স্টাফ রিপোর্টার: দিল্লিতে রাহুল গান্ধী তৃণমূলের লোকসভার নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে একান্তে প্রায় এক ঘণ্টা বৈঠক করার ধাক্কায় কলকাতায় প্রদেশ কংগ্রেস চরম হতাশা নেমে এসেছে। শুধু তাই নয়, রাহুল নিজেই ফোন করে অভিষেককে তাঁর গৃহপ্রবেশে আমন্ত্রণ করেই থামেননি, আগামী ১ সেপ্টেম্বর পাটনায় বিজেপি বিরোধী সমাবেশে যাওয়ার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও বিশেষ অনুরোধ করেছেন। স্বভাবতই বাংলায় সিপিএমের জোটসঙ্গী প্রদেশ কংগ্রেসকে বিন্দুমাত্র গুরুত্ব না দিয়ে তৃণমূলকেই যে বিজেপি বিরোধী মূল রাজনৈতিক শক্তি হিসাবে রাহুল গান্ধী মেনে নিয়েছেন, এমন দৃশ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে বিধানভবনে।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক প্রবীণ কংগ্রেস নেতা শুক্রবার কলকাতায় বলেন, ‘‘বাংলায় কংগ্রেসের ভোট তো ৫ শতাংশের নিচে নেমে গিয়েছে। উল্টোদিকে দেশের মধ্যে একমাত্র বাংলায় একা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিকে শুধু রুখে দেননি, লোকসভা নির্বাচনে আসন অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছেন। স্বভাবতই জনমানবশূন্য বিধানসভবনে বসে মাছি তাড়ানো বাংলার প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের আর কোনও গুরুত্ব নেই রাহুল-প্রিয়াঙ্কাদের কাছে। বিজেপিকে যাঁরা রুখতে পারছে তৃণমূল তাই তো মমতা-অভিষকদের এত সম্মান দিচ্ছেন রাহুল গান্ধীরা।’’
সংসদে বাংলা ভাষার অসম্মানের জেরে তৃণমূলের প্রতিবাদ কর্মসূচিকে প্রকাশ্যেই সমর্থন করেছেন কংগ্রেস সাংসদরা। বস্তুত তৃণমূলের প্রস্তাব মেনেই দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের সদর দপ্তর ঘেরাওয়ের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোট। কিন্তু অভিষেককে ফোন ও নিজের বাড়িতে প্রায় এক ঘণ্টা একান্তে রাহুলের বৈঠকের খবরে বামেদের সঙ্গে জোট করা তৃণমূল বিরোধী কংগ্রেসিরা রীতিমতো মুষড়ে পড়েছেন। তাঁদের কথায়, দেখতে পাচ্ছি, এখন তৃণমূলকেই বাংলায় আসল কংগ্রেস ও বিজেপি বিরোধী মূল চালিকাশক্তি বলে মনে করছেন রাহুল-প্রিয়ঙ্কা।
রাহুল-অভিষেক রাজধানীতে কাছাকাছি আসায় ফের তৃণমূল ও কংগ্রেসের মধ্যে নতুন রসায়ণ শুরু হয়েছে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন। বিষয়টি নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার অবশ্য শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রকাশ্যে হতাশার কথা অস্বীকার করেছেন। বলেছেন, ‘‘বাংলায় একলা চলব, না তৃণমূলের সঙ্গে চলব তা নিয়ে এআইসিসি এখনই কোনও নির্দেশ দেয়নি। তবে আগামী দিনে বাংলা নিয়ে এআইসিসি যে সিদ্ধান্ত নেবে সেটাই চূড়ান্ত।’’ এদিন প্রদেশ নেতৃত্ব আরজিকর ইস্যুতে নিউটাউনে সিবিআই দপ্তরে ডেপুটেশন দেন। যুব কংগ্রেস এসআইআর বাতিলের দাবিতে নির্বাচন কমিশনের।