সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হিন্দি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কার্যত যুদ্ধ ঘোষণা করেছে দক্ষিণের রাজ্যগুলি। এই আবহেই এবার তামিল অস্মিতা উসকে দিয়ে নব দম্পতিদের নয়া প্রস্তাব মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিনের। উত্তর ভারত বা ইংরেজি নয়, তাঁদের সন্তানদের তামিল নাম রাখার প্রস্তাব দিলেন তিনি। স্ট্যালিনের আরও বার্তা মাতৃভাষাকে নিজের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে মিশিয়ে ফেলতে হবে।
সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি যখনই কোনও বিয়ের অনুষ্ঠানে যাই নবদম্পতিকে অনুরোধ তাঁরা যেন তাঁদের হবু সন্তানদের তামিল নাম রাখেন। আমরা তামিলনাড়ুতে বসবাসকারী তামিল। অথচ নামকরণের ক্ষেত্রে আমরা প্রায়শই বেছে নেই উত্তর ভারত বা ইংরেজি থেকে। এটা ঠিক নয়। আমি সকলকে অনুরোধ করছি, আপনারা আপনাদের সন্তানদের তামিল নাম রাখুন।” এর পাশাপাশি স্থানীয় ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বার্তা দিয়ে বলেন, “আপনারা সকলে আপনাদের দোকানকে নিজের সন্তান বলে মনে করেন। যদি দোকানের নাম ইংরেজি থাকে তবে তামিল শব্দে সেই নাম বদলে দিন। তামিল ভাষা, সংস্কৃতিকে নিজের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে মিশিয়ে ফেলুন। আপনার দোকানের নাম যদি ইংরেজিতেও থাকে তবে তা তামিল ভাষায় লিখুন।”
উল্লেখ্য, জাতীয় শিক্ষানীতির বিরোধিতায় নতুন করে ভাষাযুদ্ধ শুরু হয়েছে তামিলনাড়ুতে। হিন্দি ভাষাকে জোর করে চাপিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলে ইতিমধ্যেই আন্দোলনে মুখর হয়ে উঠেছে তামিলনাড়ু। কেন্দ্রের এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী স্ট্যালিন। রাজ্যবাসীকে লক্ষ্য বেঁধে দিয়ে তামিলনাড়ুর স্বার্থে লড়াইয়ের বার্তা দিয়েছেন স্ট্যালিন। তিনি জানিয়েছেন, ‘হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার যে কোনও রকম ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে একজোট হয়ে লড়াই করতে হবে আমাদের।’ শুধু তাই নয়, কাগজে সাক্ষর করার সময় ইংরেজি ছেড়ে তামিল ভাষায় সাক্ষর করার প্রস্তাব দেন তিনি।
যদিও স্ট্যালিনের এই ভাষাযুদ্ধ ও তামিল অস্মিতার পিছনে কিছুটা রাজনৈতিক স্বার্থও রয়েছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। ২০২৬ সালে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে তামিলনাড়ুতে। সেই নির্বাচনে শাসকদল ডিএমকের মুখ্য প্রতিদ্বন্দ্বী এআইএডিএমকে। সম্প্রতি বিজেপির তরফে ঘোষণা করা হয়েছে আসন্ন নির্বাচনে এআইএডিএমকের সঙ্গে জোট বেঁধে তামিলনাড়ুতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তারা। এই জোটের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তামিল অস্মিতাকেই অস্ত্র করে তুলতে চাইছেন স্ট্যালিন। বিজেপিকে হিন্দির ধারক ও তামিলবিরোধি হিসেবে তুলে ধরতে মরিয়া ডিএমকে।