রীতি মেনে আজও মুড়ি মেলা বসে বাঁকুড়ায়! জানেন নেপথ্যে লুকিয়ে কোন ইতিহাস?

রীতি মেনে আজও মুড়ি মেলা বসে বাঁকুড়ায়! জানেন নেপথ্যে লুকিয়ে কোন ইতিহাস?

বৈশিষ্ট্যযুক্ত/FEATURED
Spread the love


স্টাফ রিপোর্টার, বাঁকুড়া: বাঙালি বাড়িতে মুড়ি খাওয়া একপ্রকার রীতিই বলা যায়। বাঁকুড়াই এই রীতিই উৎসবের চেহারা নিয়েছে। এই প্রথা প্রায় ২০০ বছরের পুরনো। এবছরও দ্বারকেশ্বরের পাড়ে বসে মুড়িতে মাতলেন সকলে। কেউ মুড়ি মাখার জন্য গামছা, চাদর পাতেন। কেউ আবার থলে থেকে বের করেন তেল, চানাচুর, ধনেপাতা, শশা, লঙ্কা, টমেটো। দ্বারকেশ্বরের চরে বালিতে গর্ত করে জল সংগ্রহ করে তা ছিটিয়ে রসিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে মুড়ি খান সকলে। কেউ কেউ মাতলেন রিলসে।

বাঁকুড়ায় কেঞ্জাকুড়া-সহ আশপাশের অন্তত কুড়িটি গ্রামের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ এই মেলায় হাজির হয়েছিলেন। কিন্তু কীভাবে এই মেলা শুরু? কেঞ্জাকুড়ায় দ্বারকেশ্বর নদের পাড়েই রয়েছে সঞ্জীবনী মাতার আশ্রম। প্রতি বছর মকর সংক্রান্তিতে হরিনাম সংকীর্তন শুরু হয় এখানে। শেষ হয় মাঘের ৪ তারিখ। আগে দূর-দূরান্ত থেকে অসংখ্য মানুষ সংকীর্তন শুনতে হাজির হতেন আশ্রমে। কথিত আছে, সে সময় কেঞ্জাকুড়া ছিল ঘন বনজঙ্গলে ঢাকা। হরিনাম শুনে সন্ধ্যা গড়িয়ে যেত। তারপর জঙ্গল পার করার কেউ সাহস দেখাতেন না। পরের দিন সকালে সঙ্গে আনা শুকনো মুড়ি দ্বারকেশ্বরের জলে ভিজিয়ে তা খেয়ে বাড়িতে ফিরতেন তাঁরা। মেলা কমিটির কোষাধ্যক্ষ রঞ্জিত চট্টোপাধ্যায়ের কথায়,সেই সময় আগত কয়েকজন রুগ্ন মানুষ এই দ্বারকেশ্বর নদের চরে মুড়ি মেলায় মুড়ি খেয়ে সুস্থ হয়ে ওঠেন। সেকথা লোকমুখে প্রচার হতেই প্রথমে জেলার বিভিন্ন গ্রামের মানুষ জন এই মুড়ি মেলায় স্বপরিবার ও আত্মীয় স্বজনদের নিয়ে হাজির হতে শুরু করেন।

আসানসোল থেকে এই মুড়ি মেলায় স্বপরিবারে এসেছিলেন সোনি যাদব। অবাঙালি এই গৃহবধূ বলেন, “নদীর চরে বসে মুড়ি খাওয়ার আমেজটাই আলাদা।” এদিন তার সঙ্গী ছিলেন স্কুল শিক্ষক চন্দ্রনাথ দাস। চন্দ্রনাথবাবু বলেন, “মেলায় এসে মুড়ি খাওয়ার মধ্যে কোনও আধ্যাত্ত্বিক বিষয় না থাকলেও মানুষের মনে একটা বিশ্বাস কাজ করে।” কেঞ্জাকুড়ার বাসিন্দা মধুমিতা দে কর্মকার কথায়, “সারাবছর এই মেলার জন্য অপেক্ষায় থাকি। প্রতিবছর আমি এই মেলায় আসি।”



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *