অর্ণব দাস, বারাকপুর: শুভেন্দু অধিকারীর ‘কন্যা সুরক্ষা যাত্রা’ থেকে তৃণমূল কর্মীদের উপর হামলা। ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করল বীজপুর থানার পুলিশ। ধৃতদের নাম তাপস ঘোষ, সোনু সিং এবং সুমন সরকার। ভিডিও ফুটেজ খতিয়ে দেখে বৃহস্পতিবার এই তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। অন্যদিকে হামলার ঘটনায় বিরোধী দলনেতাকে আক্রমণ শানিয়েছেন বারাকপুরের তৃণমূল সাংসদ পার্থ ভৌমিক। রীতিমতো হুঁশিয়ারির সুর শোনা গিয়েছে তাঁর মুখে। বলেন, “শুভেন্দু অধিকারী গরম গরম বক্তব্যর জন্য যদি কোনও বিজেপি কর্মীর বাড়িতে হামলা হয়, শুভেন্দুর বাবার ক্ষমতা আছে ঠেকাবে?”
প্রসঙ্গত, বুধবার বিকেলে বীজপুর থানা মোড় থেকে ‘কন্যা সুরক্ষা’ পদযাত্রা করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কবিগুরু রবীন্দ্র পথ রোড ধরে মিছিল কলেজ মোড় সংলগ্ন লক্ষ্মী সিনেমা হলের কাছে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই গান্ধী মোড় সংলগ্ন এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। সেখানে কয়েকজন মিছিলের উদ্দেশে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেন। বিজেপির মিছিল থেকেও পালটা স্লোগান দেওয়া হয়। স্লোগান পালটা স্লোগানকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি একেবারে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। দু’পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
অভিযোগ, বিজেপি কর্মীরা ঝাণ্ডার ডাণ্ডা দিয়ে এলোপাথাড়ি হামলা চালাতে থাকে। আক্রান্ত হন তৃণমূলের একাধিক কর্মী। সংঘর্ষে মাথা ফেটে রক্তাক্ত হন তৃণমূল কর্মী শান্তনু মুখোপাধ্যায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় বিশাল পুলিশবাহিনী। কোনওরকমে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়। ঘটনার পরেই স্থানীয় থানায় লিখিত অভিযোগ জানানো হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্তে নামে পুলিশ। ভিডিও ফুটেজ খতিয়ে দেখে এদিন তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
অন্যদিকে ঠিক পরের দিনই বারাকপুর ১নম্বর ব্লকের বিডিও অফিসে প্রায় দু’শো জন পড়ুয়াকে নিয়ে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় চালু হয় বিনামূল্যে সরকারি চাকরির জন্য ফ্রি কোচিং সেন্টারের উদ্বোধনে যান পার্থ ভৌমিক। সেখানে তিনি বলেন, “শুভেন্দু অধিকারী এই গরম গরম বক্তব্যের জন্য যার মাথা ফেটেছে বা অন্য কোনও তৃণমূল কর্মী যদি কাঁচড়াপাড়ার কোনও বিজেপি কর্মীর বাড়িতে হামলা করে, শুভেন্দুর বাবার ক্ষমতা আছে ঠেকাবে? বাচ্চা ছেলে, নাক টিপলে দুধ বের হয়!”
একইসঙ্গে তৃণমূল সাংসদের সংযোজন, “আসলে ও (পড়ুন-শুভেন্দু অধিকারী) ভালো করে জানে, এমনকী এখানকার বিজেপি কর্মীরা ভালো করে জানে, মাথার উপর পার্থ ভৌমিকের ছাদ আছে, কারও কিছু হবে না।” তাঁর কথায়, সেই ভরসাতেই এখানের লোকেরা বিজেপি করে। তৃণমূল রাজনৈতিক শিষ্টাচার জানে বলেও মন্তব্য তৃণমূল সাংসদের।