অর্ণব দাস, বারাকপুর: ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে চরম উত্তপ্ত পরিস্থিতি। একে অপরের উপর হামলায় মৃত্যু মিছিল দু’দেশেই। এমন পরিস্থিতিতে মধ্য ইজরায়েলের রেহাত শহরে আটকে পড়েছেন খড়দহের বন্দিপুর উপনিবেশের বাসিন্দা দিব্য মুখোপাধ্যায়। সেখানকার ইউনিভার্সিটি অফ জেরুজালেমে এগ্রিকালচারের প্ল্যান্ট প্যাথলজির উপর ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে পোস্ট ডক্টরেট পড়তে গিয়েছেন বছর ছত্রিশের এই যুবক। চলতি বছর অক্টোবরে পড়াশোনা শেষ করে বাড়ি ফেরার কথা তাঁর। এরই মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে চরম উৎকণ্ঠায় দিব্যর পরিবার।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার থেকে ইরানের রাজধানী তেহরান-সহ একাধিক স্থানে নজিরবিহীন হামলা চালানো শুরু করেছে ইজরায়েল। তারা অভিযানের নাম দিয়েছে ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’। ইজরায়েলের দাবি, বিতর্কিত পরমাণু অস্ত্র তৈরির দোরগোড়ায় পৌঁছে গিয়েছে ইরান। তাই নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার্থেই এই হামলা। জবাবে পালটা ইজরায়েলের উপরও হামলা শুরু করেছে ইরান। একে অপরের বিরুদ্ধে বেলাগাম মিসাইল হামলায় প্রাণ হারাচ্ছেন দুই দেশের সাধারণ নাগরিক। ইজরায়েলকে জবাব দিতে হাইপারসনিক মিসাইল ছুড়েছে ইরান। লাগাতার হামলার জেরে এখনও পর্যন্ত ইরানে মৃত্যু হয়েছে পাঁচশোর বেশি মানুষের। বুধবার সকালেও একে অপরকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে দুই দেশ। এমন পরিস্থিতিতে দিব্যদের গবেষণার কাজে ল্যাবে যেতে বারণ করেছে সেখানের সরকার। বাড়িতেই থাকতে হচ্ছে তাঁদের। আর সাইরেন বাজলেই প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে চলে যেতে হচ্ছে আন্ডার গ্রাউন্ড শেল্টারে।
এদিন সকালেও সাইরেন বেজেছিল জানিয়ে দিব্যর কাকা শুভময় মুখোপাধ্যায় বলেন, “দিব্যরা যেখানে থাকে সেখান থেকে মাইল দেড়েক দূরে গত শনিবার গোলা পড়েছিল। তখন সাইরেন বাজার পাশাপাশি মোবাইলে অ্যালার্ট এলে ওঁরা আন্ডার গ্রাউন্ড শেল্টারে চলে গিয়েছিল। তারপর থেকে রবি, সোম পরপর দু’দিন বেশ কয়েকবার সাইরেন বেজে মোবাইলে অ্যালার্ট এসেছে। এদিন সকালেও সাইরেন বাজলে ওরা শেল্টারে চলে গিয়েছিল।” তবে, দিব্যর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে পরিবারের। ভিডিও কলে কথা হচ্ছে। বছর খানেক আগে গাজা-ইজরায়েল সংঘর্ষ সময় পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাওয়ায় দিব্য চলে এসেছিলেন। মাস খানেক থেকে আবার ফিরে যায়। এখনও পর্যন্ত পরিস্থিতি তেমন জায়গায় যায়নি বলেই দিব্য জানিয়েছেন। তবু পরিবার চিন্তায় রয়েছে। এদিন সকালেই দিব্যর বাড়িতে গিয়ে খোঁজখবর নেয় রহড়া থানার পুলিশ। তাঁরা কথা বলেন পরিবারের সঙ্গে। পুলিশের থেকে কোনও সহযোগিতার প্রয়োজন হয়, তা নির্দ্বিধায় জানালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন রহড়া থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক ঋকবেদ সাহা।