‘সুপ্রিম’ রায়ে চাকরিহারা বাগদার বহু, থমথমে নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়ানো ‘সৎ রঞ্জনে’র মামাভাগ্নে গ্রাম

‘সুপ্রিম’ রায়ে চাকরিহারা বাগদার বহু, থমথমে নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়ানো ‘সৎ রঞ্জনে’র মামাভাগ্নে গ্রাম

জ্যোতিষ খবর/ASTRO
Spread the love


জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: নিয়োগ দুর্নীতি মামলার জন্য় একসময় শিরোনামে চলে আসে উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার মামাভাগিনার চড়ুইগাছি রামনগর কুরুলিয়া এলাকা। কারণ, ওই গ্রামের বাসিন্দা চন্দন মণ্ডল গ্রেপ্তার হন শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায়। অভিযোগ, এলাকার অন্তত ১০০ জনকে চাকরি দিয়েছিলেন চন্দন। তার বিনিময়ে কারও থেকে নিয়েছেন ২ লক্ষ টাকা। আবার কারও থেকে তারও বেশি নেয় বলেই অভিযোগ। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের রায়ে মামাভাগনে ব্লকের অনেকেই চাকরি হারিয়েছেন। চাকরিহারাদের হাহাকারে ভারী গোটা গ্রাম।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বাতিল ২০১৬ সালে এসএসসি প্যানেল। একধাক্কায় বাতিল বাতিল ২৫ হাজার ৭৫২ জন শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীর চাকরি। সেই তালিকায় রয়েছেন বাগদা ব্লকের অনেকেই। বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে এলাকার পরিবেশ পালটে গিয়েছে। চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকারা নিজেদের ঘরবন্দি করে রেখেছেন। গ্রামে গিয়ে দেখা গেল এলাকার পরিবেশ থমথমে। এক মহিলা জানান, “এলাকার অনেকেরই চাকরি চলে গিয়েছে। তাঁরা ঘরে চুপচাপ বসে আছেন। কেউ বিয়ে করেছেন। কারও বাচ্চা রয়েছে। কীভাবে সংসার চলবে তাঁরা কেউ জানেন না।” চাকরি গিয়েছে মামাভাগিনা গ্রামের বাসিন্দা মিঠুন বিশ্বাস, ভীম মণ্ডলদের। তাঁদের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, মিঠুন নামখানার একটি স্কুলে এবং ভীম গঙ্গাসাগরে চাকরি করতেন। মিঠুনের মা বলেন, “গরিব মানুষ ২ লক্ষ টাকা চন্দন মণ্ডল ওরফে সৎ রঞ্জনকে চাকরির জন্য দিয়েছিলাম। ছেলের চাকরি চলে গেল। এবার কোথায় যাব আমরা?” সকাল থেকে বাড়িতে রান্না হয়নি ভীম মণ্ডলের। তাঁর মা বলেন, “গঙ্গাসাগরে রয়েছে ছেলে। কথা হয়েছে। বলল বাড়ি ফিরছে।” হতাশ সুরে বলেন, “জমি বিক্রি এবং সুদে ধার নিয়ে কিছু টাকা চন্দনকে দিয়েছিলাম। তারপর ছেলে চাকরি পায়। এবার যে কী করি?”

গ্রামবাসীরা জানান, বাগদা ব্লকে যাঁদের চাকরি চলে গিয়েছে তাঁদের বেশিরভাগই ‘অযোগ্য’। মামাভাগ্নে গ্রামের বাসিন্দা চন্দন মণ্ডলকে টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন। চন্দন মণ্ডলের প্রতিবেশী হারাম বিশ্বাস বলেন, “এখানে যাদের চাকরি গিয়েছে, তাঁরা চন্দনকে টাকা দিয়ে অবৈধভাবে চাকরিতে ঢুকেছিলেন। অনেকে সাদাখাতা জমা দিয়েও চাকরি পেয়েছিল। তবে চাকরি যাওয়া এক যুবকের কাকা সন্তোষ মণ্ডল অবশ্য সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরোধিতায় সরব। তাঁর প্রশ্ন, “আমার ভাইপো প্রণব পরীক্ষা দিয়ে যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরি পেয়েছে। কাউকে কোনও টাকাপয়সা দিতে হয়নি। তাহলে তার চাকরি যাবে কেন?” স্থানীয় যুবক দেবব্রত ঢালি বলেন, “এই তালিকায় অনেক যোগ্য রয়েছেন। যোগ্যদের চাকরি চলে গিয়েছে সরকারের গাফিলতিতে। রাজ্য সরকার যদি অযোগ্যদের বাদ দিয়ে দিত তাহলে এই সমস্যা হত না।”



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *