সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পেরিয়েছে ৩৫ বছর। সরকারি চাকরি দেওয়ার নামে ২০০ টাকা নিয়েছিলেন যুবকের থেকে। টাকা পাওয়ার পর কপূর্রের মতো উবে গিয়েছিলেন। খোঁজ পাননি প্রতারিত যুবক। থানায় অভিযোগও জানিয়েছিলেন। কিন্তু হদিশ পাওয়া যায়নি। অবশেষে গ্রেপ্তার হলেন অভিযুক্ত। পেলেন ছাড়াও।
সালটা ১৯৯০। সদ্য তরুণ ভেঙ্কটেশ মহাদেব বৈদ্য। স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে পা রেখেছেন কলেজে। বাড়িতে অভাব। মা-বাবা মা দিনমজুর করেন। কোনও মতে সংসার চলে। পড়াশোনার পাশাপাশি কাজের খোঁজ করছেন ভেঙ্কটেশ। পরিচয় হয় বি কেশবমূর্তি রাওের সঙ্গে। ২০০ টাকার বিনিময়ে চাকরি সরকারি চাকরি পাইয়ে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন বি কেশবমূর্তি।
সেই সময় ২০০ টাকার মূল্য অনেক। বিশেষ করে দিন মজুরের পরিবারের। কিন্তু সরকারি চাকরি পাওয়ার হাতছানি উপেক্ষা করতে পারেনি ভেঙ্কটেশ। কোনওরকম টাকা জোগার করে তা দেন কেশবমূর্তিকে। ব্যস! টাকা নিয়েও হাওয়া তিনি। আর কোনও যোগাযোগ করা যায়নি। সেইদিন ২০০ টাকা খুঁইয়ে অসহায় ভেঙ্কটেশের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গিয়েছিল। অভিযোগ জানান পুলিশে। তদন্ত শুরু হয়। তবে তদন্তকারীরা খুঁজে পাননি অভিযুক্তকে।
এরপরে নিজের নিষ্ঠা প্রতিভা কাজে লাগিয়ে ব্যাঙ্কে চাকরি পান ভেঙ্কটেশ। বদলে গিয়েছে জীবন। সেই দিন চোখের জল মুছে জীবনে প্রতিষ্ঠিত। অবসর নিয়েছেন চাকরি জীবন থেকেও। প্রায় ভুলেই গিয়েছিলেন সদ্য তরুণ বয়সে তাঁর সঙ্গে হওয়া প্রতারণার কথা। কিন্তু প্রতিবছর থানা থেকে তাঁকে ফোন করে জানানো হতে অভিযুক্তকে পাওয়া যায়নি। সম্প্রতি থানা থেকে ফোন আসে। ভেঙ্কটেশ ভেবেছিলেন একই কথা বলা হবে। তবে তাঁকে জানানো হয়, অভিযুক্তকে ধরা হয়েছে। কিন্তু কী করে?
ভেঙ্কটেশ অভিযোগ জানিয়েছিলেন সিরসি গ্রামীণ থানায়। সম্প্রত সেই থানার আধিকারিক বদল হন। নতুন অফিসার সবচেয়ে কেস ফাইলগুলি খুলে দেখতে থাকেন। তখনই নজর পড়ে ২০০ টাকার প্রতারণার কেসটিতে। খোঁজ খবর নেওয়া শুরু করেন। জানতে পারেন অভিযুক্ত বি কেশবমূর্তি রাও এখন বেঙ্গালুরুতে থাকেন। এক পুলিশকর্মীকে সেখানে পাঠান তিনি। সব দিক থেকে নিশ্চিত হওয়ার পরেই বি কেশবমূর্তিকে গ্রেপ্তার করা হয় পুলিশ।
১৯৯০ সালের ব্যক্তি কেশবমূর্তি এখন ৭২ সালের বৃদ্ধ। তাঁকে প্রথমে চিনতেই পারেননি ভেঙ্কটেশ। অভিযুক্তকে আদালতেও তোলা হয়। সেখানেই ভেঙ্কটেশ আদালতে জানিয়ে দেন তিনি আর চান না, কেশবমূর্তি জেল খাটুক। তবে সেই দিন ২০০ হারিয়ে অনেক কষ্ট পেয়েছিলেন তা আজও মনে রেখেছেন বলে জানিয়েছেন। এদিকে সেই দিনের ঘটনার জন্য ক্ষমাও চেয়েছেন বৃদ্ধ কেশবমূর্তি।