সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বেঙ্গালুরুতে পদপিষ্ট হয়ে ১১ জন সমর্থকের মৃত্যুর নেপথ্যে গাফিলতি কি শুধুই প্রশাসনের? নাকি দায় ফ্র্যাঞ্চাইজিরও? পুলিশের দাবিতে বাড়ছে ধন্দ। একাধিক সংবাদমাধ্যমের দাবি অনুযায়ী, বুধবার গোটা সেলিব্রেশনের অনুষ্ঠানেই নাকি আপত্তি ছিল বেঙ্গালুরু পুলিশের। কিন্তু সেই আপত্তি শোনেনি আরসিবি। একপ্রকার বাধ্য হয়েই পুলিশ আরসিবির অনুষ্ঠানের অনুমতি দেয়।
বেঙ্গালুরুর পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনার আগে ও পরে একাধিক চিঠি চালাচালি হয়েছে কর্নাটক ক্রিকেট সংস্থা, আরসিবি এবং প্রশাসনের মধ্যে। সেই চিঠিগুলির সারমর্ম যা দাঁড়ায়, সেটা হল পুরো সেলিব্রেশনের পরিকল্পনা করা হয় একেবারে শেষ মুহূর্তে। পুলিশ প্রথমে গোটা অনুষ্ঠানটিই রবিবার সরিয়ে নিতে চেয়েছিল। পরে বাধ্য হয়ে বুধবার শর্তসাপেক্ষ সেলিব্রেশনের অনুমতি দেয়।
ডেকান হেরাল্ডের এক রিপোর্ট বলছে, আরসিবি শুরুতে সেলিব্রেশনটি করতে চেয়েছিল কর্নাটকের বিধান সৌধের সামনে। কিন্তু আইনসভার মতো স্পর্শকাতর জায়গায় সেটার অনুমতি পুলিশ দিতে চায়নি। পরে আরসিবি ঠিক করে বিধানসভায় গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে সেখান থেকে চিন্নাস্বামী পর্যন্ত হুডখোলা গাড়িতে রোড শো করে যাবেন বিরাটরা। তারপর সেখানে হবে মূল অনুষ্ঠান। যার আয়োজক কর্নাটক ক্রিকেট সংস্থা। পুলিশের এক আধিকারিকের দাবি, ওই অনুষ্ঠানেও তাঁরা অনুমতি দিতে চাননি। পুলিশ কর্তারা রাজ্য প্রশাসন এবং আরসিবিকে জানায়, সদ্য আইপিএল জয়ের পরদিনই ওই অনুষ্ঠান করলে আবেগের বশবর্তী হয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ ভিড় জমাতে পারে, কাজের দিনে যা সামাল দেওয়া কঠিন হবে। তাই ওই সেলিব্রেশন রবিবার পর্যন্ত স্থগিত করা হোক। ততদিনে আবেগ খানিকটা থিতিয়ে পড়বে। তাছাড়া ছুটির দিনে ভিড় সামাল দিতেও কিছুটা সুবিধা হবে। কিন্তু আরসিবি জানায়, সেটা করা সম্ভব নয়। কারণ এমনিই আইপিএল নির্ধারিত সূচির দু’সপ্তাহ পর আইপিএল শেষ হয়েছে। এরপর রবিবার পর্যন্ত ক্রিকেটারদের আটকে রাখা সম্ভব নয়। বুধবার সন্ধের পরই বিদেশি ক্রিকেটারদের ছেড়ে দিতে হবে। পুলিশকর্তার দাবি, ফ্র্যাঞ্চাইজির অনড় মনোভাবে অনিচ্ছা সত্ত্বেও চিন্নাস্বামীর অনুষ্ঠানের অনুমতি দেয় পুলিশ। কিন্তু রোড শো বাতিল করা হয়।
দুঃখজনকভাবে তাতেও দুর্ঘটনা এড়ানো গেল না। প্রশাসনের দাবি, বিনামূল্যে স্টেডিয়ামে প্রবেশের অনুমতি দেওয়াটাই কাল হয়েছে। চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের ধারণক্ষমতা মাত্র ৩৩ হাজার। কিন্তু সেখানে দু’তিন লক্ষের বেশি মানুষ প্রবেশের চেষ্টা করেছিলেন। তার ফলে স্টেডিয়ামের ছোট দরজা ভেঙে যায়। চিন্নাস্বামীর নিরাপত্তারক্ষীরাও বলছেন, “একটা সময় পর মানুষের স্রোত আমরাও সামলাতে পারিনি। এত মানুষ হবে ভাবা যায়নি।” তবে পুলিশের ওই কর্তাও ডেকান হেরাল্ডকে বলেছেন, সরকারও এই সেলিব্রেশন থেকে প্রচারের আলো কাড়ার চেষ্টা করছিল। সেটা না হলে হয়তো অনুমতি দেওয়া হত না।