স্টাফ রিপোর্টার: আসন্ন সপ্তাহান্তটা বেশ উষ্ণ হতে চলেছে মায়ামি আর লস অ্যাঞ্জেলেসের বাসিন্দাদের জন্য। নাহ, সেটা ক্লাব বিশ্বকাপের সূত্রে ফুটবল মহাতারকাদের একজোট হওয়ার গরম নয়। বরং পুরোটাই প্রাকৃতিক, আবহাওয়া সংক্রান্ত বিষয়। সেদেশের জাতীয় আবহাওয়া পরিষেবা সংস্থা জানিয়েছে, আগামী কয়েকদিন ‘মাঝারি’ ধরণের তাপপ্রবাহ হতে পারে এই দুই শহরে। আর এই অবস্থায় ক্লাব বিশ্বকাপ আয়োজন করা নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। একইসঙ্গে আগামী বছর ফিফা বিশ্বকাপের সময় মার্কিন মুলুকের পরিস্থিতি কী হবে, তা নিয়েও আলোচনা চলছে।
ঠিক কী বার্তা দিয়েছে ইউএস জাতীয় আবহাওয়া পরিষেবা সংস্থা? আগামী কয়েকদিন লস অ্যাঞ্জেলেস এবং মায়ামির তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাপিয়ে যেতে পারে। এই সময়ে প্রকাশ্যে শরীরচর্চা জাতীয় কাজ করলে গরমের শিকার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানিয়েছে তারা। আর এই বার্তার পরই প্রশ্ন উঠছে। শনিবার আল আহলি বনাম ইন্টার মায়ামি ম্যাচ দিয়ে শুরু হচ্ছে ক্লাব বিশ্বকাপ। খেলা হবে মায়ামির হার্ডরক স্টেডিয়ামে, সন্ধ্যায়। রবিবার দুপুরে লস অ্যাঞ্জেলেসের রোজ বোল স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে প্যারিস সাঁ জাঁ এবং অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। সোমবার বিকালে আবার বোকা জুনিয়র্স ও বেনফিকা খেলবে মায়ামিতে। সতর্কবার্তার পর এই ম্যাচগুলি নিয়ে আশঙ্কা বাড়ছে। কারণ এই দুই স্টেডিয়ামেই আচ্ছাদন নেই। আর তাপপ্রবাহের মধ্যে খেললে শারীরিক সমস্যা হতে পারে ফুটবলারদের।
অবশ্য শারীরিক সমস্যার আশঙ্কা অমূলক নয়। এমনিতে প্রায় ৪১ বছর আগে এদেশে হওয়া ফুটবল বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতার ইতিহাসে উষ্ণতম সংস্করণগুলির মধ্যে একটি। আর তারপর থেকে মার্কিন মুলুকের গড় তাপমাত্র ক্রমশ বেড়েছে। দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ১০ উষ্ণতম বছরের মধ্যে ৯টিই এই তিন দশকের অন্তর্গত। গতবছর কোপা আমেরিকায় মায়ামিতে ম্যাচের মাঝে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন উরুগুয়ের ডিফেন্ডার রোনাল্ড আরাউহো। পানামার বিরুদ্ধে রক্তচাপ কমে যাওয়া ও মাথা ঘোরানোর জন্য দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নামতে পারেননি তিনি। আবার কনসাস সিটিতে কানাডা বনাম পেরু ম্যাচে সহকারী রেফারি হুম্বার্তো পানহোজ মাঠেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। দু’টো ক্ষেত্রেই অসুস্থতার কারণ হিসাবে উঠে আসে ‘ডিহাইড্রেশন’।
সেখানে আসন্ন ক্লাব বিশ্বকাপের ৬৩ ম্যাচের মধ্যে ৩৫টিই শুরু হবে দুপুরে বা বিকালে। একটি জরিপ সংস্থার দাবি, প্রতিযোগিতায় ব্যবহৃত ১১ স্টেডিয়ামের মধ্যে ৮টি ঢাকার বিশেষ সুযোগ নেই। আর তারমধ্যে চারটি শহরে তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি রয়েছে, যেখানে তাপমাত্র ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হয়ে যাবে। সঙ্গে এই গরমে বিভিন্ন শহর ঘুরে ম্যাচ খেলার বিষয়টিও রয়েছে। আর ঠিক এক বছর পরই বিশ্বকাপ হবে ইউএসও, মেক্সিকো ও কানাডায়। জুন-জুলাইয়ে প্রথম দু’টো দেশের অধিকাংশ এলাকায় তাপমাত্রা একটু বেশিই থাকে। আর পেশাদার ফুটবলারদের সংগঠন ‘ফিফপ্রো’ মনে করে, তাপমাত্র ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হলে তা ফুটবল খেলার অনুপযোগী। এমনিই বড় আকারে ক্লাব বিশ্বকাপ করা নিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছে ফিফা। সেখানে মার্কিন মুলুকের তাপমাত্রা যে সেই বিতর্কের উষ্ণতা বাড়বে, বলাই বাহুল্য।