রাজ কুমার, আলিপুরদুয়ার: জগন্নাথ দেবের মহাপ্রসাদ নিয়ে কুৎসাতে ব্যস্ত বিজেপির উঁচুতলার নেতারা। কিন্তু উল্টো ছবি তৃণমূল স্তরের বিজেপি নেতা কর্মীদের মধ্যে। জগন্নাথ দেবের মহাপ্রসাদ ভক্তিভরে গ্রহণ করছেন তাঁরা। বিজেপির শক্তি প্রমুখ থেকে পুরপ্রার্থীর স্ত্রী, সবাই দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের মহাপ্রসাদ নিয়ে কপালে ঠেকাচ্ছেন। বলছেন ‘জয় জগন্নাথ’। বাদ যাচ্ছে না সিপিএমও। একেবারে সিপিএমের কো অর্ডিনেশন কমিটির অফিসে ঢুকে জগন্নাথ দেবের মহা প্রসাদ বিতরণ করলেন পুর চেয়ারম্যান। যেসব ছবিই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল।
শুক্রবার মহাপ্রসাদ বিলি হয়, আলিপুরদুয়ার পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের অরবিন্দনগর এলাকায়। সেখানেই বাড়ি বিজেপির ওই ওয়ার্ডের শক্তি কেন্দ্রের প্রমুখ পারমিতা দের। পুর চেয়ারম্যান বাবলু কর প্রসাদ হাতে সদলবলে পারমিতা দের বাড়িতে ঢোকার আগেই ঘর থেকে বেরিয়ে প্রসাদ গ্রহণ করেন পারমিতা। সবাই মিলে জগন্নাথের নামে জয়ধ্বনীও দেন। পরে পারমিতা বলেন, “ঠাকুর সবার। আমরাও তো রাম মন্দিরের চাল বিলি করেছিলাম। প্রসাদ নিয়ে কেন রাজনীতি হবে। আর আমাদের চেয়ারম্যানকে আমি শ্রদ্ধা করি। সেই কারণে তাঁর হাত থেকে ঠাকুরের প্রসাদ নিতে কোনও আপত্তি নেই তো। আমরা সকলে প্রণাম করে সেই প্রসাদ খেয়েছি।’’
অরবিন্দ নগরে এদিন প্রসাদ নিয়েছেন গত পুর নির্বাচনে বিজেপির পুর প্রার্থী দেবাশিস সরকারের স্ত্রীও। এমনকী প্রসাদ গ্রহণ করেছেন বিজেপির অফিস সম্পাদক শঙ্কর সিনহার স্ত্রীও। শঙ্করবাবু আবার মিষ্টির দোকানে প্রসাদ তৈরির বিরোধিতা করে সমাজ মাধ্যমে পোস্ট দিয়েছিলেন। একই ছবি এদিন ধরা পড়েছে শহরের সাত নম্বর ওয়ার্ডে। ওই ওয়ার্ডে জগন্নাথ দেবের মহাপ্রসাদ নিয়ে বেরিয়েছিলেন ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর পার্থপ্রতিম ঘোষ। ওয়ার্ডে বিজেপির শক্তি প্রমুখ নেপাল সাহাও হাসিমুখে মহাপ্রসাদ নিয়েছেন। যে ছবি এখন সমাজ মাধ্যমে ভাইরাল। জগন্নাথ দেবের মহাপ্রসাদ থেকে বঞ্চিত হননি সিপিএমের চাকুরিজীবীরাও।

এদিন শহরে কো-অর্ডিনেশন কমিটির অফিসে ঢুকে প্রসাদ বিলি করেছেন পুরসভার চেয়ারম্যান বাবলু কর। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সবার কাছে প্রসাদ পৌঁছে দেওয়ার কথা বলেছেন। আমরা সকলের কাছে প্রসাদ পৌঁছে দিচ্ছি। যারা সমাজমাধ্যমে প্রসাদ নিয়ে প্রশ্ন তুলে কুৎসা ছড়াচ্ছেন, তাঁরা জনবিচ্ছিন্ন হবেন। তবে কেউ না নিতে চাইলে আমরা জোর করে প্রসাদ দিচ্ছি না।” বিষয়টি নিয়ে বিজেপির জেলা সভাপতি মিঠু দাস বলেন, “দেখুন স্থানীয়ভাবে কেউ বাড়িতে এলে তো আর অসৌজন্যতা প্রকাশ করা যায় না। সেই কারণে হয়তো আমাদের কেউ কেউ মিষ্টির প্যাকেট গ্রহণ করেছেন। এতে আপত্তির কী আছে। তবে মিষ্টির দোকানে তৈরি করে মিষ্টিকে প্রসাদ হিসেবে চালিয়ে দিচ্ছে তৃণমূল।’’ উল্লেখ্য এদিন ২৮০০ ফুট উচুতে বক্সা পাহাড়ের গ্রামেও জগন্নাথ দেবের মহাপ্রসাদ বিতরণ হয়েছে। মহাপ্রসাদ পেয়ে খুশি পাহাড়ি গ্রামের ডুকপা-সহ অন্যান্য সম্প্রদায়ের মানুষেরা। এদিন জেলায় ৪৭ হাজার প্রসাদের প্যাকেট বিতরণ হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক। তিন দিনে জেলায় মোট ১ লক্ষ ৪৫ হাজার পরিবারে প্রসাদ বিতরণ হল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন