মার্করামদের দাপটে WTC ফাইনালে ভোঁতা অজি পেসাররা, লর্ডসে ঐতিহাসিক জয়ের অপেক্ষায় প্রোটিয়ারা

মার্করামদের দাপটে WTC ফাইনালে ভোঁতা অজি পেসাররা, লর্ডসে ঐতিহাসিক জয়ের অপেক্ষায় প্রোটিয়ারা

বৈশিষ্ট্যযুক্ত/FEATURED
Spread the love


প্রথম ইনিংস
অস্ট্রেলিয়া: ২১২/১০ (ওয়েবস্টার ৭২, রাবাডা ৫১/৫)
দক্ষিণ আফ্রিকা: ১৩৮/১০ (বেডিংহাম ৪৫, কামিন্স ২৮/৬)

দ্বিতীয় ইনিংস
অস্ট্রেলিয়া: ২০৭/১০ (স্টার্ক ৫৮, রাবাডা ৫৯/৪)
দক্ষিণ আফ্রিকা ২১৩/২ (মার্করাম ১০২*, বাভুমা ৬৫*, স্টার্ক ৫৩/২)
দক্ষিণ আফ্রিকার জিততে দরকার ৬৯ রান। হাতে দু’দিন।

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: টেস্ট ক্রিকেট ধৈর্য্যের খেলা, মাটি কামড়ে পড়ে থাকার পরীক্ষা। সেই পরীক্ষায় এখনও পর্যন্ত গ্রেস মার্ক-সহ পাশ দক্ষিণ আফ্রিকা। মার্করাম-বাভুমার দাপট দেখে কে বলবে লর্ডসের এই পিচে গত দু’দিনে ২৪টা উইকেট পড়েছে। দুই প্রোটিয়া ব্যাটার সময় নিলেন, শট মারার ক্ষেত্রে সঠিক বলের অপেক্ষা করলেন। ফলাফল কী? বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল জয় থেকে আর মাত্র ৬৯ রান দূরে দক্ষিণ আফ্রিকা। বলা ভালো, ‘চোকার্স’ তকমা ঘোচার থেকে মাত্র ৬৯ রান দূরে। হাতে এখনও দুটো দিন, ৮ উইকেট। অর্থাৎ দক্ষিণ আফ্রিকার রান ২ উইকেট হারিয়ে ২১৩। অনবদ্য সেঞ্চুরিতে অপরাজিত মার্করাম, হাফসেঞ্চুরি করে রয়েছেন বাভুমাও। চতুর্থ দিনের শুরুতেই যে বাভুমার হাতে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের মেস উঠবে, তা অনুমান করাই যায়।

লর্ডসে প্রথম দুদিন ছিল পেসারদের। সেটা অস্ট্রেলিয়া হোক বা দক্ষিণ আফ্রিকার। টসে জিতে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন প্রোটিয়া অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। লর্ডসের আকাশ তখন মেঘলা। পিচে অবিশ্বাস্য সুইং। সেটার সুযোগ নিতে ভুল করেননি দক্ষিণ আফ্রিকার পেসাররা। অস্ট্রেলিয়াকে মাত্র ২১২ রানে বন্দি করে ফেলেছিলেন তাঁরা। তাও বিউ ওয়েবস্টারের আউটে বাভুমা রিভিউ না নেওয়ায় তিনি ৭২ রান জুড়ে যান। স্টিভ স্মিথ করেন ৬৬ রান। কাগিসো রাবাডা নেন পাঁচটি উইকেট, তিনটি মার্ক জানসেনের।

ব্যাট করতে নেমে একই অবস্থা দক্ষিণ আফ্রিকারও। শুরুটা করেছিলেন মিচেল স্টার্ক, শেষ করেছিলেন প্যাট কামিন্স। অজি অধিনায়কের বলের বাউন্স, পেস, সুইং কিছুই বুঝে উঠতে পারেননি ত্রিস্তান স্টাবসরা। তবু মন্দের ভালো বাভুমা ৩৬ ও বেডিংহাম ৪৫ রান করেন। কিন্তু লোয়ার অর্ডার কামিন্সের ধাক্কা সামলাতে না পেরে ৯৪ রানে ৫ উইকেট থেকে ১৩৮ রানে সব উইকেট হারায়। একাই ৬ উইকেট নেন কামিন্স। অস্ট্রেলিয়ার হাতে তখন ৭৪ রানের বিরাট লিড। অন্তত এই পিচের জন্য তো বটেই। ফের যেন সত্যি হতে চলেছে, ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া অবধ্য। অন্যদিকে দক্ষিণ আফ্রিকা ফের চোকার্স। কিন্তু এর মাঝেও একটা জিনিস স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। আকাশ পরিষ্কার হলে বা একটু বেলা গড়ালে ব্যাট করা কঠিন কিছু নয়। আর সেভাবে সুইংও হচ্ছে না। বাভুমা সেটা করে দেখালেনও।

দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতে অজিরাও বেকায়দায় পড়েছিল। স্মিথ, ওয়েবস্টাররা রান পাননি। ভারতের কাছে যিনি মাথাব্যথা, সেই হেডকে দেখে মনে হচ্ছিল সুইং সামলানোর জন্য আলাদা ক্লাস দরকার। অ্যালেক্স ক্যারি করেন ৪৩ রান। দ্বিতীয় দিনে বোলিংয়ের সময় প্রোটিয়ারা শুধু একটাই ভুল করেছিল। শেষবেলায় মিচেল স্টার্কের সহজ ক্যাচ ফেললেন মার্কো জানসেন। ম্যাচও বোধহয় প্রায় ফেলেই দিচ্ছিলেন। কারণ স্টার্ক একাই ৫৮ রান করে ল্যাজেগোবরে করে দিয়েছিলেন প্রোটিয়াদের। রাবাডার ৪ উইকেট ও এনগিডির ৩ উইকেট সত্ত্বেও ২৮২ রানের বিরাট লক্ষ্য খাঁড়া করে অস্ট্রেলিয়া।

সেই অসাধ্যসাধন থেকে দক্ষিণ আফ্রিকা আর মাত্র ৬৯ রান দূরে। শুরুতে রিকেলটনের উইকেট তুলে পালটা আক্রমণের চেষ্টা করেছিলেন স্টার্ক। কিন্তু মার্করাম-বাভুমাদের টপকাতে পারলে তো? দুজনের উচ্চতার তফাৎ প্রায় ৯ ইঞ্চির। কিন্তু এদিন কাঁধে-কাঁধে মিলিয়ে লড়াই করলেন। মার্করাম অপরাজিত রয়েছেন ১০২ রানে। ব্যাট থেকে এসেছে ১১টি চার। এই পরিসংখ্যানের থেকেও বড় হল তাঁর ধৈর্য্য। ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে সফল এক ব্যাটার দেখিয়ে দিলেন কীভাবে প্রবল চাপ মাথায় নিয়ে টেস্ট ক্রিকেট খেলতে হয়। তাঁর সামনে কার্যত হার মানল অজি পেস ত্রিফলা। 

এর সঙ্গে রয়েছেন টেম্বা বাভুমা। গ্ল্যামারের দুনিয়ায় নামডাক নেই, ট্রোলডও হন। আশা করাই যায়, ফাইনাল জিতলে সেটা থামবে। পায়ে চোট, দৌড়তে পারছেন না। একটা জীবনদান পাওয়ার পরই আসল রূপ ফুটে উঠল। স্টার্কের বাউন্সারগুলো আলতো হাতে পুল করলেন। কখনও বা কামিন্সের সুইংকে ব্যাটের মাঝখান দিয়ে নামিয়ে নিলেন মাটিতে। তিনি অপরাজিত আছেন ৬৫ রানে। দক্ষিণ আফ্রিকার রান তৃতীয় দিনের শেষে ২১৩। হাতে আট উইকেট। WTC ফাইনালকে বলা হচ্ছে ‘আলটিমেট টেস্ট’। টেস্ট ক্রিকেটের সেই টেস্টে যে এত সুন্দর উত্তর লেখা যায়, সেটাই দুই যোদ্ধা দেখিয়ে দিলেন।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *