মহাকুম্ভ থেকে মালদহ, ডেথ সার্টিফিকেট ছাড়া ছেলের দেহ বয়ে আনলেন যন্ত্রণাকাতর বাবা!

মহাকুম্ভ থেকে মালদহ, ডেথ সার্টিফিকেট ছাড়া ছেলের দেহ বয়ে আনলেন যন্ত্রণাকাতর বাবা!

রাজ্য/STATE
Spread the love


বাবুল হক, মালদহ: ডেথ সার্টিফিকেট ছাড়াই মহাকুম্ভে মৃত শিক্ষকের দেহ ফিরল মালদহের বৈষ্ণবনগরের বাড়িতে। তেত্রিশ বছরের ছেলে অমিয় সাহার নিথর দেহ বয়ে আনার যন্ত্রণা সইতে হল বাবা প্রদীপ সাহাকে। মহাকুম্ভে পূণ্যস্নানে গিয়ে ভিড়ের চাপে অসুস্থ হয়ে মারা যান অমিয়। বাবা-মায়ের সঙ্গে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ভিড়ের মধ্যে পরিবার থেকে আলাদা হয়ে যায়। বুকে ব্যাথা অনুভব করে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন অমিয়।

প্রয়াগরাজ থেকে ছেলের দেহ কীভাবে বাড়ি নিয়ে আসবেন, সেই বিষয়ে উত্তরপ্রদেশ সরকারের তরফে প্রদীপবাবুকে কোনও রকম সাহায্য করা হয়নি বলে অভিযোগ। দেওয়া হয়নি মৃত্যুর শংসাপত্রও। এমনকী উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে মৃত্যু হলেও সেখানে দেহের ময়নাতদন্তও করা হয়নি। সুদূর মহাকুম্ভ থেকে ডেথ সার্টিফিকেট ছাড়াই কোনও রকমে শিক্ষক ছেলের নিথর দেহ মালদহে বয়ে আনলেন পিতা। শুক্রবার সকালে দেহ পৌঁছয় বৈষ্ণবনগরের বাড়িতে। কিন্তু মৃত্যুর শংসাপত্র ছাড়া এখানেও যে দেহ সৎকার করার নিয়ম নেই! আর নিয়মের সেই বেড়াজালে পড়ে বাকরূদ্ধ প্রদীপবাবু।

তবে সমস্যা মিটিয়েছে মালদহ জেলা প্রশাসন। রাজ্য সরকারের নির্দেশে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শিক্ষক অমিয় সাহার দেহের ময়নাতদন্ত করা হয় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে। ময়নাতদন্তের পর এদিন বিকেলে মালদহে দেহ সৎকার করা হয়েছে। মৃতের বাবা প্রদীপ সাহার অভিযোগ, মহাকুম্ভে গিয়ে অসুস্থ হওয়ার পরেও ছেলেটাকে চরম অব্যবস্থার শিকার হতে হয়। সেখানকার হাসপাতাল স্রেফ ‘মৃত’ বলে ছেড়ে দেয়। কোনও কাগজ দেয়নি, ময়নাতদন্তও করেনি। দেয়নি  ডেথ সার্টিফিকেট। বাধ্য হয়ে কোনও রকমে দেহ নিয়ে মালদহ ফিরে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। মালদহ জেলা প্রশাসনের সাহায্যে এখানে শিক্ষকের ময়নাতদন্ত হয়েছে।

এদিন মৃত শিক্ষকের নিথর দেহ গ্রামে পৌঁছলে গভীর শোকের ছায়া নেমে আসে বৈষ্ণবনগর থানার বীরনগর-২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের চরবাবুপুর এলাকায়। বৈষ্ণবনগরের কার্তিকটোলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন অমিয় সাহা। পরিবার সূত্রে খবর, মঙ্গলবার পরিবারবর্গ-সহ আত্মীয়দের দশজনের একটি দলের সঙ্গে তিনি উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে মহাকুম্ভ মেলায় অমৃতস্নান করতে যান। সেখানে বুধবার পৌঁছে যথারীতি অমৃত স্নানও করেন। কিন্তু ফেরার সময় প্রচণ্ড ভিড়ের চাপে তিনি হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়েন। শুরু হয় শ্বাসকষ্ট। তাঁকে তড়িঘড়ি কোনও রকমে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু হাসপাতালে যাওয়ার আগে রাস্তাতেই তাঁর মৃত্যু হয় বলে দাবি পরিবারের। শুক্রবার মৃত অমিয় সাহার বাড়িতে পৌঁছন বৈষ্ণবনগরের বিধায়ক চন্দনা সরকার। তিনি মৃতের পরিবারকাকে সমবেদনা জানান। পাশাপাশি মহাকুম্ভ মেলার পরিকাঠামো এবং পরিকল্পনাহীনতার অভিযোগ তুলে উত্তরপ্রদেশের যোগী সরকারের কড়া সমালোচনা করেন তৃণমূল বিধায়ক।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *