প্রসূন বিশ্বাস: শনিবার মোহনবাগানের সচিবপদে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন সৃঞ্জয় বোস। আর সোমবার নতুন কর্মসমিতির প্রথম বৈঠকেই সভাপতি হিসেবে মনোনীত হলেন দেবাশিস দত্ত। যিনি আগে সচিবের দায়িত্ব পালন করেছেন। কিছুদিন আগে পর্যন্তও সৃঞ্জয়-দেবাশিসের সম্পর্ক নিয়ে উত্তাল হয়েছিল ময়দান। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মোহনবাগানের স্বার্থেই তাঁরা একত্রিত হয়েছেন। এবার কোন পরিকল্পনায় একসঙ্গে কাজ করবেন দুজনে? ফুটবলের জোড়া স্ট্রাইকারের উদাহরণ দিয়ে বোঝালেন নতুন সভাপতি।
প্রায় তিনদশক মোহনবাগান ক্লাবের সঙ্গে জড়িত দেবাশিসবাবু। এবার নতুন পদ পেয়ে তিনি সদস্য-সমর্থকদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি আরও জানান, সৃঞ্জয়ের নেতৃত্বে কার্যকরী কমিটি যে তাঁকে সভাপতি পদে গ্রহণ করেছে, তার জন্য তিনি গর্বিত। নতুন সভাপতি বলেন, “আমাদের কাছে প্রত্যাশা অনেক বেশি। এটা সকলের কমিটি, শুধু সৃঞ্জয় বা দেবাশিসের নয়। আগামী তিনবছর সেটা মাথায় রেখেই কাজ করতে হবে।”
সেটা কীভাবে? দেবাশিসবাবু ফুটবলের ভাষায় বোঝান, “এতদিন আমরা সিঙ্গল স্ট্রাইকারে খেলেছি। এবার ফর্মেশন চেঞ্জ করে ডবল স্ট্রাইকারে খেলব। সৃঞ্জয় ও দেবাশিস। ডবল স্ট্রাইকার হোক বা ডবল ডিফেন্ডারে যখন খেলা হয়, তখন একজন আরেকজনকে কভার করে। একজনের ভুল হলে আরেকজন সামাল দেয়। এই মানসিকতা নিয়ে চললে আমরা মোহনবাগানকে আরও সাফল্য এনে দেব।” সেই সঙ্গে তিনি এটাও জানান, এর আগে সভাপতিরা যেভাবে কাজ করেছেন, তার থেকে তাঁকে একটু অন্য ভূমিকায় দেখা যেতে পারে।
নতুন কমিটির প্রশংসা করে তিনি বলেন, “আমাদের নতুন কমিটি খুবই ভালো। সৃঞ্জয়ের মতো একজন আবেগপ্রবণ ও উৎসাহী মানুষ সচিব হয়েছেন।” কিন্তু অনেকে প্রশ্ন করছেন দুজনের মধ্যে সমঝোতা হলেও অনুগামীরা কি এত সহজে মিলেমিশে যাবেন? দেবাশিস দত্ত বলেন, “গত পাঁচ-ছমাসে একটা বড় বিভাজন তৈরি হয়েছে। সেটা মিশতে সময় লাগে। কিন্তু বাবা-মা যদি একত্রিত থাকে, তাহলে ছেলেমেয়েরাও ভালো হয়। আমার আর সৃঞ্জয়ের সম্পর্ক ঠিক থাকলে, নীচের তলায় মিলমিশ হয়ে যাবে। কারণ আমরা সবাই মোহনবাগানি। তাতে হয়তো সময় লাগবে। কিন্তু কাউকে ইন্ধন দেওয়া চলবে না। মনে রাখতে হবে, ব্যক্তির চেয়ে প্রতিষ্ঠান বড়।”
এর আগে সভাপতি ছিলেন টুটু বোস। এবার তিনি কোনও পদে নেই। অর্থাৎ মোহনবাগানে আনুষ্ঠানিক কোনও পদে নেই টুটুবাবু। সেই বিষয়ে দেবাশিস দত্ত বলেন, “টুটু দা আমাদের অভিভাবক। আজ যা শিখেছি সবই তো টুটু দা ও অঞ্জন দার থেকে।” পাশাপাশি সঞ্জীব গোয়েঙ্কার সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতাও যে লাগবে, সেটাও বলেন দেবাশিস দত্ত।