সমুদ্রের জলে বিষাক্ত ছত্রাকের বিস্ফোরণ! দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ায় মৃত্যুমুখে ২০০ প্রজাতির সামুদ্রিক প্রাণ

সমুদ্রের জলে বিষাক্ত ছত্রাকের বিস্ফোরণ! দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ায় মৃত্যুমুখে ২০০ প্রজাতির সামুদ্রিক প্রাণ

রাজ্য/STATE
Spread the love


সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এমনও হয়! জলের মধ্যে যেন বিস্ফোরণের মতো করে ছড়িয়ে পড়ছে বিষ। যে জল বেঁচে থাকার আধার, এখন সেটাই হয়ে উঠেছে মৃত্যুকূপ! সম্প্রতি দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার উপকূল জুড়ে অজস্র সামুদ্রিক জীবনের মৃতদেহ পড়ে থাকার করুণ ছবিটা বিষাক্ত ছত্রাকের অভিশাপকেই ইঙ্গিত করছে। সংরক্ষকদের মতে, সমুদ্রের জলে ওই ছত্রাকের বাড়বাড়ন্ত মাছেদের কাছে বিভীষিকাসম! দেখেশুনে তাঁরা বলছেন, অস্ট্রেলিয়ার ক্যাঙারু দ্বীপ যতটা বড়, ততটা জায়গা জুড়ে বিষের সাম্রাজ্য বিস্তার করেছে ওই ছত্রাক। ফলে বিপদ বাড়ছেই। এভাবে বংশবিস্তার করতে থাকলে সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্র ছারখার হয়ে যাবে।

দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার সমুদ্র উপকূলে এক সপ্তাহ ধরেই ছবিটা চোখে পড়ছে। বালুভূমিতে ছড়িয়ে ছোট-বড় নানা আকারের মাছ, সামুদ্রিক জীবের নিথর দেহ। অন্তত সাড়ে চার হাজার বর্গ কিলোমিটার জুড়ে ‘অ্যালগাল ব্লুম’ বা জলজ ছত্রাকের বিষাক্ত প্রভাব দেখা যাচ্ছে। বলা হচ্ছে, জলের মধ্যে একটা বিষের চাদরের মতো এই ছত্রাক ছড়িয়ে পড়েছে। এতটাই তা জীবনধারণের পক্ষে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে যে এক জায়গা থেকে অন্যত্র সাঁতার কেটে পর্যন্ত চলাচল করতে পারছে না জলজ প্রাণীরা। ফলে হাঙর, মাছ-সহ বিভিন্ন প্রাণীর মৃত্যুর কারণ হয়ে উঠছে। চিন্তা দিনদিন বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা এই পরিস্থিতি দেখে অবাক। বলছেন, এমন পরিস্থিতি আগে দেখেননি তাঁরা।

সমুদ্রতীরে মাছেদের মৃতদেহ। ছবি: সংগৃহীত।

ঠিক কী ঘটছে সমুদ্রের জলে? স্পষ্ট করে বললে, জলের মধ্যে একধরনের সর্বগ্রাসী ছত্রাক জন্ম নিয়েছে। যা এমন হারে বংশবিস্তার করছে, যা বিস্ফোরণের সমান। এই ছত্রাক শুধুই বিষ উৎপন্ন করে। সমুদ্রের জল থেকে অক্সিজেন শুষে নিতে থাকে, রং বদলে যায়। জলের আভ্যন্তরীণ উষ্ণতা বেড়ে যায়। আরও অনেক ক্ষতিই হয়। গবেষক ভানেসা পিরোত্তা, ব্র্যাড মার্টিনরা বিশ্লেষণ করে জানাচ্ছেন, আসলে সমুদ্রের জলে নাইট্রোজেন বা ফসফরাসের পরিমাণ বেড়ে গেলে এই বিপদ ঘটে। ছত্রাক এমনভাবে জলের উপরিতল ঢেকে দেয় যে সূর্যের আলো প্রবেশ করতে পারে না। সালোকসংশ্লেষ ঘটাতে পারে না সামুদ্রিক উদ্ভিদের দল, অক্সিজেনের অভাবে হয় শ্বাসকষ্ট। ফলে ধীরে ধীরে মৃত্যু হয় তাদের। খাবারের অভাব ঘটে সামুদ্রিক প্রাণীদেরও। ভেঙে যায় জলের অভ্যন্তরের খাদ্যশৃঙ্খল। বাস্তুতন্ত্রের দফারফা ঘটে যায়।

এত বড় সামুদ্রিক প্রাণীও ছত্রাকের দাপটে মৃত্যুমুখে। ছবি: সংগৃহীত।

বিপদ রয়েছে আরও। মানুষের ক্ষেত্রেও বিপজ্জনক এই ছত্রাক। দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার প্রশাসনের তরফে সাঁতারুদের বারণ করা হয়েছে, আপাতত সমুদ্রে যাতে সাঁতার না কাটে। এমনকী সৈকতও এড়িয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। কারণ, ছত্রাকে বিষে মানুষের ত্বকে জ্বালা ধরায়। আবার যেহেতু সমুদ্রে অক্সিজেনের পরিমাণও কমে যায়, তাই শ্বাসকষ্টও স্বাভাবিক। এসব কারণে সৈকত ভ্রমণ বা সমুদ্রের জলে সাঁতার কাটায় জারি হয়েছে নিষেধাজ্ঞা।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *