সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইউক্রেনে লাগাতার হামলার জেরে রুশ অর্থনীতির কোমর ভেঙে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এবার সেই রুশ থেকে বিপুল সংখ্যায় পণ্য আমদানি শুরু করল আমেরিকা। রুশ সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, আমেরিকার ডিমের আকালের জেরে গত ৩২ বছরের মধ্যে প্রথমবার বিরাট পরিমাণে রাশিয়ার থেকে মুরগির ডিম আমদানি করেছে ট্রাম্পের দেশ।
রিপোর্ট বলছে, আমেরিকায় ভয়াবহ বার্ড ফ্লু-র কারণে সেখানে পোল্ট্রি শিল্প বিরাট ক্ষতির মুখে পড়েছে। সংকট দেখা দিয়েছে সরবরাহে। এই অবস্থায় দামবৃদ্ধি তো বটেই দোকানে নোটিস টাঙানো হয়েছে, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় দুটির বেশি ডিম কেনা যাবে না। জানা যাচ্ছে, লাগাতার ফ্লু-র কারণে এই দেশে ১৫৬ মিলিয়নের বেশি মুরগির মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর এই পরিস্থিতিতে বাইরের দেশ থেকে কিনতে হচ্ছে ডিম। যার জেরে গত জুলাই মাসে রাশিয়া থেকে ৪.৫৫ লক্ষ ডলারের ডিম আমদানি করেছে আমেরিকা। এদিকে রাশিয়া থেকে আমেরিকার ডিম আমদানির দায় প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের উপর চাপিয়েছে হোয়াইট হাউস। বলা হয়েছে, বাইডেন শাসনে বার্ড ফ্লু-র নামে ৮০ লক্ষ মুরগি হত্যা করা হয়েছে যার জেরেই এই সংকট।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর আমেরিকা ও পশ্চিমের দেশগুলি রাশিয়ার উপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। রাশিয়ার অর্থনীতিকে দুর্বল করতে বন্ধু দেশগুলির সঙ্গে তাদের আর্থিক ও কূটনৈতিকভাবে বিছিন্ন করতে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। এমনকী হালে পানি না পেয়ে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য ভারতের তেল কেনাকে দায়ী করে নয়াদিল্লির উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, রুশ বাণিজ্যের জন্য ভারতের উপর শুল্ক চাপানো ‘নির্লজ্জ’ আমেরিকা নিজে কেন রাশিয়ার থেকে ডিম কিনছে? তার অবশ্য উত্তর নেই।
তবে আমেরিকার এই কুকীর্তি প্রথমবার নয়। রিপোর্ট বলছে, নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ২০২৪ সালে আমেরিকা রাশিয়া থেকে প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য আমদানি করেছে। এর মধ্যে রয়েছে সার (২০২৫ সালের প্রথমার্ধে ৯২৭মিলিয়ন ডলার), ইউরেনিয়াম এবং প্লুটোনিয়াম (৭৫৫ মিলিয়ন ডলার) এবং প্যালাডিয়ামের মতো মূল্যবান ধাতু। পিছিয়ে নেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলিও। এখনও পর্যন্ত রাশিয়ার প্রাকৃতিক গ্যাসের সবচেয়ে বড় আমদানিকারী ইউরোপীয় ইউনিয়ন।