সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শীর্ষ আদালতের গড়ে দেওয়া তিন বিচারপতির কমিটির রিপোর্টের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টেই মামলা দায়ের করেছেন বিচারপতি যশবন্ত বর্মা। ওই মামলা শুনতে রাজি হলেও আদালতের বক্তব্য, এই মামলা দায়ের করা উচিত হয়নি বিচারপতির।
আগেই প্রধান বিচারপতি বিআর গাভাই নগদকাণ্ডের মামলা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন। এরপরেই বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত এবং বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মসীহর বেঞ্চে যায় মামলাটি। নতুন বেঞ্চ গঠনের পর সোমবার মামলার শুনানির দিন ধার্য হয়। এদিন বিচারপতির বর্মার আইনজীবী কপিল সিবাল দাবি করেন, আইন মেনে বিচারপতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হয়নি। তিনি বলেন, অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার আগেই জনসমক্ষে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা, সংবাদমাধ্যমে প্রচার হয়েছে। এই ধরনের ঘটনা সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চের রায় লঙ্ঘন করে। পালটা বিচারপতিরা প্রশ্ন তোলেন, যখন যশবন্ত বর্মার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছিল, তখন কেন আপত্তি করা হয়নি? সিব্বল উত্তর দেন, উদ্ধার হওয়া নগদ অর্থ কার, তা জানার জন্য বিচারপতি বর্মা তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হয়েছিলেন। মামলার পরবর্তী শুনানি ৩০ জুলাই।
উল্লেখ্য, গত ১৪ মার্চ দিল্লি হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি যশবন্ত বর্মার বাংলোয় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সেই আগুন নেভাতে গিয়ে বিচারপতির বাড়ি থেকে উদ্ধার বিপুল পরিমাণ পোড়া নোট। ঘটনার পর বিচারপতি বর্মাকে বদলি করা হয় এলাহাবাদ হাই কোর্টে। নগদ উদ্ধার কাণ্ডে সুপ্রিম কোর্টের ইন হাউস কমিটির তদন্ত শুরু করে। গঠিত হয় ৩ সদস্যের কমিটি। গত ৩ মে ওই অনুসন্ধান কমিটি একটি মুখবন্ধ রিপোর্ট জমা দেয় সুপ্রিম কোর্টে। দাবি করা হয়, বিচারপতি বর্মার বিরুদ্ধে উপযুক্ত প্রমাণ পেয়েছে ওই তদন্ত কমিটি। সেই প্রমাণের ভিত্তিতেই ওই তদন্ত কমিটি বিচারপতি বর্মার অপসারণের সুপারিশ করেছে বলে সূত্রের খবর।
এর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিলেন বিচারপতি বর্মা। নিজের আবেদনে বিচারপতি বর্মার যুক্তি, ওই কমিটির তদন্ত স্বাভাবিক ন্যায়বিচারের নীতি লঙ্ঘন করেছে। কমিটির তরফে প্রকৃত শুনানি ও সাক্ষীদের জেরার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। শুধু তাই নয় আরও অভিযোগ ওই তদন্ত কমিটি সমস্ত কিছু প্রমাণের ভার তাঁর উপর চাপিয়ে দিয়েছেন। কমিটি একটি কল্পনাকে সত্য বলে ধরে নিয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বুধবার আদালতে এই মামলার জরুরি ভিত্তিতে শুনানির আর্জি জানিয়েছিলেন বিচারপতি বর্মার পক্ষের আইনজীবী কপিল সিবাল। এর প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি এই মামলার শুনানি থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন। প্রধান বিচারপতি বিআর গাভাই বলেন, “আমি এই মামলাটি শুনতে পারব না। কারণ আমি ওই কমিটির অংশ ছিলাম। আমরা মামলাটি তালিকাভুক্ত করব এবং শুনানির জন্য অন্য বেঞ্চ গঠন করা হবে।” আদালতে এই মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল প্রধান বিচারপতি গাভাই, বিচারপতি কে. বিনোদ চন্দ্রন এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির বেঞ্চে। তবে শুরুতেই সেই মামলা থেকে প্রধান বিচারপতি নিজেকে সরিয়ে নেওয়ায় নতুন করে বেঞ্চ গঠন করা হয়। সোমবার হতে চলেছে মামলার শুনানি।