত হচ্ছে? একজন আইএফএ অফিস বেয়ারার হয়ে অসম্মানিত বোধ করছি। আরও একটি বিষয় দেখা যাচ্ছে, যাদের বিরুদ্ধে বেটিংয়ের অভিযোগ তাদের শুধু জরিমানা করে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। এটা কি কিছু মানুষের বেআইনি কাজ করতে প্রবণতা বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না!” স্বরূপ বিশ্বাসদের চিঠিতে ময়দানের সাসপেন্ড হওয়া এক ক্লাব-কর্তার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। যিনি শাস্তি বহাল অবস্থায় প্রিমিয়ারের একটি ম্যাচে মাঠে রিজার্ভ বেঞ্চের কাছে উপস্থিত ছিলেন। যা বেআইনি। দুই সহ-সভাপতির এই চিঠি পাননি বলে জানান আইএফএ সচিব।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন