ষাটেও ছাদনতলায়, আজকের নারী-পুরুষরা কোন ‘ম্যাজিকে’ হারিয়ে দিচ্ছেন বয়সকে?

ষাটেও ছাদনতলায়, আজকের নারী-পুরুষরা কোন ‘ম্যাজিকে’ হারিয়ে দিচ্ছেন বয়সকে?

ইন্ডিয়া খবর/INDIA
Spread the love


সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘হাতের উপর হাত রাখা খুব সহজ নয়।’ শঙ্খ ঘোষের ‘সঙ্গিনী’ কবিতার প্রথম লাইনটি এক অমোঘ সত্যকে ধারণ করে আছে। এই সত্যের ভার অনেকেই বইতে ভয় পান। আর যতই বয়স বাড়ে, ধীরে ধীরে সেই ভয় আরও বাড়ে। তাই একটি নির্দিষ্ট বয়সের পর আর বিয়ের সরণিতে হাঁটতে মন চায় না। কিন্তু এতদিনের সেই ‘ট্যাবু’ গত কয়েক বছরে বারবার ভেঙে খানখান হয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি অল্প সময়ের ব্যবধানে বিয়ে করেছেন দিলীপ ঘোষ ও মহুয়া মৈত্রের মতো দুই দাপুটে রাজনীতিবিদ। ফলে নতুন করে আলোচনায় উঠে এসেছে বেশি বয়সে বিয়ের প্রসঙ্গ।

একটা সময় ছিল যখন মনে করা হত চল্লিশ পেরনো মানেই ধূসরতার এক অঞ্চলে ঢুকে পড়া। কুড়ি-তিরিশের সেই মসৃণ চাঞ্চল্য যেন ঝরে গিয়েছে হাতের মুঠো থেকে ঝরে পড়া বালির মতো। কিন্তু আজ দিন বদলেছে। চল্লিশ পেরনো বয়সেও বহু মানুষ ‘মিড লাইফ ক্রাইসিস’-এর মুখের উপর দরজা বন্ধ করে রেখেছে। হইহই করে বেঁচে থাকার বয়স এখন পঞ্চাশ ছুঁইছুঁই হয়ে গিয়েছে। এমনকী তার পরও। আর এই জায়গা থেকেই বিয়ে করতেও সংশয়, ব্রীড়া, ভয়কে পিছনে ফেলেই একবিংশ শতাব্দীর পৃথিবীতে অনেকেই এগিয়ে যাচ্ছেন সহজেই। তাই ষাট পেরিয়েও দিলীপ, পঞ্চাশ পেরিয়েও মহুয়া অনায়াসে গাঁটছড়া বাঁধছেন পছন্দের সঙ্গী/সঙ্গিনীর সঙ্গে।

আসলে আধুনিক ‘মাইন্ড সেট’ বয়সজনিত ভাবনাচিন্তার শৃঙ্খলে বাঁধা পড়তে চায় না। বয়স যে সংখ্যামাত্র, তা আর তত্ত্বকথা নয়। যেন এক জীবনদর্শন হয়ে উঠছে আজকের পঞ্চাশোর্ধ্বদের। মনোবিদরা বলছেন, এটা প্রজন্মগত পরিবর্তন। এবং অনেকেই বিলম্বিত বিয়েকে বাছছেন কেরিয়ারের গোলের কথা ভেবে। জীবনে থিতু হয়ে সব দিক সামলে তবেই ছাদনাতলায় যাওয়া মনস্থ করছেন তাঁরা। নারী বা পুরুষ, উভয়তই এই মানসিকতা লক্ষ করা যাচ্ছে। এবং প্রথম বিয়ে ব্যর্থ হলে এই বয়সে এসে দ্বিতীয় বিয়ের কথাও ভাবছেন অক্লেশে। সেক্ষেত্রে সন্তানের কথা নিশ্চয়ই মাথায় রাখতে হচ্ছে। তবে তাড়াহুড়ো না করে, ধীরেসুস্থে পা ফেললে এবং সর্বোপরি সন্তানদের যদি ঠিক করে পরিস্থিতিটা বোঝানো যায়, তাহলে এতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়।

কেবল একটা কথা মাথায় রাখতে হবে। কুড়ি বা তিরিশের ঘরে বিয়ে করা আর পঞ্চাশ-ষাটের ঘরে এসে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া এক নয়। বয়সকে তুড়ি মেরে দেওয়া মানে একটা পজিটিভ ভাবনা নিয়ে এগিয়ে চলা। কিন্তু তার মানে বেশি বয়সের সমস্যাগুলিকে ভুলে থাকা নয়। বরং সেই প্রতিকূলতাগুলিকেও মাথায় রেখে এগোতে হবে। তাহলেই আর ভাবনা নেই। আসলে নিজের সঙ্গে নিজের সম্পর্কটায় মরচে পড়তে না দেওয়া। খোলা মনে বর্তমানকে গ্রহণ করতে চাওয়ার আকুতি। এতেই হবে কেল্লা ফতে। নতুন যুগ। নতুন সময়। হাতের উপর হাত রাখা সহজ না হোক, ভেবেচিন্তে ধরতে পারলে তা অসম্ভব নয়। বয়স সেখানে কোনও ‘ভিলেন’ হতে পারে না এই বদলে যাওয়া দিনকালে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *