শমীক-দিলীপ আঁতাঁত! নয়া জল্পনা বিজেপিতে

শমীক-দিলীপ আঁতাঁত! নয়া জল্পনা বিজেপিতে

ইন্ডিয়া খবর/INDIA
Spread the love


স্টাফ রিপোর্টার: শমীক ভট্টাচার্য রাজ্য সভাপতি হওয়ায় কি বঙ্গ বিজেপিতে গোষ্ঠীকোন্দল নতুন রূপ নিতে চলেছে? বৃহস্পতিবার সায়েন্স সিটিতে শমীকের অভিষেক পর্বের পর সেই আলোচনাই এখন রাজ্য রাজনীতিতে। রাজ্য বিজেপির অন্দরমহল থেকে যে সব তথ্য বাইরে আসছে, তা রীতিমতো চমকপ্রদ! জানা যাচ্ছে, শমীকের সভাপতি হওয়া নিয়ে ক্ষুব্ধ বঙ্গ বিজেপির দুই শক্তিশালী গোষ্ঠী সুকান্ত লবি ও শুভেন্দু লবি। সুকান্ত লবির আশঙ্কা, শমীকের জমানায় তাদের প্রভাব কমবে ও গত তিন বছরে ছড়ানো ডালপালা ছাঁটার চেষ্টা শুরু হবে।
শুভেন্দু অধিকারী চটেছেন, বৃহস্পতিবার সায়েন্স সিটির ভরা প্রেক্ষাগৃহে সরাসরি তাঁর চড়া হিন্দুত্বের লাইনের উল্টো কথা বলে সংখ্যালঘুদের সমর্থন চেয়ে শমীকের বক্তব্য। আর এই জলঘোলার মধ্যেই অনেকের অঙ্ক গুলিয়ে দিয়ে শমীক ও দিলীপের মধ্যে নতুন এক আঁতাত তৈরি হওয়ার গল্প শোনা যাচ্ছে।

দিলীপ ঘোষ আগেই দাবি করেছিলেন যে, সভাপতি পদের মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়ার আগে শমীক ভট্টাচার্য তাঁকে ফোন করেছিলেন। পাশাপাশি শীঘ্রই রাজ্য সভাপতি হওয়ার জন্য শমীককে শুভেচ্ছা জানাতে তিনি যাবেন বলেও শুক্রবার জানিয়েছেন দিলীপ। সবমিলিয়ে এহেন হ-য-ব-র-ল পরিস্থিতির মধ্যে দাঁড়িয়ে আগামীতে বঙ্গ বিজেপিতে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব কমার বদলে আরও তীব্র হবে বলেই রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের ধারণা।

রাজ্য বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের এই নয়া ‘রূপ’ নিয়ে এদিন মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছে, রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষকে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এদিন কুণাল বলেছেন, “তৎকাল বিজেপিদের বিরুদ্ধে দিলীপ শমীক আঁতাঁত হচ্ছে খবর পাচ্ছি। ফলে বিজেপি এখন নিজেদের নিয়েই ব্যস্ত। আগামী বিধানসভা ভোটে তৃণমূল কংগ্রেস বিপুল ভোটে জিতবে।” কুণালের ‘দিলীপ-শমীক আঁতাত’ মন্তব্যের আগেই অবশ্য এদিন প্রাতঃভ্রমণের পর নিয়ম করে সংবাদমাধ্যমের একের পর এক প্রশ্নের উত্তর দিয়ে খেলা জমিয়ে দিয়েছেন দিলীপ।

তিনি কি তৃণমূলে চলে যাবেন?- এই প্রশ্নের উত্তরে দিলীপের রহস্যময় জবাব, “আমার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ পার্টি ঠিক করবে। ভগবানের খাতায় লেখা আছে। আমাকে বিজেপি নিয়ে এসে একটা জায়গা দিয়েছিল। আমি নিজে থেকে আসিনি। পার্টি চেয়েছে তাই আমি এসেছি। পার্টি আমাকে রাজ্য সভাপতি করেছে, বিধায়ক করেছে, সাংসদ করেছে, জাতীয় নেতা করেছে। আমি নিজে থেকে কিছু চাইনি। পার্টি আমাকে গাড়ি দিয়েছে, সিকিউরিটি দিয়েছে। আমি নিজে এগুলোর কোনওটাই চাইনি। পার্টি যদি মনে করে আমি এখন সাধারণ কর্মী হিসাবে কাজ করব, তাহলে তাই করব।”

কোনও পদে না থাকলেও বঙ্গ বিজেপির অন্যতম জনপ্রিয় মুখ এখনও দিলীপ। এদিন তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, দিলীপ ঘোষ মানেই তো চমক। আমরা কি আগামী কয়েক দিনের মধ্যে কোনও চমক দেখব? দিলীপ ঘোষের উত্তর, “কল্পনা করতে তো পয়সা লাগে না। অনেকেই করছে। ২১ তারিখ পর্যন্ত কল্পনার ডেট দেওয়া হয়েছে। তারিখ পে তারিখ। কিছু একটা মার্কেটে থাকে। দিলীপ ঘোষ মার্কেটে আছে।” তৃণমূলের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নিয়ে দিলীপ বলেন, “তৃণমূলের সঙ্গে তিক্ততা নেই তো আর? আমার সঙ্গে কুণাল ঘোষ, অরূপ বিশ্বাসের অনেক আগে থেকে পরিচয়। এখনও আছে। আগামী দিনেও থাকবে। দিলীপ ঘোষ ওরকম ভাবে ভাবে না। কাল শত্রু ছিল, আজ বন্ধু হল। আবার পরের দিন শত্রু হল। দিলীপ ঘোষ ওইভাবে ভাবে না। যারা ও রকম করে, তাদের সমস্যা আছে। দিলীপ ঘোষের এরকম কোনও সমস্যা নেই।”

দিলীপের এই মন্তব্য নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, “কারও পুরনো চেনা থাকলে কী সমস্যা! উনি বহুবার একথা বলেছেন ইকো পার্কে। তপন শিকদারের পর দিলীপ ঘোষই বঙ্গ বিজেপির সবথেকে বেশি গ্রহণযোগ্য মুখ। তা সত্ত্বেও ওঁকে নানাভাবে অপমান করা হয়েছে।” বিয়ের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমন্ত্রণে দিঘায় জগন্নাথধামের উদ্বোধনে সস্ত্রীক গিয়েছিলেন দিলীপ। যা বিজেপির অভ্যন্তরে প্রবল জলঘোলা হয়। তারপর দলীয় সাংগঠনিক কর্মসূচি থেকে দিলীপকে দূরে সরিয়ে রেখেছে বিজেপি নেতৃত্ব। যা নিয়ে কুণাল এদিন বলেন, “ওরা হিন্দুবিরোধী, জগন্নাথ বিরোধী। এটাই তো ওদের রাজনীতি। মুখ্যমন্ত্রী তো (কংগ্রেস নেতা) প্রদীপ ভট্টাচার্যকেও আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন!”



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *