রোহিঙ্গাদের মসিহা হতে চেয়েছিল ‘বাবা-মার খুনি’ মেমারির ইঞ্জিনিয়ার! ধর্মীয় প্রশ্নে মাথা গরমই কাল

রোহিঙ্গাদের মসিহা হতে চেয়েছিল ‘বাবা-মার খুনি’ মেমারির ইঞ্জিনিয়ার! ধর্মীয় প্রশ্নে মাথা গরমই কাল

বৈশিষ্ট্যযুক্ত/FEATURED
Spread the love


সৌরভ মাজি, বর্ধমান: মায়ানমারের দুঃস্থ রোহিঙ্গাদের ‘মসিহা’ হতে চেয়েছিল হুমায়ুন কবীর ওরফে আসিফ। পূর্ব বর্ধমানের মেমারির (Memari) বাড়িতে বাবা-মাকে গলার নলি কেটে খুন করে বাংলাদেশ হয়ে মায়ানমার পালিয়ে যেতে চেয়েছিল যাদবপুরের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বি-টেক হুমায়ুন। পরিকল্পনা ছিল, বুধবার রাতটা উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁর মাদ্রাসায় কাটিয়ে পরদিন সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশ চলে যাওয়া। সেখানে পরিচিত কুমিল্লার এক সঙ্গীর মাধ্যমে মায়ানমারে রোহিঙ্গাদের কাছে চলে যাওয়া। মাদ্রাসায় গিয়ে সে এমনটা জানিয়েছিল বলেও তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন। পুলিশ সূত্রের খবর, হুমায়ুন এর আগেও বিদেশে গিয়েছে। তার পাসপোর্ট রয়েছে। তবে বনগাঁ যাত্রায় তার সঙ্গে পাসপোর্ট ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

কিন্তু মাদ্রাসায় পড়য়াদের ধর্মীয় বিষয়ে কিছু প্রশ্নের উত্তরে বিরক্ত হয়ে যায় হুমায়ুন। ক্রুদ্ধ হয়ে মাদ্রাসার শিক্ষকদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়ে। তার পরই সঙ্গে থাকা ছুরি নিয়ে হামলা চালায় হুমায়ুন। এরপর সেখানে গণপিটুনি দেওয়া হয়। মার খেতে খেতে ইসলাম নিয়ে অনেক কিছুই বলতে শোনা গিয়েছিল হুমায়ুনকে। পরে বনগাঁ পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। জানতে পারে, মেমারিতে বাবা মুস্তাফিজুর রহমান ও মা মমতাজ পরভিনকে খুন করে পালিয়েছিল। তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, মেমারি থেকে দীর্ঘপথ হেঁটে পণ্যবাহী গাড়িতে করে প্রথমে কালনায় যায়। সেখানে বাসস্ট্যান্ড থেকে হেঁটে ফেরিঘাটে যায়। সেখান থেকে নৌকায় পার হয়ে নদিয়ার শান্তিপুরে গিয়ে ফের পণ্যবাহী গাড়িতে করে বনগাঁয় চলে গিয়েছিল। কিন্তু ধর্ম নিয়ে পড়ুয়াদের উত্তরে ক্ষেপে যান হুমায়ুন। তারপরই হামলা চালায়।



হুমায়ুন বদমেজাজি ছিল। আবার সাম্যবাদেও বিশ্বাসী ছিল। ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে বিভিন্ন বহুজাতিক সংস্থায় কাজ করেছে। দুবাইয়ে কলকাতার এক মহিলার সঙ্গেও বিয়েও করেছিল। যদিও কিছুদিনের মধ্যেই বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়। তার পর থেকেই দুঃস্থদের দানধ্যান করতে শুরু করে। বেসরকারি সংস্থা থেকে আয়ের সিংহভাগ দান করে দিয়েছে। দিল্লিতে কর্মরত থাকাকালীন আচমকা নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল সে। কয়েকমাস পরে হিমাচল প্রদেশ থেকে তাকে খুঁজে আনে তার বাবা। নিখোঁজ হওয়া ও ফিরে আসার মধ্যেও রহস্য রয়েছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। তাঁরা জানতে পেরেছেন, ধর্মীয় বিষয়ে গোঁড়ামি যেমন ছিল, তেমনই গরিবদের সেবা করাটাকেও ‘ধর্ম’ বলে মনে করত হুমায়ুন। বিশেষত গরিব মুসলিমদের প্রতি তার বেশি সহানুভূতি ছিল। ধর্মীয় সংগঠনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। তার বাড়ি থেকেও বেশ কিছু ধর্মীয় নথি পেয়েছে পুলিশ। তার গরিবদের মসিহা হতে চাওয়ার প্রবণতার বিষয়েও জানতে পেরেছে পুলিশ।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ






Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *