‘মেয়েই ছিল আমার মা দুর্গা, আর কখনও অঞ্জলি দেব না’, কান্নাভেজা স্বরে বলছেন অভয়ার মা

‘মেয়েই ছিল আমার মা দুর্গা, আর কখনও অঞ্জলি দেব না’, কান্নাভেজা স্বরে বলছেন অভয়ার মা

স্বাস্থ্য/HEALTH
Spread the love


সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘পূজার সময় এল কাছে।’ সময়ের নিয়ম মেনে মা আসেন প্রতি বছর। আকাশে তুলোর মতো মেঘ, বাতাসে শিউলির গন্ধ। কিন্তু যে মানুষের জীবন থেকেই আনন্দের রেশটুকু মুছে গিয়েছে, তাঁদের ছুঁয়ে যেতে পারে কি পুজো? ৮ আগস্ট, ২০২৪। আর জি করে তরুণী চিকিৎসকের রহস্যমৃত্যু ঘিরে উত্তাল হয়ে উঠেছিল বঙ্গ তথা ভারত। এমনকী বিদেশের মাটিতেও একাধিক জায়গায় প্রতিবাদে মুখর হয়েছিলেন মানুষ। দেখতে দেখতে এক বছর পেরিয়ে গিয়েছে। রাজ্য যেমন এক সম্ভাবনাময় চিকিৎসককে হারিয়েছে, অভয়ার বাবা-মা তেমনই হারিয়েছেন তাঁদের একমাত্র সন্তানকে।

জীবন নিজের মতো এগিয়ে চলে। এবছরও পুজো এসেছে। কিন্তু সন্তানহারা মা-বাবার বুকের ভিতরে উৎসবের আবেদন এখন ঠিক কেমন? আগে দুর্গাপুজোয় রীতিমতো উৎসবের আমেজ থাকত অভয়ার বাড়িতে। পাশেই দুর্গামণ্ডপ। পুজোর আয়োজন, লোকজনের আসা-যাওয়ায় সরগরম হয়ে থাকত বাড়ির পরিমণ্ডল। অথচ চোখের পলকে বদলে গিয়েছে সেই চিত্র। আজ পুজো এগিয়ে এলেও মনের কোণে সেই আনন্দের রেশমাত্র নেই। শোকের আবহ নাকি যুদ্ধের নীরব প্রস্তুতি? ২০২৪-এর পুজো চলাকালীন ষষ্ঠী থেকে অভয়ার বাবা-মা বসে গিয়েছিলেন ধর্নায়। সঙ্গে ছিলেন আত্মীয়পরিজন।

সেই শেষ নয়। গত এক বছরে বারে বারে আদালতে হাজির হয়েছেন তাঁরা। ধর্নায় নেমেছেন, মিছিলে হেঁটেছেন। কিছুতেই থিতু হয়ে যেতে দেননি মেয়ের হত্যার বিচারের দাবি। এভাবেই পেরিয়ে গিয়েছে এক বছর। আবারও এক দুর্গাপুজো এসে দাঁড়িয়েছে দোরগোড়ায়। বাড়ির পাশেই দুর্গামণ্ডপ। নিজেরা অংশ যদি নাও নেন, তবু তো উপেক্ষা করে থাকা যায় না এই উৎসবের আবহ। চাইতেই যদি হয়, অভয়ার অভিভাবক হিসেবে কী চাইবেন মা দুর্গার কাছে?

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালের প্রশ্নে অভয়ার মায়ের উত্তর, “আমার মেয়েই মা দুর্গা ছিল। কেবল আমার কাছে নয়, সারা পৃথিবীর কাছেই সে তা-ই।” সন্তানহারা মায়ের কাছে কি কখনওই আর আগের ছন্দে ফিরতে পারে জীবন? অভয়ার মা বলছেন, “আমার জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ অঞ্জলিই মায়ের পায়ে নিবেদন করেছি। আর কোনওদিন আমি দুর্গাপুজোয় অঞ্জলি দেব না…” বলতে বলতে গলা ধরে আসে, শব্দ জড়িয়ে যায়।
একই বিষাদ ধ্বনিত হয় বাবার কণ্ঠেও। বলেন, “আর নতুন কিছুই চাওয়ার নেই। আমরা বেঁচে থাকব মেয়ের বিচারের জন্যই। যদি আমাদের সত্তর বছর বেঁচে থাকার হয়, চাইব মা দুর্গা যেন আমাদের একশো বছর বাঁচিয়ে রাখে, যাতে আমরা মেয়ের বিচারটুকু দেখে যেতে পারি। যেন জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে যেতে পারি।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ






Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *