সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিশেষ পুরস্কার, অলিম্পিকের মশাল বাহক পদমর্যাদার পর এবার চিনের ন্যাশনাল অ্যাডভাইসরি বডি-তেও স্থান পেলেন গালওয়ানে হামলাকারী সেনা কমান্ডার। কি ফ্যাবাও-কে ওই সংগঠনের অন্যতম সদস্য়ের স্থান দেওয়া হয়েছে। নয়াদিল্লি-বেজিং সাম্প্রতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে চিনের এই পদক্ষেপ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা।
চিনা সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, চিনা পিপলস পলিটিক্যাল কনসাল্টেটিভ কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন কিউ ফ্যাবাও। সেখানেই তাঁকে সে দেশের ন্যাশনাল অ্যাডভাইসরি বডির সদস্যপদ দেওয়া হয়। তবে এই প্রথম নয়, ২০২০ সালের এই গালওয়ান সংঘর্ষের পর থেকেই একাধিক সম্মানে সম্মানিত করা হয়েছে তাঁকে। ২০২২ সালে গালওয়ানে হামলাকারী এই কমান্ডারের হাতে ‘বীরত্বে’র স্মারক তুলে দিয়েছিলেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। সেই সময় তাঁকে ‘হিরো রেজিমেন্ট কমান্ডার’ সম্মানে সম্মানিত করা হয়। এমনকী শীতকালীন অলিম্পিকের মশাল বাহকের মর্যাদা দিয়েছিল চিন। এবার সেই কিউ ফ্যাবাওকে গুরুত্বপূর্ণ পদে বসাল বেজিং।
উল্লেখ্য. সম্প্রতি শান্তির পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ভারত-চিন দুই দেশই। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে সেনা প্রত্যাহারের মতো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু গালওয়ানে হামলাকারী কমান্ডকে বিশেষ সম্মান দিয়ে চিন বুঝিয়ে দিল মুখে শান্তির বার্তা দিলেও বাস্তবটা ভিন্ন। বিশ্বজুড়ে শক্তির অক্ষের ভারসাম্য বদলাচ্ছে। নতুন নতুন ‘পাওয়ার ব্লক’ তৈরি হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা বলছে, বিশ্বের এই ‘পাওয়ার শিফটিং’-এর খেলার মাঝেই লাদাখের দিকে ড্রাগনের বিষ নজর ক্রমশ জোরালো হচ্ছে। সুযোগ বুঝে ছোবলের অপেক্ষা! ফ্যাবাও-কে বিশেষ পদ দিয়ে সেই বার্তাই দিয়ে রাখল বেজিং।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১৫ জুন সংঘর্ষ শুরু হয় একটি অস্থায়ী ব্রিজ নির্মাণ ঘিরে। পালটা সীমান্তে ‘বাফার জোন’ নির্মাণের কাজ শুর করে চিন। ৬ জুন ৮০ জন পিএলএ (PLA) সৈন্য ভারতের নির্মিত সেতুটি ভেঙে ফেলতে আসে। যদিও সেই সময় আলোচনার মাধ্যমে একরকম সমাধান হয়। ঠিক হয় ‘বাফার জোন’ অতিক্রম করে চিনা সেনা ফিরে যাবে। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি রাখেনি চিন।
উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে ১৫ জুন বিতর্কিত এলাকা পরিদর্শন করতে যান কর্নেল সন্তোষবাবু ও তাঁর দল। যেখানে আগে থেকেই উপস্থিত ছিল কর্নেল কি ফ্যাবাওয়ের নেতৃত্বে চিনা সেনা। ‘দ্য ক্ল্যাক্সন’-এর রিপোর্টে বলা হয়েছে, আচমকাই ফ্যাবাওয়ে ভারতীয় সেনাকে আক্রমণের নির্দেশ দেয় নিজের ফৌজকে। সঙ্গে সঙ্গে ফ্যাবাওয়েকে আটক করে ভারতীয় সেনা। কর্নেলকে বাঁচাতে পিএলএ ব্যাটালিয়ন কমান্ডার চেন হংজুন এবং সৈনিক চেন জিয়াংরং ভারতীয় সেনার সঙ্গে সংঘাতে জড়ান। এই সময়েই স্টিলের পাইপ, কাঁটা লাগানো লাঠি দিয়ে ভারতীয় জওয়ানদের উপরে হামলা চালায় চিনা সেনা।