সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত তিনদিন ধরে বিদ্রোহের আগুনে পুড়ছে পাক অধিকৃত কাশ্মীর। প্রতিবাদীদের দমন করতে নৃশংস অত্যাচার চালাচ্ছে পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী। বুধবার পাক সেনার গুলিতে অন্তত ৮ জন সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। গতকালও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ২জনের মৃত্যু হয়েছিল। তবে তাতেও পাক সরকারের মন গলেনি। পাক অধিকৃত কাশ্মীরে অতিরিক্ত ১০০০ সেনা মোতায়েন হতে চলেছে বলে সূত্রের খবর।
পাক সরকারের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষোভে ফুঁসছে অধিকৃত কাশ্মীর। অভিযোগ, গোটা অঞ্চলে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পরিকাঠামো ও পানীয় জলের অভাব গুরুতর। বারবার দাবি জানানো হলেও সরকারের তরফে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। সরকারি কাজে অবহেলা, দুর্নীতি, ঘুষ মাত্রাছাড়া আকার নিয়েছে। এর বিরুদ্ধে সমগ্র অধিকৃত কাশ্মীর জুড়ে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলেন নীলম ভ্যালি পাবলিক অ্যাকশন কমিটির মুখপাত্র শওকত নওয়াজ মির। তিনি বলেন, ধৈর্যের সীমা অতিক্রম করেছে। সরকার যদি এভাবে জনগণকে অবহেলা করে তবে তার প্রতিক্রিয়া তো আসবেই। অন্যদিকে প্রশাসনের তরফে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে কোনওরকম ধর্মঘট বরদাস্ত করা হবে না।
মিরের ডাকে সাড়া দিয়ে সোমবার হাজার হাজার মানুষ ব্যানার হাতে নিয়ে পথে নামেন। পুরো অঞ্চল জুড়ে ‘শাটার ডাউন ও চাক্কা জ্যাম’ করা হয়। এই পরই সেই বিক্ষোভ দমন করতে মাঠে নামে পাক সেনা ও আইএসআই সমর্থিত মুসলিম কনফারেন্সের সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা। টানা তিনদিন ধরে সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন পাক অধিকৃত কাশ্মীরের আমজনতা। তাতেই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুমিছিল। বুধবার নতুন করে সেনার গুলিতে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। অতিরিক্ত সেনা পাঠিয়ে, ইন্টারনেট বন্ধ করে দমনপীড়ন চালাচ্ছে পাক প্রশাসন।
পাক সেনা ও দুর্বৃত্তদের এই নৃশংসতার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন মির। তিনি বলেন, ‘সরকারের কাছে আমাদের দাবি ছিল, গত ৭০ বছর ধরে এখানকার জনগণকে তাঁদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে। হয় আমাদের অধিকার ফেরাতে হবে, অন্যথায় জনগণের ক্রোধের মুখোমুখি হতে হবে।’ ২০২৪ সালে ঠিক একইরকম আন্দোলনে ফুঁসে উঠেছিলেন অধিকৃত কাশ্মীরের জনতা। এক বছরের মাথায় ফের একই ঘটনায় চাপ বাড়ছে শাহবাজ সরকারের।