সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে যেতে রাজি রয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। আমেরিকার হস্তক্ষেপে শর্তসাপেক্ষে এই চুক্তি করতে সম্মত হয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও। কিন্তু এই মুহূর্তে তুমুল লড়াই চলছে রাশিয়ার কার্স্ক অঞ্চলে। একে অপরকে একচুল জমিও ছাড়তে নারাজ কিয়েভ আর মস্কো। এই পরিস্থিতিতে কার্স্কে ইউক্রেনীয় সেনাকে আত্মসমর্পণের কথা বললেন পুতিন। আর এই এতেই জেলেনস্কির অভিযোগ, এভাবেই যুদ্ধবিরতির চুক্তি প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন রুশ প্রেসিডেন্ট।
দিন দুয়েক আগেই যুদ্ধবিরতি নিয়ে পুতিনের সঙ্গে কথা বলার জন্য মস্কোয় আধিকারিকদের পাঠিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর বার্তা ছিল, পুতিন যেন ইউক্রেনীয় সেনার প্রাণরক্ষা করেন। এই প্রসঙ্গেই রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, “কার্স্কে ইউক্রেনের সেনাকে আত্মসমর্পণ করতে হবে। তাহলে আমরা কথা দিচ্ছি, তাঁদের প্রাণরক্ষা করব।”
গত বছরের আগস্ট মাসে হঠাৎই রুশ সীমান্তবর্তী কার্স্কে ঢুকে পড়ে প্রায় ইউক্রেনের প্রায় তিন হাজার সৈন্য। এই হামলা সম্পর্কে আগে থেকেই কিছুই বুঝতে পারেনি রাশিয়া। জেলেনস্কি বাহিনীর সঙ্গে লড়াই করার জন্য উত্তর কোরিয়ার শরণাপন্ন হয় মস্কো। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে কার্স্কে প্রায় ১২ হাজার সেনা পাঠায় সেদেশের রাষ্ট্রপ্রধান কিম জং উন। কিন্তু তাঁর সেনাকেও মার দিয়ে ধরাশয়ী করে দেয় ইউক্রেন। কিন্তু এখন কার্স্কে লড়াইয়ের চিত্রটা বদলে গিয়েছে। কিমের সেনাকে সঙ্গে নিয়ে ভয়ংকর আক্রমণ শানাচ্ছে রুশ ফৌজ। এবার সেখানে পিছু হঠছে জেলেনস্কি বাহিনী। এনিয়ে ইউক্রেনীয় সেনার এক আধিকারিক বোহদান মাইরোশনিকভ সংবাদমাধ্যমে জানান, “এই মুহূর্তে কার্স্কের পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক। আমরা রসদ সরবরাহের রাস্তা পরিষ্কার না করি তাহলে যেকোনও মুহূর্তে বিপর্যয় নেমে আসতে পারে।”
ফলে আমেরিকার চোখ রাঙানির মাঝে বিপদ কমার বদলে বেড়েই চলেছে ইউক্রেনের। গত মাসে এক সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জানিয়েছিলেন, “আমরা রাশিয়াকে কার্স্ক দিয়ে দিতে পারি। কিন্তু আমার কিছু শর্ত রয়েছে। আমাদের যে জায়গাগুলো রাশিয়া দখল করে রেখেছে সেগুলো ছেড়ে দিতে হবে পুতিনকে।” মনে করা হচ্ছিল, রুশ ফৌজের নিয়ন্ত্রণে থাকা দোনবাস অঞ্চল ফিরে পেতে এই কার্স্ক অঞ্চলই বড় অস্ত্র ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের। কিন্তু বাস্তবে সেই সুযোগ হারাচ্ছেন তিনি। কিন্তু তা সত্ত্বেও এখনই কার্স্কের মাটি ছাড়তে নারাজ জেলেনস্কি। ফলে এই এলাকায় লড়াইয়ের মাঝে কিভাবে যুদ্ধবিরতি হবে তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে বিশ্লেষকদের।