ধীমান রায়, কাটোয়া: উৎসবের মধ্যেই ঘটে গেল ভয়াবহ চুরি! দুর্গামন্দিরের দরজার তালা ভেঙে চুরির ঘটনা ঘটল অষ্টমীর রাতে! বর্ধমান জেলার কেতুগ্রাম থানার রাজুর গ্রামে বড়াল পরিবারের দুর্গা মন্দিরের তালা ভেঙে দুঃসাহসিক চুরির ঘটনা ঘটল বলে অভিযোগ। পরিবারের অভিযোগ, ৬ ভরি সোনার গয়না-সহ কিছু রূপোর গয়না চুরি হয়ে গিয়েছে। চোরেরা মন্দিরের ভিতর লণ্ডভণ্ড করে পালিয়ে যায়! এদিন বুধবার সকালে পরিবারের সদস্যরা মন্দিরে সাফাইয়ের কাজ করতে এসে নজরে পড়ে।
পরিবারের পক্ষ থেকে কেতুগ্রাম থানার পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন পরিবারের প্রবীণ সদস্য তপন বটব্যাল। তাঁর দাবি, “পুজোর আগে কেতুগ্রাম থানার আইসি ভিলেজ পুলিশকে দিয়ে আমাদের কাছে বলেছিলেন পুজোর সময় মন্দিরের সুরক্ষার জন্য সিসিটিভি ক্যামেরা লাগাতে হবে। সেজন্য ৩৫০০ টাকা দিতে হবে এবং সরকারি প্রচারের ফ্লেক্স বাবদ ৩২০০ টাকা লাগবে। এছাড়া দু’জন করে নৈশপ্রহরী মন্দিরে মোতায়েন রাখতে হবে। কিন্তু আমরা টাকা দিয়ে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগাতে রাজি হইনি।” তপনবাবুর অভিযোগ, ” পুলিশের প্রস্তাবে রাজি হইনি বলেই পুরো পরিকল্পনা মাফিক লোডশেডিং করে এই চুরি করা হয়েছে।” যদিও পুলিশ এই অভিযোগ মানতে রাজি হয়। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
কাটোয়া মহকুমা পুলিশ আধিকারিক কাশীনাথ মিস্ত্রি বলেন, “ঘটনার কথা শুনেছি। তবে এখনও পর্যন্ত অভিযোগ দায়ের হয়নি।” আর টাকা জমা রেখে বাধ্যতামূলকভাবে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানোর অভিযোগ প্রসঙ্গে মহকুমা পুলিশ আধিকারিক বলেন, “সর্বজনীন পুজোকমিটিগুলির ক্ষেত্রে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো এবং দু’জন করে নৈশপ্রহরী মোতায়েন রাখার কথা বলা হয়েছিল। পারিবারিক পুজোর ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক কিছু ছিল না। যেহেতু ওই পরিবারের পুজোর সময় দেবীপ্রতিমার গায়ে দামী অলঙ্কার পড়ানো হয়, তাই কেতুগ্রাম থানার আইসি ওনাদের কাছে ব্যক্তিগতভাবে প্রস্তাব দিয়েছিলেন যাতে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হয়। কিন্তু ওনারা রাজি হননি।” মহকুমা পুলিশ আধিকারিক আরও বলেন,” এরপরেও যদি ওই পরিবার পুলিশের বিরুদ্ধে আপত্তিকর অভিযোগ তোলেন, তাহলে আমরাও আইনি ব্যবস্থা নেব।”
জানা গিয়েছে, কেতুগ্রামের বড়াল বাড়ির দুর্গোৎসব ৪৮৩ বছরের প্রাচীন। দৌহিত্র বংশ বটব্যাল পরিবার মূলত পালা করে এই পুজো করেন। এছাড়া শরিক পরিবার রয়েছে। বনেদি পরিবার বলে নামডাক হয়েছে বটব্যালদের। পরিবারের অধিকাংশ সদস্যই পেশার সুবাদে বাইরে থাকেন। পুজোর সময় সকলে গ্রামে ফেরেন। দেবীর বেশ কিছু গয়না রয়েছে। বছরের অন্যান্য দিন বাড়িতে সেগুলি রেখে দেওয়া হয়। পুজোর সময় দেবী প্রতিমার অঙ্গে পড়ানো হয়। সেই গয়নাই চুরি হল!