সন্দীপন বন্দ্যোপাধ্যায়, লন্ডন: লিডস কিংবা এজবাস্টনের উইকেট থেকে লর্ডসের বাইশ গজ অনেকটাই আলাদা। দূর থেকে দেখেও বোঝা যাবে পিচে ঘাস রয়েছে। তাহলে কি সবুজ উইকেট টিম ইন্ডিয়াকে অভ্যর্থনা জানানো হবে? তবে একটা কথা এখনই লিখে দেওয়া যায়, মঙ্গলবার সকালে লর্ডস উইকেটে যতটা ঘাস রয়েছে, ম্যাচে সেই পরিমাণ ঘাস থাকার সম্ভাবনা কম। এদিন বেশ কিছুক্ষণ ধরে ঘাস-ছাঁটাই পর্ব চলল। বুধবার অর্থাৎ টেস্টের আগের দিন আরও কিছুটা ঘাস ছাঁটা হতে পারে বলেই শোনা যাচ্ছে।
আসলে এজবাস্টনে জশপ্রীত বুমরাহ ছাড়া ভারতীয় পেস ব্যাটারি যেভাবে ইংল্যান্ড ব্যাটিংকে কাঁপিয়ে দিয়েছে, তাতে ব্রেন্ডন ম্যাকালামের টিম পুরোপুরি সবুজ উইকেট খেলার সাহস মনে হয় না দেখাবে। তবে একটা কথা ঠিক, লর্ডসের উইকেট পেসারদের অনেক বেশি সাহায্য করবে। সেটাই ভারতীয় পেসারদের আরও তাতিয়ে দিচ্ছে।
ভারতীয় দলেও টুকটাক কয়েকটা বদল আসবে। জশপ্রীত বুমরা লর্ডসে ফিরছেন, সেটা শুভমান গিল নিজেই পরিষ্কার করে দিয়েছেন। আর কার জায়গায় বুমরাহ খেলবেন, সেটা সহজেই অনুমেয়। প্রথম দুটো টেস্টে প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ আহামরি কিছু করতে পারেননি। ফলে বুমরাহ এলে বাইরে যাবেন প্রসিদ্ধ। একইসঙ্গে আরও একটা প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। লর্ডসের উইকেটে ভারতীয় দল কি দুই স্পিনারে নামবে? কারও কারও মতে, ওয়াশিংটন সুন্দরের জায়গায় একজন বাড়তি ব্যাটার খেলানো হতে পারে। সাই সুদর্শন খেলতে পারেন। সেটা হলে আবার ব্যাটিং অর্ডার বদলাতে হবে। কারণ সাই তিন নম্বরে খেলবেন।
করুণকে তখন আবার ছয়ে যেতে হবে। এর সঙ্গে আরও একটা সম্ভাবনা থাকছে। ধ্রুব জুরেলকে খেলানো হতে পারে। সেটা হলে ব্যাটিং অর্ডার বদলাতে হবে না। কিন্তু গম্ভীর কি আদৌ এত পরিবর্তন করতে চাইবেন, সেটাও বড় প্রশ্ন। এখনও পর্যন্ত যা পরিস্থিতি, তাতে ওয়াশিংটন সুন্দরের খেলার সম্ভাবনা বেশি। লোয়ার অর্ডারে ওয়াশিংটন খুব একটা খারাপ ব্যাট করেন না। তাছাড়া লন্ডনে এখন বেশ গরম। প্রায় তিরিশ ডিগ্রির আশেপাশে ঘোরাফেরা করছে তাপমাত্রা। টেস্ট চলাকালীন আবহাওয়ার পরিবর্তনের সম্ভাবনা বেশ কম। ফলে পরের দিকে পিচ আরও শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। সেই কথা মাথায় রেখে মনে হয় না এক স্পিনারের নামার ঝুঁকি নেবে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট।
এতো গেল ভারতীয় শিবিরের কথা। এবার একটু ইংল্যান্ডে আসা যাক। এজবাস্টন এতদিন ইংল্যান্ডের দুর্গ ছিল। শুভমানরা ব্রিটিশ দর্পচূর্ণ করেছে। লর্ডসে পাল্টা দিতে চাইছে ইংল্যান্ড। প্রথম দুটো টেস্টেই ইংল্যান্ড পেস অ্যাটাককে প্রচণ্ড আহামরি দেখিয়েছে। এখন জোফ্রা আর্চার আর গাস অ্যাটকিনসনকে খেলাতে চাইছে বেন স্টোকসের টিম। ভাবনা একটাই-আর্চারদের দিয়ে ভারতীয় ব্যাটিংকে চাপে ফেলা। কিন্তু শুভমানরা যে ফর্মে রয়েছেন, তাতে ইংল্যান্ডের রণনীতি আদৌ সফল হবে কি না, সেটা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। বরং এজবাস্টনের মতো লর্ডসেও ভারত দুর্ধর্ষ একটা জয় তুলে নেওয়া নিয়ে প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাসী।