অরূপ বসাক, মালবাজার: চা-বাগানের শ্রমিকদের সঞ্চয় হাতিয়ে কোটি টাকার প্রতারণা! অবশেষে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করল মেটেলি থানার পুলিশ। ধৃতরা সম্পর্কে বাবা-ছেলে। ধৃত জয় চিক বিরাইক প্রাক্তন সেনাকর্মী বলে খবর। তাদের উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া থানার বেবীঝোরা চা বাগান এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযুক্তরা একটি ভুঁইফোড় সংস্থা তৈরি করেছিল বলে খবর। অভিযোগ, দীর্ঘ এক বছর ধরে চা-শ্রমিকদের ভুল বুঝিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থ সংগ্রহ করা হচ্ছিল।
শুধু নাগেশ্বরী চা বাগান নয়, মালবাজার ও নাগরাকাটা এলাকা থেকেও অর্থ তোলা হয় বলে অভিযোগ। এজন্য সংস্থার হয়ে প্রায় ৪০ জন এজেন্ট নিয়োগ করা হয়েছিল। অভিযোগ, প্রতিটি শ্রমিক গড়ে ৪০ হাজার টাকা করে জমা রাখেন। এভাবে মোট ছ’শোর বেশি শ্রমিক প্রতারিত হয়েছেন বলে অনুমান। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, প্রতারণার পরিমাণ কোটি টাকারও বেশি। দিন আটেক আগে নাগেশ্বরী চা বাগানের শ্রমিক নিকিতা লোহার মেটেলি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ওই দিনই তৃণমূল নেতা ও প্রাক্তন বিধায়ক যোসেফ মুণ্ডার নেতৃত্বে শতাধিক মহিলা শ্রমিক মেটেলি থানায় হাজির হয়ে প্রতারণার বিরুদ্ধে সরব হন। এরপরেই সক্রিয় হয় পুলিশ।
তড়িঘড়ি গঠিত বিশেষ তদন্তকারী দল তৈরি হয়। মেটেলি থানার আইসি মিংমা লেপচা, এসআই মুস্তাফা হোসেন ও এসআই সৌরভ প্রসাদের নেতৃত্বে তদন্ত শুরু হয়। ধৃতদের গ্রেপ্তার করা হয়। আজ সোমবার ধৃতদের জলপাইগুড়ি জেলা আদালতে তোলা হয়। ধৃতদের সাতদিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। জানা গিয়েছে, সংস্থার প্রধান জয় চিক বিরাইক পূর্বে কেন্দ্রীয় বাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। ছুটিতে বাড়ি এসে আর কাজে যোগ দেননি। কিছুদিন আগে তিনি একটি ভয়েস মেসেজ ছড়িয়ে নিজেকে রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী বলে দাবি করেন। সেই মেসেজ তদন্তকারীদের কাছে রয়েছে। পুলিশের তরফে ধৃতের সম্পত্তি, ব্যাঙ্ক লেনদেন ও কেনা গাড়ির খোঁজে তদন্ত চলছে। তৃণমূল নেতা ও প্রাক্তন বিধায়ক যোসেফ মুণ্ডা বলেন, “পুলিশের এই উদ্যোগে আমরা খুশি। এজন্য পুলিশ প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই। আরও কারা যুক্ত, খুঁজে বার করুক প্রশাসন।”