সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হয় ভোটচুরি সংক্রান্ত যাবতীয় অভিযোগ হলফনামা আকারে ৭ দিনের মধ্যে জমা দিন। না হলে প্রকাশ্যে ক্ষমা চান। রাহুল গান্ধীকে চ্যালেঞ্জ নির্বাচন কমিশনের। পালটা কংগ্রেস বলছে, কমিশনের বক্তব্যেই স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে কীভাবে বিজেপির তরফে পক্ষপাতিত্ব করা হচ্ছে।
দিন কয়েক আগে ভোটার তালিকা তুলে ধরে ভুয়ো ভোটার সংক্রান্ত একগুচ্ছ অভিযোগ করেন রাহুল। লোকসভার বিরোধী দলনেতা দাবি করেন, মোট ছ’রকম ভাবে ভোটচুরি হচ্ছে। এমনকী ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনেও বিজেপি নির্বাচন কমিশনের সাহায্যে বহু আসনে ভোটচুরি করে জিতেছে বলে দাবি করেন কংগ্রেস নেতা। গত কয়েকদিন লাগাতার এই অভিযোগে সরব হচ্ছেন রাহুল। এমনকী ভোটমুখী বিহারে রবিবার থেকে ভোট অধিকার যাত্রাও শুরু করেছেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা।
রবিবার মূলত রাহুলের সেই অভিযোগগুলির জবাব দেওয়ার জন্যই সাংবাদিক বৈঠক করে কমিশন। ‘ভোটচুরি’র মতো আপত্তিকর শব্দ ব্যবহার করে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অভিযোগে নাম না করে লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীকে তুলোধোনা করেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার। এদিন জ্ঞানেশ কুমার দাবি করেন, “কমিশনের ঘাড়ে বন্দুক রেখে জনগণকে নিশানা করে রাজনীতি চলছে। সাধারণ ভোটারদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এভাবে মিথ্যাকে সত্যি করা যাবে না।” মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের সাফ কথা, ‘ভোটচুরি’র মতো আপত্তিকর শব্দ ব্যবহার করে দেশকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। এটা সংবিধানের অপমান ছাড়া আর কিছু নয়। এই ধরনের এত নিখুঁত প্রক্রিয়ার পরও এত ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হচ্ছে। এর উদ্দেশ্য কী বোঝাই যাচ্ছে।” জ্ঞানেশ কুমার কংগ্রেসের নেতার উদ্দেশে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে বলে দেন, রাহুল গান্ধী যে সব অভিযোগ করেছেন, ৭ দিনের মধ্যে সেগুলির প্রমাণ-সহ হলফনামা দিতে হবে। নাহলে দেশবাসীর উদ্দেশে ক্ষমা চাইতে হবে। আর সেটা না করলে ধরে নেওয়া হবে রাহুলের অভিযোগ ভ্রান্ত।”
কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ সোশাল মিডিয়ায় বলছেন, “নির্বাচন কমিশন রাহুল গান্ধীকে হুমকি দিচ্ছেন। সেটার জবাবে একটা কথাই বলব, রাহুল গান্ধী নিজে থেকে কিছু বলেননি। নির্বাচন কমিশনের নিজের তথ্যে কী গরমিল আছে, সেটাই শুধু তুলে ধরেছেন। আসলে নির্বাচন কমিশন এদিন শুধু যে নিজেদের অক্ষমতা তুলে ধরল তাই নয়, একই সঙ্গে বিজেপির প্রতি পক্ষপাতিত্বও স্পষ্ট হয়ে গেল।” মজার কথা হল, রাহুল গান্ধী যেমন কর্নাটকের এক আসনের ভোটের তথ্য তুলে ধরে ভোটচুরির অভিযোগ তুলেছিলেন, তেমনই বিজেপি নেতা অনুরাগ ঠাকুরও একই রকমভাবে বিরোধীদের জেতা আসনে ভুয়ো ভোটার রয়েছে বলে দাবি করেছিলেন। কমিশন রাহুলকে সাতদিনের মধ্যে হলফনামা আকারে তথ্য দেওয়ার চ্যালেঞ্জ করলেও, অনুরাগ ঠাকুরের উদ্দেশে তেমন কোনও চ্যালেঞ্জ করেনি। সেটা নিয়েও প্রশ্ন তুলছে কংগ্রেস।