সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারত সফর বাতিল করল মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি দল। ট্রাম্পের ৫০ শতাংশ শুল্ক খাঁড়ার মাঝেই এই বাণিজ্য বৈঠক ভারতের জন্য ছিল আশার আলো। অনুমান করা হচ্ছিল, দুই দেশের বাণিজ্য ক্ষেত্রে যে অনিশ্চয়তার মেঘ জমাট বেঁধেছে তা কাটানো সম্ভব হবে। তবে বৈঠক বাতিলে সে সম্ভাবনায় আপাতত দাঁড়ি পড়ল।
ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মার্কিন সহকারি বাণিজ্য প্রতিনিধি ব্রেন্ডন লিঞ্চের নেতৃত্বে এই বাণিজ্য প্রতিনিধি দলের ভারতে আসার কথা ছিল ২৫ আগস্ট। ৩০ আগস্ট পর্যন্ত দুই দেশের বৈঠকের দিনক্ষণ ঠিক হয়েছিল। তবে শেষ মুহূর্তে শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে সফর বাতিল করে মার্কিন দলটি। তবে কী কারণে হঠাৎ এই সফর বাতিল হল তা স্পষ্ট করা হয়নি। তবে সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদমাধ্যমের তরফে জানানো হয়েছে, পরবর্তী তারিখ চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত আপাতত এই বৈঠক স্থগিত থাকবে।
উল্লেখ্য, দফায় দফায় বৈঠক হলেও আমেরিকা ও ভারতের বাণিজ্য চুক্তির মধ্যে মূল বাধা হয়ে দাঁড়ায় দুগ্ধ ও কৃষিজ পণ্যের মতো ক্ষেত্রগুলি। আমেরিকা ভারতের এই ক্ষেত্রগুলিতে বাণিজ্যে আগ্রহ দেখায়। তবে ভারত স্পষ্ট জানিয়ে দেয় কৃষক এবং গবাদি পশুপালকদের স্বার্থের সাথে কোনও আপস করবে না। আমেরিকার দাবি মানা হবে না কারণ এর ফলে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের জীবিকা প্রভাবিত হবে। ৫ দফা বৈঠকে কোনও রফাসূত্র বের না হওয়ায় চুক্তির চূড়ান্ত সময়সীমা শেষ হওয়ার পর ভারতের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপায় ট্রাম্প প্রশাসন। এরপর ২৫-৩০ আগস্ট পর্যন্ত ষষ্ট দফা বৈঠকের দিনক্ষণ ঠিক হয়। এরইমাঝে উপর ভারতের উপর চাপ বাড়িয়ে রাশিয়ার থেকে তেল কেনার অভিযোগ তুলে আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপায় ট্রাম্প প্রশাসন। মোট শুল্ক দাঁড়ায় ৫০ শতাংশ।
তবে ভারত রাশিয়ার থেকে তেল কেনা বন্ধ করবে না বলে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে। ভারত অবশ্য জানিয়েছে, আমরা আগের তুলনায় আমেরিকার থেকে বেশি তেল কিনছি, কিন্তু রাশিয়ার তেলও নিচ্ছি, এটা বন্ধ করা সম্ভব নয়। অন্যদিকে, শুক্রবার ফক্স নিউজকে ট্রাম্প বলেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ‘একজন তেল গ্রাহক’ ভারতকে হারিয়েছেন, যারা আগে প্রায় ৪০ শতাংশ তেল কিনত। পাশাপাশি সেকেন্ডারি শুল্ক আরোপের হুঁশিয়ারিও দেন তিনি। যদিও তথ্য অনুযায়ী, ভারত আগস্টের প্রথম ১৫ দিনে রাশিয়া থেকে প্রতিদিন ১৮ লক্ষ ব্যারেল তেল কিনেছে, যা পুরো জুলাই মাসের প্রতিদিন ১৬ লক্ষ ব্যারেলের চেয়ে বেশি।