শ্বাসরোধে খুনের পর প্রমাণ লোপাটে রেললাইনে মা ও দুই মেয়ের দেহ? চাঞ্চল্য পুরুলিয়ায়

শ্বাসরোধে খুনের পর প্রমাণ লোপাটে রেললাইনে মা ও দুই মেয়ের দেহ? চাঞ্চল্য পুরুলিয়ায়

জীবনযাপন/LIFE STYLE
Spread the love


সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: শ্বাসরোধ করে খুন করে রেললাইনে ফেলা হয়েছে মা ও দুই মেয়ের মৃতদেহ? খুনের প্রমাণ লোপাট করতেই কি দেহ রেললাইনে ফেলার পরিকল্পনা করা হয়েছিল? একাধিক প্রশ্ন ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। ইতিমধ্যেই মৃতদের পরিচয় জানা সম্ভব হয়েছে। সোমবার ভোর রাতে বাঘমুন্ডির সুইসা-তোরাং স্টেশনের মাঝ থেকে এই তিনটি মৃতদেহ উদ্ধার করে রেল পুলিশ। খুন নাকি আত্মহত্যা সেই নিয়ে চর্চা শুরু হয়। পরে পুলিশের তদন্তে একাধিক তথ্য উঠে আসে।

খড়গপুর রেল পুলিশ সুপার দেবশ্রী সান্যাল বলেন, “মৃতদেহগুলি উদ্ধারের পর সুরতহাল করা হয়। কিন্তু সেখানে ট্রেনের কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই। স্বত:প্রণোদিত খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।” রেললাইনের থেকে পাওয়া যায় মা কাজল মাছুয়া (২৫) ও দুই কন্যা সাত বছরের রাখি, ১৩ বছরের রাধার মৃতদেহ। রাখির ফ্রকের এক অংশ তার গলায় পেঁচানো। মা কাজলের মুখের উপরে নখ দিয়ে আঁচড়ানোর একাধিক চিহ্ন। আর তারপাশে থাকা তার বোন রাধার মৃতদেহের মুখে ধারালো অস্ত্রের দাগ। ফলে অন্য কোথাও খুন করে দেহ লাইনে ফেলার বিষয়টি ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের।

রেল ও রাজ্য পুলিশের তদন্তকারীদের তদন্তে প্রাথমিক অনুমান, শ্বাসরোধে খুন করার পর প্রমাণ লোপাটের জন্য রেললাইনের উপুড় হয়ে শুইয়ে রাখা হয়েছিল তিনটি দেহ। এমনভাবে দেহগুলি ছিল, যাতে ট্রেনের চাকা গলা ও পায়ের উপর দিয়ে চলে যায়। সাধারণভাবে ঘটনাকে ‘আত্মহত্যা’ বলে মনে করা যায়। তদন্তকারীদের অনুমান, রাধা নামে ১৩ বছরের মেয়েটির মৃতদেহই সবার প্রথমে রেললাইনের ট্রাকে রেখে দেওয়া হয়। ফলে তার হাতে পণ্যবাহী ট্রেনের ধাক্কার চিহ্ন রয়েছে। রেল পুলিশের অনুমান, আততায়ীরা মৃতদেহগুলিকে রেললাইনে উপুড় হয়ে শোওয়ানোর আগেই ওই পণ্যবাহী ট্রেনটি চলে এসেছিল। সেই কারণেই তড়িঘড়ি একটি মৃতদেহ রাখা সম্ভব হয়েছিল। ওই পণ্যবাহী ট্রেন চলে যাওয়ার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনটি মৃতদেহ দেখতে পান তদন্তকারীরা। তার আগেই আততায়ীরা সম্ভবত এলাকা ছেড়েছিল।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর ন’য়েক আগে অজয় মাছুয়ারের সঙ্গে কাজলের বিয়ে হয়। অজয় পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে মুম্বইয়ে নির্মাণ সংস্থার কর্মী হিসাবে কাজ করেন। গত চার-পাঁচ দিন আগে সুইসা এলাকার শ্বশুরবাড়ি থেকে মুম্বই যান। অজয়ের বাড়ি বাঘমুন্ডির জিলিং গ্রামে হলেও স্ত্রী কাজল মূলত বাপের বাড়িতেই থাকেন। গত চার-পাঁচ মাস ধরে এখানেই রয়েছেন। ফলে তার স্বামীও শ্বশুরবাড়িতেই ওঠেন। মাঝেমধ্যে গ্রামের বাড়িতে যান। এদিন সকালে সবার প্রথমে তিনিই ঘটনার কথা তাঁর শ্বশুরবাড়িতে জানান। এদিন সকালেই তিনি সুইসার পথে রওনা দেন। ফলে একাধিক বিষয়ে সন্দেহ ঘণীভূত হচ্ছে তদন্তকারীদের। পরকীয়া থেকে খুন? নাকি অন্য কোনও বিষয়? সেই বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *