মহাকুম্ভে রেলের ‘অব্যবস্থতা’য় চরম ভোগান্তি, ক্ষুব্ধ পুণ্যার্থীরা

মহাকুম্ভে রেলের ‘অব্যবস্থতা’য় চরম ভোগান্তি, ক্ষুব্ধ পুণ্যার্থীরা

সিনেমা/বিনোদন/থিয়েটার
Spread the love


সুব্রত বিশ্বাস: মহাকুম্ভে অতিরিক্ত ভিড় কমায় স্বস্তি নিঃশ্বাস ছাড়ছে রেল। বুধবার থেকে এই ভিড় কমায় প্রয়াগররাজ ও বেনারস-সহ আশপাশের স্টেশনে চাপ কমেছে। বেনারস স্টেশনের আরপিএফ ইন্সপেক্টরের কথায়, বুধবার ৭০ শতাংশ যাত্রী কম আগের দিনের তুলনায়। বুধবারও পূর্ব ও দক্ষিণ পূর্ব রেলের বেশ কয়েকটি ট্রেন বাতিল ও অনিয়মিত হয়ে পড়েছে। পূর্ব রেলের মুখপাত্র দীপ্তিময় দত্ত জানিয়েছে, ইসিআর রেলের রেকের সমস্যায় কোলফিল্ড এক্সপ্রেস বাতিল। ভিড়ের চাপে দিল্লিতে মৃত্যুমিছিলের জন্য আরপিএফ রেলের ভুলকেই দায়ী করে রিপোর্ট দিয়েছে।

উপযুক্ত পরিকাঠামো ছাড়াই যে বিপুল পরিমাণ ট্রেন চালাচ্ছে রেল তার জন্যই এই বিপত্তি দেখা দিচ্ছে বিভিন্ন স্টেশনে। বুধবার পর্যন্ত সাড়ে ৫৩ কোটি মানুষ পুণ্যস্নান সেরেছেন বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। লোক টানার যাবতীয় পরিকল্পনা যোগী সরকার অনেক আগেই করেছিল। কুম্ভক্ষেত্রের যে কটি স্টেশন রয়েছে তার পরিকাঠামো তৈরির সিদ্ধান্ত তিন বছর আগেই নিয়েছিল রেল। এজন্য পাঁচ হাজার কোটি খরচও করেছে। কিন্তু দেশের যে সমস্থ স্টেশনগুলি থেকে মানুষ আসবে তার পরিকাঠামো উন্নয়নের সিদ্ধান্ত নেয়নি রেল বলে আধিকারিকদের মত। ফলে সমস্যা তীব্র আকার নিয়েছে। ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তেরো হাজার ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা রেলের। যার মধ্যে ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রেল ১২,৫৮৩টি ট্রেন চালিয়ে ফেলেছে। ১৬ ফেব্রুয়ারি ১৮.৪৮ লক্ষ ও ১৭ ফেব্রুয়ারি ১৮.৬০ লক্ষ যাত্রী কুম্ভগামী হয়েছেন। এই বিপুল পরিমাণ যাত্রী বহনের হিসাব রেল দিলেও আয়ের দিকটা জানায়নি।

রেল কর্তাদের কথায়, বিভিন্ন রাজ্যের উপর দিয়ে প্রচুর বিশেষ ট্রেন চালাচ্ছে রেল। পাশাপাশি অসংখ্য ইন্টারসিটি ও লোকাল ট্রেন চালাচ্ছে রেল। যাতে যাত্রীরা যাতায়াত করছেন সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। শুধু বিনা টিকিটে যাত্রা নয়, এই যাত্রীর বিভিন্ন ট্রেনের সংরক্ষিত সিটের দখল নিয়ে যাত্রা করছেন। ট্রেন ভাঙচুর করছেন। এসি কামরাগুলিও দখলে চলে যাচ্ছে বলে যাত্রীদের অভিযোগ। অভিযোগের ঝুলি ভর্তি হয়ে গেলেও রেল কোনও ব্যবস্থাই নিচ্ছে না বলে অভিযোগ। এমনকি রেলের তরফে তাদের উত্তর দেওয়া হচ্ছে ‘মানিয়ে নিন’। বিনা টিকিটের যাত্রীদের যাত্রা মসৃণ করতে ট্রেনে টিকিট পরীক্ষকরা টিকিট পরীক্ষা যেমন করছেন না। তেমনই প্রয়াগরাজ সহ অন্য আশপাশের স্টেশন ও বেনারস স্টেশনে ঢোকা ও বেরোনোর গেটগুলিতে নেই কোনও টিকিট পরীক্ষকও।

সোদপুরের বাসিন্দা তন্ময় দাস কুম্ভে এসেছেন নেতাজি এক্সপ্রেসের থ্রি টিয়ারে, কর্ণাটক থেকে এসেছেন ত্রিদিব শেঠ্ঠি। তিনিও এসি কামরায় যাত্রা করেছেন। অত্যন্ত বিরক্তির সুরে দুজনেই জানিয়েছেন, বিনাটিকিটের যাত্রীরা পুরো ট্রেনই দখল করে এসেছেন। শৌচালয়ে যাবার পথটুকুও দেয়নি কেউ। ফলে চরম সমস্যার মধ্যে দীর্ঘপথ যাত্রা করতে হয়েছে তাদের। এসির ঠাণ্ডা বাড়িয়ে কোনও ফল পাওয়া যায়নি। পুণ্যের আসায় এই অস্বাচ্ছন্দ্য ট্রেন যাত্রা চরম কষ্টকর। এর উপর ভিড়ে ট্রেনে চড়া ও নামাতেও প্রচন্ড সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছে যাত্রীদের। বেনারস স্টেশনে কোচ ইন্ডিকেটর না থাকায় ট্রেন আসার পর সংরক্ষিত শ্রেণির যাত্রীদের ভিড়ে দৌড়ঝাঁপ করতে হয়েছে প্রাণ হাতে নিয়েই বলে যাত্রীদের অভিযোগ।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *