সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পরিচালকরা বিঘ্ন ঘটাচ্ছিলেন, তারপরেও শুটিং অব্যাহত রেখে সহযোগিতা করায় এবং কলাকুশলীদের পাশে দাঁড়ানোয় সুরিন্দর ফিল্মসের প্রধান নিসপাল সিং রানেকে ধন্যবাদ জানালেন ফেডারেশনের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস এবং সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ ঘোষ। ফেডারেশনের তরফে ই-মেল মারফত ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানানো হয়েছে টলিউডের অন্যতম প্রধান প্রযোজক সংস্থার কর্ণধারকে।
চিঠিতে লেখা হয়েছে, “কাজে পরিচালকদের বাধা দানের পরেও ৭ ফেব্রুয়ারি শুটিং অব্যাহত রাখায় আপনাদের আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের প্রতি আপনাদের অবিচল অঙ্গিকারবদ্ধতা প্রশংসনীয়। আপনাদের সহযোগিতার জন্য আমরা গর্বিত এবং কৃতজ্ঞ।” কড়া ভাষায় বলা হয়েছে, “বিনোদন হাব হিসেবে বাংলার ভাবমূর্তিকে নষ্ট করছেন পরিচালকরা। এর মধ্যেও আপনারা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।” ই-মেলের শেষেপ্রান্তে কলাকুশলীদের কঠিন পরিস্থিতির কথা তুলে ধরা বলা হয়েছে, “আমরা আশাবাদী যে একটি দল হিসাবে কাজ করে কঠিন চ্যালেঞ্জ সামলে নিতে পারব আমরা।”
ফেডারেশন বনাম পরিচালক গিল্ডের দ্বন্দ্ব নতুন নয়! গতবছর থেকেই একাধিকবার ইন্ডাস্ট্রির অন্দরমহলের দ্বন্দ্ব চর্চার শিরোনামে বিরাজ করেছে। সম্প্রতি টলিপাড়ার তিন পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, জয়দীপ মুখোপাধ্যায় এবং শ্রীজিৎ রায়কে অসঙ্গতির কারণ দেখিয়ে ‘নিষিদ্ধ’ ঘোষণার পরই আবার নতুন করে মাথাচাড়া দেয় গিল্ড-ফেডারেশন তরজা। তাঁদের কাজ বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে।
গতবারই ফেডারেশন বনাম পরিচালক গিল্ডের দ্বন্দ্বে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন যে তিনি, ধর্মঘটের বিরোধী। সুব্রত সেন এবং সুদেষ্ণা রায় সেপ্রসঙ্গ টেনেই জানান, “আমরাও সেটাই পালন করব। কোথাও কাজ বন্ধ থাকবে না। শুধু পরিচালকরা ফ্লোরে যাবেন না। লাগাতার পরিচালকদের হাত থেকে কাজ কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। যখন-তখন শুটিং বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। আলোচনায় বসতে চাইলে সাড়া মিলছে না। তাই পরিচালকেরা যথেষ্ট অপমানিত হয়েই ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।”
অশান্তির সূত্রপাত গত মঙ্গলবার। টালিগঞ্জ স্টুডিওপাড়ার তরফে জানা গিয়েছে, ওইদিন আচমকাই ফেডারেশন শুটিং স্থগিত রাখার কথা ঘোষণা করে। তবে সেটা জানতেন না ধারাবাহিকের পরিচালক শ্রীজিত রায়। তিনি নতুন ধারাবাহিকের সেট তৈরির কাজ করছিলেন। কিন্তু সেটে গিয়ে জানতে পারেন, তাঁর সমস্ত কাজ বন্ধ করাল হয়েছে বিনা নোটিসে। আর্টস সেটিং গিল্ডের কাছে এই বিষয়ে জানতে চাইলে জানানো হয়, “প্রযুক্তিগত কিছু সমস্যা আছে, তাই কাজ করা যাচ্ছে না।” এই পরিস্থিতিতে সমস্যায় পড়েন পরিচালক শ্রীজিত। সংশ্লিষ্ট ইস্যুতে পাশে পান রাজ চক্রবর্তী, সুদেষ্ণা রায়, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, অনির্বাণ ভট্টাচার্যদের।
পরিচালক গিল্ডের তরফে তাঁদের প্রশ্ন, “আমাদের না জানিয়ে, আলোচনা না করে আচমকা শুটিং বন্ধের সিদ্ধান্ত কেন?” শ্রীজিতের দাবি, “শুটিং বন্ধের কারণ জানতে চেয়ে তিনি ফেডারেশনকে ইমেল পাঠিয়েছেন, কিন্তু তার জবাব মেলেনি।” কর্মক্ষেত্রে সমস্যার কথা জানিয়ে রীতিমতো কাতর স্বরে বলেন, সেট তৈরির জন্য অনেক টাকা দিয়েছেন তিনি। কাজ শুরু না করলে বড়সড় আর্থিক সমস্যার মুখে পড়বেন। এই পরিস্থিতিতেই শ্রীজিতের পাশে থেকে দ্রুত সমাধানের দাবি করেন সুদেষ্ণা, পরমব্রতরা। এদিকে শুক্রবার সকালে টলিপাড়ার এহেন আংশিক অচলায়তন পরিস্থিতির জন্য পরিচালক গিল্ডকেই পালটা কাঠগড়ায় তুললেন ফেডারেশন সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস।