সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এটা সিনেমা না, যে ‘পায়ে পড়ি বাঘমামা’ গাইলে শান্ত হবে বাঘ। অথচ বাঘের ডেরায় আচমকা অসহায় পরিস্থিতিতে পড়েন একদল পর্যটক। রাজস্থানের রণথম্ভৌর জাতীয় উদ্যানের কাণ্ড। হুডখোলা গাড়িতে চেপে জঙ্গল ও বন্যপ্রাণ দেখে বেরিয়েছিলেন ২০ জন পর্যটক। আচমকা জঙ্গলের মধ্যে বিকল হয় গাড়িটি। এরপর সাহায্য করার বদলে পর্যটককে ফেলে পালায় গাইড! কার্যত গভীর জঙ্গলে ভয়ংকর বিপদে পড়েন পর্যটকেরা। তারপর?
জঙ্গল থেকে বেরোনোর কোনও রাস্তায় মিলছিল না। অভয়ারণ্যের ভিতরে মোবাইলের নেটওয়ার্ক নেই। ফলে বাইরের কাউকে যোগাযোগ করা অসম্ভব। এদিকে অন্ধকার নেমে আসছে চোখের সামনে! বাঘের ভয়ে জোরে কথা বলার সাহস ছিল না পর্যটকদের। অথচ সঙ্গে ছিল বেশ কয়েকটি শিশু। তাদের ক্রমাগত চুপ করানোর চেষ্টা করেন বাবা-মায়েরা। জানা গিয়েছে, এভাবেই তীব্র উৎকণ্ঠা এবং আতঙ্কে প্রায় পৌনে দু’ঘণ্টা জঙ্গলে কাটান ২০ জন পর্যটক! শেষ পর্যন্ত সুভাগ্যে বাঁচার ক্ষীণ রাস্তা মেলে।
একটি গাড়িকে দেখতে পান আটকে থাকা পর্যটকেরা। সেই গাড়ি দাঁড় করিয়ে সাহায্য চাওয়া হয়। যদিও তাতে একজনের জায়গা হয়। একজন পর্যটকই তাতে চেপে জঙ্গলের মূল ফাটকের সামনে থাকা চৌকোর কর্মীদের পরিস্থিতির কথা জানান। যদিও তাঁরাও সাহায্য করেনি বলে অভিযোগ। শেষ পর্যন্ত রাত পৌনে ৮টা নাগাদ উদ্ধারকারী দল পৌঁছোয় ওই আটকে থাকা পর্যটকদের কাছে। সেই গাড়িতে করেই ফেরানো হয় আটকে পড়া মানুষগুলিকে। যদিও এতেও শেষ হয়নি ঝামেলা। উদ্ধারকারী দলের গাড়ির হেডলাইট খারাপ হয়ে যায়। চালক ঝুঁকি নিয়ে এক হাত টর্চ এবং অন্য হাতে স্টিয়ারিং ধরে গাড়ি চালান। ওভাবেই জঙ্গল থেকে বের করা হয় পর্যটকদের।
রণথম্ভৌর জাতীয় উদ্যান রাজস্থানের অন্যতম জনয়প্রিয় পর্যটনস্থল। এই জঙ্গলে রয়েছে ৭০টি বাঘ এবং ১৩০টি চিতাবাঘ। বন বিভাগের এক ঊর্ধ্বতন কর্তা জানান, শনিবারের ঘটনা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে সাসপেন্ড করা হয়েছে তিন ক্যান্টারচালক এবং গাইডকে।