সাফল্য ও খ্যাতির সম্পর্ক, ‘সফল’ মানুষের জটিল সংজ্ঞা!

সাফল্য ও খ্যাতির সম্পর্ক, ‘সফল’ মানুষের জটিল সংজ্ঞা!

ইন্ডিয়া খবর/INDIA
Spread the love


খ্যাতনামা হলেই কি ‘সফল’ বলা যায়? প্রচলিত জনবিশ্বাস এমন মনে করে বটে, যদিও মনে রাখতে হবে, সাফল্য কিন্তু ‘খ্যাতি’-র সঙ্গে সম্পর্কিত নয়।

থিয়েটারের লোকদের সিনেমার জগৎ সবসময় ‘আলাদা’ নজরে দেখে এসেছে। সে-দৃষ্টিক্ষেপে শ্রদ্ধা যেমন মিশে থাকে, তেমনই থাকে সন্দেহ ও দূরত্বের বৃষ্টিছাঁট। এমনই একজন অভিনেতার সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন বিরাট বড় প্রোডাকশন কোম্পানির মালকিন। তিনি আবার বিশিষ্ট অভিনেত্রীও। গুণ এবং গ্ল্যামারের মোহময় সহাবস্থান ঘটেছে তাঁর চরিত্রে। যে-অভিনেতার সন্ধানে এই অভিনেত্রীর পদার্পণ, তিনি চমৎকার অভিনয় করেন, তবে খানিক কি খামখেয়ালি নন? না হলে এত বড় প্রোডাকশন কোম্পানির ‘অফার’ পেয়ে প্রত্যেকে যখন পুতুলনাচে আগ্রহী হয়ে ওঠে, প্রোডাকশন কোম্পানি যেমন বলে যেমন চায়, তেমন আচরণ করতে ব্যস্ত ও ব্যগ্র হয়– এই ব্যক্তি সেরকমটা করছেন না কেন? সে কারণের মর্মে যেতে চান মালকিন।

অভিনেতার সঙ্গে দেখা ও কথা বলে, অতঃপর তাঁর জীবনে একটি দিগন্ত উন্মোচিত হল। অভিনেতা অল্প কথায়, কিন্তু ভীষণ বলিষ্ঠভাবে বুঝিয়ে দিলেন যে– প্রোডাকশন কোম্পানির বিরাট ‘অফার’ তাঁকে অর্থ দিতে পারে, বিখ্যাতও হয়তো করে তুলতে পারে– কিন্তু কখনওই ‘সাকসেস’ বা সাফল্য দিতে পারবে না, কারণ এই অভিনেতা, যথেষ্ট ধনবান না হয়েও, বিপুল খ্যাতনামা না হয়েও নিজেকে ‘সফল’ বলেই মনে করেন। তাঁর সাফল্য তাঁর মনের স্বাধীনতায় নিহিত। যখন যেমন করতে চান, তখন তেমন করতে পারেন– এই শিল্পোচিত উড়ান তাঁকে এ

তখানি আত্মবিশ্বাসী করে রেখেছে যে, নিজেকে ‘সফল’ ভাবতে তিনি আদৌ কুণ্ঠিত নন।
বিক্রমাদিত্য মোতওয়ানের পরিচালনায় একটি বিশিষ্ট ওটিটি প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পেয়েছিল ‘জুবিলি’– যার সঙ্গে ছায়াকাহিনির মতো জড়িয়ে রয়েছে দেবিকা রানি ও ‘বম্বে টকিজ’-এর আখ্যান। কথিত, দেবিকা রানি প্রেমসম্পর্কে লিপ্ত হয়েছিলেন নাজমুল হাসানের সঙ্গে। ‘খ্যাতি’ ও ‘সাফল্য’-র মধ্যে যে সূক্ষ্ম কিন্তু সমুদ্রসম তফাত রয়েছে, তা ‘জু্‌বিলি’-তে তুলে ধরা হয়েছিল নাজমুল হাসানের মুখেই। তবে এ-চরিত্র যেহেতু কাল্পনিক, নাম আলাদা, শুধু ইতিহাসের কুয়াশা খেয়ে সমৃদ্ধ, তাই চরিত্রটির অস্তিত্বের অনুমানকে আমরা মানসকল্পনায় রেখেও অসত্য বলে পুরোপুরি উপেক্ষা করতে পারি না।

‘সফল’ শব্দের সঙ্গে অর্থের ঐশ্বর্য অনিবার্যভাবে জড়িয়ে। যে-ব্যক্তি সফল, সে সমাজের উচ্চকোটির ব্যবস্থার সঙ্গে সহজেই মিশে যেতে পারে অর্থের কৌলীন্যে– এই জনবিশ্বাসকে অবহেলা করা হয়তো সম্ভব নয়, কিন্তু ‘সাফল্য’ যে একটি ‘অ্যাটিটিউড’ মাত্র, তাও তো স্বীকার করতে হয়। যে মনে করে তার সাফল্য শুধুমাত্র বাইরের জগতের কিছু তৈরি করা মানদণ্ডে চালিত হবে না, সে অবশ্যই ‘সফল’– কারণ, তার অ্যাটিটিউড তাকে একই সঙ্গে প্রাণিত করে নিজের মতো অর্জনের দিকে, আবার অর্থের দাসত্ব ও গোলামি না-করার সপক্ষে। ‘সফল’ মানুষের সংজ্ঞা তাই বহুপঠিত হয়েও, অধরা।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *