সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত তিন বছর ধরে চলতে থাকা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ইতি টানতে উদ্যোগী আমেরিকা। যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে শীঘ্রই কূটনৈতিক আলোচনায় বসতে পারেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সন্ধি নিয়ে জল্পনা যখন চরম আকার নিয়েছে, ঠিক সেই সময় হামলার ঝাঁজ বাড়াল ইউক্রেন। রাশিয়ার কুর্স্ক অঞ্চলের অনেকখানি ভেতরে ঢুকে পড়ল জেলেনস্কির বাহিনী। ইউক্রেনের এই তৎপরতার পিছনে বিশেষ উদ্দেশ্য দেখছেন যুদ্ধ বিশেষজ্ঞরা।
আসলে যুদ্ধের পর চেনা নিয়মে আসে সন্ধির পর্যায়। যেখানে যুদ্ধে মেতে থাকা দুই পক্ষ দর কষাকষির মাধ্যমে আখের বুঝে নিয়ে পিছু হটে। যুদ্ধে সাফল্যের নিরিখেই আসে আপসের পর্ব। যার সাফল্য যত বেশি, তার প্রাপ্তিও বেশি। এই পরিস্থিতিতে বিদেশি সহায়তায় গত তিন বছরের যুদ্ধে ইউক্রেন রাশিয়াকে ঠেকিয়ে রাখতে পারলেও এই যুদ্ধে তাদের ক্ষয়ক্ষতির বহরও বিশাল। ফলে সন্ধি পর্বে ইউক্রেনকে বাড়তি কিছু হারাতে হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাই ট্রাম্প যখন যুদ্ধবিরতির উদ্যোগ নিয়েছেন সেই সময় মরিয়া হয়ে কুর্স্কে হামলা চালাচ্ছে ইউক্রেন। উদ্দেশ্য অত্যন্ত স্পষ্ট। রাশিয়ার এই অঞ্চলের কিছু অংশ নিজেদের দখলে নেওয়া। যাতে দর কষাকষি চলাকালীন নিজেদের পাল্লা কিছুটা ভারী থাকে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, ইউক্রেন যাতে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার পথে হাঁটে, তার জন্য এবার চাপ বাড়াতে শুরু করেছে আমেরিকা। সেই সময়ে রাশিয়ার কুর্স্ক অঞ্চলে হামলা চালিয়ে নিজেদের মিত্রশক্তিদেরও অবাক করে দিয়েছে ইউক্রেন। জানা যাচ্ছে, কুর্স্কে প্রায় ৫ কিলোমিটার পর্যন্ত ভেতরে ঢুকে পড়েছে জেলেনস্কির সেনা। গত ৬ মাস ধরে এই অঞ্চলে যুদ্ধ চালাচ্ছে ইউক্রেন। এখানেই মোতায়েন ছিল উত্তর কোরিয়ার সেনাবাহিনী। বর্তমানে তাঁদের বেশিরভাগই আহত বা নিহত। ইউক্রেনের দাবি, ওই অঞ্চলে প্রায় ৪০ হাজার রুশ সেনার আহত হয়েছেন। নিহত হয়েছেন ১৬,১০০ জন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রথমবার কোনও বিদেশি শক্তি রাশিয়ার মাটির দখল নিয়েছে যা পুতিনের জন্য নিঃসন্দেহে লজ্জার। কৌশলগত দিক থেকে কুর্স্ক অঞ্চল বিরাট তাৎপর্যপূর্ণ না হলেও পুতিন চান ওই অঞ্চল থেকে সরে যাক ইউক্রেন।
অন্যদিকে ইউক্রেনের একাধিক অঞ্চল এখনও রাশিয়ার কবলে। পূর্ব ইউক্রেনের শিল্প শহর টোরেক্স দখল করেছে রাশিয়া। গত ৬ মাস ধরে লড়াই চলছিল এখানে। রাশিয়ার নজর ছিল কুপিয়ানক্স, পোকরোভক্সের দিকে। এই অঞ্চলেরও বড় অংশ রাশিয়া দখলে নিয়েছে। নিজ ভুখণ্ড ফেরত পেতেই কুর্স্ককে হাতিয়ার করতে চাইছে ইউক্রেন। যাতে যুদ্ধ পরবর্তী সন্ধিতে কৌশলগত সুবিধা পাওয়া যায়।