রমজানের রাতে ট্যাঙ্কার দুর্ঘটনায় গ্যাস লিক নলহাটিতে, বন্ধ নমাজ! আগুনের আতঙ্কে রান্না হল না কোনও বাড়িতে

রমজানের রাতে ট্যাঙ্কার দুর্ঘটনায় গ্যাস লিক নলহাটিতে, বন্ধ নমাজ! আগুনের আতঙ্কে রান্না হল না কোনও বাড়িতে

স্বাস্থ্য/HEALTH
Spread the love


নন্দন দত্ত, সিউড়ি: গ্যাস বোঝাই ট্যাঙ্কার উলটে গিয়ে বড়সড় বিপত্তি বীরভূমের নলহাটি থানার নোয়াপাড়া এলাকায়। ট্যাঙ্কার থেকে গ্যাস বেরতে থাকায় আতঙ্ক ছড়ায় গোটা এলাকায়। আগুন জ্বালানো হলে এলাকায় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সেই কথাও প্রচার হয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে। ওই এলাকাটি সংখ্যালঘু অধ্যুষিত হওয়ায় রমজানের রোজার ভোরবেলা ব্যস্ততা থাকে বাসিন্দাদের মধ্যে। কিন্তু গ্যাসের নির্গমণের আশঙ্কায় কেউ বাড়ি থেকে বেরোলেন না। রান্নাবান্নাও হয়নি কোনও বাড়িতে। রবিবার ভোরের নমাজও পড়া হয়নি ওই এলাকায় মসজিদে।

প্রশাসনিক তৎপরতায় শেষপর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। বিশেষজ্ঞরা ট্যাঙ্কার থেকে গ্যাস লিকও বন্ধ করেন। শনিবার রাত থেকে এই ঘটনায় গোটা এলাকার মানুষ আতঙ্কে রাত জাগলেন। যদিও রবিবার বেলায় ওই এলাকায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। পুলিশ ও প্রশাসনের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন স্থানীয়রা। কিন্তু ঘটনাটি কী? জানা গিয়েছে, শনিবার রাত আটটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে নলহাটি থানার পাঁচগ্রাম নাকপুড় চেকপোস্ট বাদশাহি রোডের নোয়াপাড়া হাইস্কুলের কাছ। হলদিয়া থেকে গ্যাসভর্তি করে ট্যাঙ্কারটি মুর্শিদাবাদ বীরভূম সীমান্তবর্তী বাদশাহি রোড ধরে মালদহের দিকে যাচ্ছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দ্রুতগতির ফলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেটি নোয়াপাড়া হাইস্কুল গেটের সামনে একটি দোকানে প্রথমে ধাক্কা মেরে সেখানেই উল্টে যায়। দোকানে থাকা কয়েকজন অল্পের জন্য বড়সড় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পান। গাড়ির চালককে উদ্ধার করে লোহাপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়। এদিকে ওই ট্যাঙ্কার থেকে গ্যাস বেরতে থাকে। ঝাঁজালো গন্ধ ছড়িয়ে পড়তে থাকে ওই এলাকায়। ঘরের দরজা জানলা বন্ধ করে বাসিন্দারা ভিতরেই থাকেন। নলহাটি থানার পুলিশ গিয়ে বাদশাহি রোডের উপর যান চলাচল বন্ধ করে দেয়।

রাত ন’টা নাগাদ রামপুরহাট থেকে দমকল বাহিনীর দু’টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে যায়। দমকলের পক্ষ থেকে দুর্গাপুরের গ্যাস সংস্থার সঙ্গে কথা বলা হয়। ঘটনাস্থল থেকে ২০০ মিটারের মধ্যেই ইন্ডিয়ান গ্যাসের একটি গোডাউন আছে। ফলে বড় দুর্ঘটনার আতঙ্কও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। ওই এলাকা সংখ্যালঘু অধ্যুষিত। মসজিদের মাইক থেকে নোয়াপাড়া এবং খলিলপুর এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক করা হয়। পুলিশের তরফ থেকে ওই এলাকাগুলিতে গাড়ি নিয়ে প্রচার চলে। গ্যাস লিক বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত কেউ আগুন জ্বালাবেন না। সেই বার্তা বারবার দেওয়া হতে থাকে। বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন থাকে ওইসব এলাকা।

ঘটনার আতঙ্কে রাতে কোনও বাড়িতে রান্নাও হয়নি। মসজিদে নমাজও পড়া হয়নি ভোররাতে। দুর্গাপুর থেকে বিশেষজ্ঞরা গিয়ে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে কাজ শুরু করেন। ভোর সাড়ে তিনটের পরে ওই গ্যাস লিক হওয়া বন্ধ হয়। নোয়াপাড়ার পঞ্চায়েত প্রধান রিপন শেখ জানান, নলহাটি থানার পুলিশের তৎপরতার জন্য দুর্ঘটনার মোকাবিলা করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। রবিবার সকালে জনজীবন স্বাভাবিক হতে শুরু করে।

 



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *