সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: খ্রিস্টান সমাজের নেতা নয়, একেবারে সাধারণ মানুষের মতোই শেষকৃত্য চেয়েছিলেন। তার জন্য মাসছয়েক আগে ভ্যাটিকানের নিয়মও বদলে দিয়েছিলেন। সেই নতুন রীতিতেই বিদায় জানানো হবে প্রয়াত পোপ ফ্রান্সিসকে। তবে কবে কীভাবে তাঁর শেষকৃত্য হবে, সেই নিয়ে ভ্যাটিকানের তরফে এখনও কিছু জানানো হয়নি।
Ceremony of Burial for Roman Pontiffs নামের বইতে লেখা আছে, কিভাবে সমাধিস্থ করা হবে পোপকে। কিন্তু নিজের পূর্বসূরিকে সমাধিস্থ করার পরই ফ্রান্সিস সিদ্ধান্ত নেন, এমন জাঁকজমকপূর্ণ এবং জটিলভাবে বিদায় নিতে চান না তিনি। তাঁর শেষকৃত্য এমনভাবে হবে, যেন তাঁকে খ্রিস্টান সমাজের প্রধান মনে না হয়। বরং যিশুর এক সামান্য সেবক হিসাবে যেন তাঁকে বিদায় জানানো হয়। দীর্ঘ ৯ মাস ধরে পোপের শেষকৃত্য সংক্রান্ত নিয়ম বদল নিয়ে আলোচনা করেন পোপ ফ্রান্সিস। অবশেষে ২০২৪ সালের ২০ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে বদল করা হয় পোপের শেষকৃত্যের নিয়ম।
দীর্ঘ ৬০০ বছর ধরে নিয়ম ছিল, পোপের শয়নকক্ষে এসে তাঁর দেহ পরীক্ষা করবেন বিশেষ চিকিৎসক। সেখান থেকেই সরকারিভাবে মৃত্যুর খবর প্রকাশ করা হবে। কিন্তু পোপ ফ্রান্সিস তাঁর পূর্বসূরিদের মতো অ্যাপসলিক প্রাসাদে থাকতেন না। ভ্যাটিকানের সান্টা মারটা হোটেলের একটি ছোট্ট সুইট ছিল তাঁর ঠিকানা। ফ্রান্সিসের ইচ্ছা ছিল, ওই সুইটে যে চ্যাপেল রয়েছে সেখান থেকেই সরকারিভাবে তাঁর মৃত্যুর খবর ঘোষণা হোক। ওই চ্যাপেলেই শায়িত থাকবে পোপের নশ্বর দেহ।
সেখান থেকে সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকায় নিয়ে যাওয়া হবে পোপের দেহ, যেখানে আমজনতা শেষ শ্রদ্ধা জানাবেন। আগে নিয়ম ছিল, অনেকখানি উঁচুতে উঠিয়ে রাখা হবে পোপের দেহ, সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। সেই নিয়মও বদলে দিয়েছিলেন ফ্রান্সিস। তাঁর দেহ থাকবে গির্জার বেঞ্চের সমান উচ্চতায়। সেখানে মোমবাতিও জ্বলবে। অন্যান্য পোপদের মতো সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকা নয়, ফ্রান্সিসকে সমাধি দেওয়া হবে সেন্ট মেরি মেজর ব্যাসিলিকায়। কারণ মাতা মেরির ভক্ত ছিলেন ফ্রান্সিস। তাই তাঁর চরণেই শেষ আশ্রয় নিতে চেয়েছিলেন তিনি। সাইপ্রেস, লেড এবং ওকের তৈরি দামি কফিন নয়, পোপ ফ্রান্সিসের ইচ্ছা মেনে তাঁকে সমাধিস্থ করা হবে সাধারণ কফিনে।