সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নতুন রাজনৈতিক দলকে স্বাগত জানাবে বিএনপি। কিন্তু সরকারে বসে, সমস্ত সুযোগ সুবিধা নিয়ে তারপর রাজনৈতিক দল গঠন মেনে নেওয়া হবে না। এমনই হুঁশিয়ারি দিয়েছে খালেদা জিয়ার দল। তাদের ইঙ্গিত যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের দিকে তা স্পষ্ট। কারণ আর কয়েকদিনের মধ্যে আত্মপ্রকাশ ঘটতে চলেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন রাজনৈতিক দলের। যার প্রধান হচ্ছেন অন্তর্বর্তী তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। যিনি গত বছর জুলাই আন্দোলনের সময় সামনের সারিতে ছিলেন। তবে রাজনৈতিক দল প্রকাশ্যে এলেই পদক্ষেপ করবেন বলে জানিয়েছেন নাহিদ।
জানা গিয়েছে, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগির জানিয়েছেন, “সরকারে বসে সব ধরণের সুবিধা নিয়ে নতুন দল গঠন মেনে নেওয়া হবে না।” নির্বাচনের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতা হস্তান্তরের আন্তরিকতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তিনি। জানিয়েছেন, “একটা ক্রান্তিকালে আছি আমরা। পুরো দেশের মানুষ গণতান্ত্রিক পথে ফিরতে চায়। সন্দেহ তৈরি হয়েছে, সরকার আদৌ নির্বাচন করাতে আন্তরিক কি না।”
এদিকে, ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে দেশের দক্ষিণের জনপদ জেলা খুলনায় বিএনপির ছাত্রদলের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের দফায় দফায় হামলা-সংঘর্ষের পর খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। ক্যাম্পাসে থমথমে পরিস্থিতির মধ্যে বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের ৯৩তম সভায় এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, “রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকার সম্পৃক্ততা পেলে শিক্ষার্থীদের আজীবন বহিষ্কার ও ছাত্রত্ব বাতিল করা হবে। শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও কোনও ধরনের রাজনৈতিক সংগঠনের কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবেন না।”
এদিকে, বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যেই ভাঙনের ঝড় উঠেছে। জল্পনা উসকে এই আন্দোলনের কয়েকজন সমন্বয়ক নতুন ছাত্র সংগঠনের ঘোষণা করেছেন। সাংবাদিক সম্মেলনে নতুন ছাত্র সংগঠনের ঘোষণা করে এক সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসুদ বলেন, “নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের জন্য নতুন ছাত্র রাজনীতি দরকার। এজন্য নতুন ধারার লেজুড়বৃত্তিহীন ছাত্র রাজনীতিকে আমরা স্বাগত জানাই। যারা নতুন ছাত্রসংগঠনে যোগ দেবে তারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে পদত্যাগ করে যাবে।” এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে নতুন সংগঠনের ছাত্ররা আরও জানান, “বৈষম্যবিরোধীদের সঙ্গে নতুন ছাত্র সংগঠনের কোনও সম্পর্ক না থাকলেও আদর্শিক জায়গা থেকে তাদের মধ্যে কোনও বিরোধ নেই। রাজনৈতিক প্রয়োজনে তারা বৈষম্যবিরোধীদের ছাতার নিচ থেকে বের হয়ে আলাদা সংগঠন করছেন। এই সংগঠন কোনও লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতি করবে না। এর স্লোগান হবে স্টুডেন্ট ফার্স্ট, বাংলাদেশ ফার্স্ট।” বিশ্লেষকদের মতে, ছাত্ররা মুখে যাই বলুক না কেন নানা বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে। নতুন রাজনৈতিক দলের মাথা নাহিদ ইসলামকে করা নিয়ে নানা মতবিরোধ তৈরি হয়েছে। মনে করা হচ্ছে, ক্ষমতার বণ্টন নিয়েই বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের মধ্যে ফাটল দেখা দিয়েছে।