সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: সিপিআই(মাওবাদী)-র স্কোয়াড সদস্য মীরা পাহাড়িয়ার নামে ঘোষণাপত্র জারি করেছে ঝাড়খণ্ডের পূর্ব সিংভূমের আদালত। ২০১৮ সালে ঝাড়খণ্ডের এমজিএম থানায় একটি মাও নাশকতায় অভিযুক্ত এই মাওবাদী নেত্রী। তাই ঝাড়খন্ডের এমজিএম থানার পাশে কমলপুর থানার পুলিশ আধিকারিকরা মঙ্গলবার তার অযোধ্যা পাহাড়তলির বাঘমুন্ডির আমকোচা গ্রামের বাড়ি গিয়ে তার মা ও মামার সামনে ওই ঘোষণাপত্র বাড়ির দেওয়ালে সেঁটে দেন। ওই ঘোষণাপত্রে তাকে ফেরার বলে জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে দ্রুত
আত্মসমর্পণ করার কথা রয়েছে। ঝাড়খণ্ডে এই মাও নেত্রীর মাথার দাম রয়েছে ১ লক্ষ টাকা।
অযোধ্যা স্কোয়াড ভেঙে যাওয়ার পর এখনও যে দু’জন মাও নেতা-নেত্রী সংগঠনে রয়েছেন তারা হলেন মীরা পাহাড়িয়া ওরফে মীনা ও তার স্বামী মাও ডেপুটি কমান্ডার সাগর সিং সর্দার ওরফে সাগর ওরফে বীরেন সিং ওরফে রবি সিং সর্দার ওরফে ছোট বিজয়। তার মাথার দাম ২ লক্ষ টাকা। জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা বা এনআইএর ১ লক্ষ। ঝাড়খণ্ডেও ওই একই পরিমাণ টাকা। এই মাও দম্পতির শেষ লোকেশন ছিল ঝাড়খণ্ডের সারান্ডা। তবে তারা বর্তমানে ছত্তিশগড়ও চলে যেতে পারে।
বীরেনের বাড়ি ঝাড়খণ্ডের সরাইকেলা-খরসোওয়া জেলার নিমডি থানার টেঙাডি গ্রামের সিধাডি টোলায়। অযোধ্যা স্কোয়াডে থাকার সময়েই তাদের ‘কমরেড ম্যারেজ’ হয়। একের পর এক গ্রেপ্তার, আত্মসমর্পণ, যৌথ বাহিনীর গুলিতে মৃত্যুতে অযোধ্যা স্কোয়াড ভেঙে যাওয়ার পর যে এই দম্পতি দলমা স্কোয়াডের হয়ে কাজ করছিলেন। এই মাও দম্পতির নামে বাংলা-ঝাড়খণ্ডে একাধিক মামলা রয়েছে। অযোধ্যা স্কোয়াডে থাকাকালীন ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে মীরা গ্রামে পা রাখলেও বাড়িতে যাননি। এখনও তার অপেক্ষায় পথ চেয়ে আছেন তার মা মণি পাহাড়িয়া। তার কথায়, “মেয়েকে যদি একবার দেখা পেতাম আঁকড়ে ধরে রাখতাম। কোথাও যেতে দিতাম না। কত যে মেয়েকে খুঁজে বেড়ায়। সবাইকে বলি খোঁজ করে দাও। বন্দুক ছেড়ে আর পাঁচটা মানুষের মত যেন জীবন অতিবাহিত করে।”
২০০৮ সাল নাগাদ এই আমকোচা লাগোয়া ছাতরাজারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে ৯ বছরের মেয়ে আর ঘরে ফেরেনি। পরে চিঠি দিয়ে মাকে জানিয়েছিল, সে ভালো আছে।