সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আগামী ২৭ জুন রথযাত্রা উৎসব। পুরী থেকে মাহেশ, দিঘা থেকে ইসকন- সর্বত্রই অপেক্ষায় থাকে রথের রশি টানায়। এই রথের রশিতে টান দিলেই হয় পূন্যলাভ। বিশ্বাস এমনটাই। চলুন, জেনে নেওয়া যাক এই বিশ্বাসের নেপথ্য কারণ।
প্রভু জগন্নাথের রথটিকে দেবতার মূর্ত প্রতীক হিসেবে দেখা হয়। এই রথের রশির নাম বাসুকি! সর্বত্রই ভক্তরা একবার প্রভুর রথের রশি স্পর্শ করে পূণ্য অর্জন করতে চান। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, জগন্নাথদেবের রথের রশি স্পর্শ করলে পুনর্জন্মের বিড়ম্বনা থেকে অব্যাহতি পাওয়া যায়। মোক্ষ লাভ ঘটে জীবাত্মার। ভক্তদের মনের বিশ্বাস, এই দড়ি ছুঁলে সংসারের সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত হওয়া যায়। জন্ম-মৃত্যুর শৃঙ্খল থেকে মুক্তি ঘটে।
শ্রীচৈতন্যের প্রিয় শিষ্য সনাতন গোস্বামী নাকি একবার রথযাত্রার দিন জগন্নাথদেবের রথের চাকার তলায় শুয়ে প্রাণ বিসর্জন দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু মহাপ্রভু নিজেই এই কাজে প্রিয় শিষ্যকে বাধা প্রদান করেন। তিনি বলেন, কৃষ্ণকে পাওয়ার একমাত্র উপায় ভক্তি। স্বেচ্ছায় মৃত্যুবরণের মধ্যে দিয়ে যে তমোগুণের সৃষ্টি হয়, তাতে কৃষ্ণকে পাওয়া যাবে না। এরপর অবশ্য সনাতন তাঁর সিদ্ধান্ত বদল করেন। এমনকী স্কন্দ পুরাণ ও বামদেব সংহিতায় রথের রশি স্পর্শ করে অশ্বমেধ যজ্ঞের ফল লাভের কথাও বলা হয়েছে। সূত সংহিতা ও কপিল সংহিতা ওই একই ধর্মীয় বিশ্বাসের কথা জানিয়েছে।
শোনা যায়, একসময় পুরীর রথযাত্রায় জগন্নাথদেবের রশি ছুঁয়ে সেই রথের চাকার তলায় স্বেচ্ছায় প্রাণ বিসর্জন দিতেন অসংখ্য ভক্ত। শ্রীপুরুষোত্তমের চাকার নিচে প্রাণ বিসর্জন দিলে নাকি ইহজন্মের সমস্ত পাপ ধুয়ে মুছে যায়। নিশ্চিন্তে স্বর্গারোহণ করা যায়। বিভিন্ন লোকবিশ্বাস অনুযায়ী এই রশির নানারকম কার্যকরী ক্ষমতা রয়েছে। সে যাই হোক। আসল কথা হল ভক্তি, আস্থা ও বিশ্বাসের মাধ্যমে যা অর্জন করা যায়, তা কখনও যুক্তি-তর্ক দিয়ে সমাধা করা যায় না। কাজেই আসন্ন শুভ রথযাত্রায় যদি রথের রশি স্পর্শ করার সুযোগ ঘটে তাহলে তা হাতছাড়া করবেন না যেন!
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন