সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: স্বাধীনতার পর তিনটি যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল পাঞ্জাবের ফিরোজপুরে অবস্থিত ভারতীয় বায়ুসেনা ঘাঁটি। সেনার চোখে ধুলো দিয়ে সেই সরকারি জমি বেমালুম লোপাট করে দিল দুই প্রতারক। ২৮ বছর পর বিষয়টি সরকারের নজরে আসতেই শুরু হল তদন্ত। নথি জাল করে সেনার সম্পত্তি বিক্রির অভিযোগে প্রতারক মা ও ছেলের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে তদন্তে নেমেছে পাঞ্জাব পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নির্মাণ করা হয়েছিল ওই বায়ুসেনা ঘাঁটি। এরপর ১৯৬২ সালে ভারত-পাক, ১৯৬৫ সালে ইন্দো-চিন ও ১৯৭১ সালে ভারত-পাক যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল পাক সিমান্তবর্তী ফুট্টুওয়াল গ্রামে অবস্থিত এই বায়ুসেনা ঘাঁটি। অভিযোগ, ভূমি দপ্তরের আধিকারিকদের সঙ্গে যোগসাজশে সরকারি নথি জাল করে এই বিমান ঘাঁটি বিক্রি করে দেন উষা আনসাল ও তাঁর পুত্র নবীন চাঁদ। ১৯৯৭ সালে এই কাণ্ড ঘটলেও এতদিন তা নজরেই পড়েনি সরকারের।
এক মামলার প্রেক্ষিতে সম্প্রতি পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাই কোর্ট পাঞ্জাবের দুর্নীতি দমন শাখার প্রধানকে এই মামলার তদন্তভার দেয়। সেইমতো গত ২০ জুন একাধিক ধারায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। এই দুর্নীতির ঘটনায় অপরাধীদের খোঁজ শুরু করেছেন পাঞ্জাবের করণ শর্মার নেতৃত্বাধীন এক দল। প্রাথমিক তদন্তে দুর্নীতি দমন শাখা জানিয়েছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ১৯৪৫ সালের ১২ মার্চ ব্রিটিশ সরকার এই জমি কিনেছিল। স্বাধীনতার পর জমিটি ভারতীয় বায়ুসেনার অধীনে চলে আসে। পরে সেই জমি জালিয়াতি করে নিজেদের নামে করে উষা ও তাঁর পুত্র নবীন। পরে তারা আবার এই জমি বিক্রি করে দেয়।
যদিও জানা যাচ্ছে, বিষয়টি সরকারের নজরে এসেছিল অনেক আগেই। রাজস্ব বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী নিশান সিং এই ঘটনায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। ২০২১ সালে ফিরোজপুরের ডেপুটি কমিশনারকে বিষয়টি নিয়ে তদন্তের জন্য বলেন। তবে সরকারের তরফে কোনও হেলদোল না হওয়ায় হাই কোর্টে মামলা দায়ের করেন নিশান। ১৯৯৭ সালে এই জমির যে বিক্রয় দলিল বানানো হয় সেখানে জমির মালিক হিসেবে একাধিক জনের নাম ছিল। অথচ সে বিষয়ে বায়ুসেনার কাছে এ বিষয়ে কোনও খবর ছিল না। এই ঘটনাকে উদ্বেগজনক বলে উল্লেখ করেছে হাই কোর্ট জানিয়েছে, এই ধরনের ঘটনা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি। পাশাপাশি ফিরোজপুরের ডেপুটি কমিশনারকেও ভর্ৎসনা করা হয়েছে আদালতের তরফে। ৪ সপ্তাহের মধ্যে এই মামলার তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।