‘মেয়ে হয়েছে? আমার নয়’, সদ্যোজাত কন্যাসন্তানকে অস্বীকার বাবার! জোড়াবাগান থানায় দায়ের অভিযোগ

‘মেয়ে হয়েছে? আমার নয়’, সদ্যোজাত কন্যাসন্তানকে অস্বীকার বাবার! জোড়াবাগান থানায় দায়ের অভিযোগ

ইন্ডিয়া খবর/INDIA
Spread the love


অর্ণব আইচ: প্রায় প্রত্যেকদিনই কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন থানায় বধূ অত‌্যাচারের অভিযোগ দায়ের হয়। কিন্তু কন্যাসন্তানের বাবা হওয়ার খবর পেয়ে তার দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করার কথা স্ত্রীকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা? এমনই অভিযোগ শুভম চৌধুরী নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। জোড়াবাগান থানায় স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই গৃহবধূ। ঘটনাটির তদন্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ঠিক কী অভিযোগ? রাজস্থানের চুরুর বাসিন্দা এক তরুণীর সঙ্গে বিয়ে হয় উত্তর কলকাতার বিডন স্ট্রিটের বাসিন্দা শুভমের। বছর দেড়েক আগে গাঁটছড়া বাঁধেন দু’জনে। বধূর কাছ থেকে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা লাখ টাকা, সোনা ও রুপোর গয়না পণও নেন বলে অভিযোগ। পাশাপাশি বিয়ের পর থেকে আরও টাকা ও গয়নার জন‌্যও চাপ দেওয়া হত বলে দাবি নির্যাতিতা বধূর। দিনের পর দিন তাঁর উপর অত‌্যাচার বেড়ে চলে বলেও অভিযোগ। এর মধ্যেই বধূটি জানতে পারেন, তিনি অন্তঃসত্ত্বা। আর এরপরই নাকি চৌধুরী পরিবার ব্যতিব্যস্ত হয়ে ওঠে তাঁর গর্ভের সন্তানের লিঙ্গ নিয়ে! যে আসছে সে কন্যা না পুত্র, তা জানতে কার্যতই তাঁরা মরিয়া হয়ে ওঠেন বলে অভিযোগ।

এদিকে রাজস্থানের ওই তরুণীর দাবি, শ্বশুরবাড়ির লোকদের বোঝাতে থাকেন, লিঙ্গ নির্ধারণের পদ্ধতি সম্পূর্ণ বেআইনি ও শাস্তিযোগ‌্য অপরাধ। তাই তিনি কোনওভাবেই ওই পরীক্ষা করাতে নারাজ। পুলিশের কাছে বধূটির অভিযোগ, এরপরই স্বামী তাঁকে স্পষ্ট বলেন যে, তিনি পুত্রসন্তানের জন্ম দিলে কোনও সমস‌্যা হবে না। মা ও শিশু দু’জনেই পাবে যত্ন। কিন্তু কন‌্যাসন্তান জন্ম নিলে পরিবারের কেউ তার দায়িত্ব নেবে না।

অভিযোগ, ওই তরুণী কোনওভাবেই লিঙ্গ নির্ধারণের পরীক্ষা করাতে না চাওয়ায় শুরু হয় নির্যাতন। ভালো করে খেতে দেওয়া হত না তাঁকে। ঠিকমতো ওষুধও দেওয়া হত না। পাশাপাশি টাকা ও গয়না চেয়ে অত‌্যাচারের মাত্রাও বাড়তে থাকে। শেষপর্যন্ত রবীন্দ্র সরণির এক হাসপাতালে ওই বধূ এক কন‌্যাসন্তানের জন্ম দেন। ফোন করেন স্বামীকে। কিন্তু স্বামীর উত্তর শুনেই তাঁর মাথায় বাজ পড়ে। স্বামী স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ”মেয়ে হয়েছে? ওই মেয়ে আমার নয়।” যুবতীর অভিযোগ, তাঁর স্বামী শিশু ও তাঁর কোনও দায়িত্ব না নেওয়ার কারণে তিনি রাজস্থানে বাবার কাছে ফিরে যান। তাঁর বাড়ি রাজস্থানের চুরুর বিদাসর থানা এলাকায়। তিনি বিদাসর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। যেহেতু শ্বশুরবাড়ি কলকাতায়, তাই এবার জোড়াবাগান থানাতেও অভিযোগ দায়ের করায় তদন্তে নেমেছে পুলিশ।

উল্লেখ্য, কন‌্যাসন্তান জন্মালে তার বড় হওয়া থেকে পড়াশোনা, এমনকী বিয়ে পর্যন্ত নানা সুবিধা দেয় রাজ‌্য সরকার। এজন‌্য রাজ‌্য সরকারের বহু প্রকল্প রয়েছে। অথচ শুধু কন‌্যাসন্তান হয়েছে বলেই এক ব্যক্তি সদ্যোজাত কন্যাকে নিজের সন্তান বলে গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছে, এমনই অভিযোগে বিস্মিত পুলিশ। রীতিমতো গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত শুরু করেছেন জোড়াবাগান থানার আধিকারিকরা।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *