ভোটার তালিকার ‘ভূত’ ধরতে গ্রাউন্ড লেভেল স্ক্রুটিনি তৃণমূলের, কর্মীদের হাতে নতুন তালিকা

ভোটার তালিকার ‘ভূত’ ধরতে গ্রাউন্ড লেভেল স্ক্রুটিনি তৃণমূলের, কর্মীদের হাতে নতুন তালিকা

ইন্ডিয়া খবর/INDIA
Spread the love


ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায় ও অর্ণব দাস: জানুয়ারি মাসে নতুন ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। বুথ লেভেল এজেন্ট ও বাকি সদস‌্যদের হাতে সেই তালিকা তুলে দিয়ে অঞ্চল ও পুরসভায় বুথ ধরে ধরে দায়িত্ব দিয়েছেন মন্ত্রী-বিধায়করা। যে যে ভোটারের নামে সন্দেহ হবে তাদের নিয়ে আলাদা তালিকা করে স্ক্রুটিনি হবে। ফোন করে, দরকারে ওই ঠিকানায় গিয়ে ভোটারের অস্তিত্ব যাচাই করে মেলাতে হবে তালিকা। যে বুথে যে কটা নামে সন্দেহ হবে তার তালিকা করে তুলে দিতে হবে রিটার্নিং অফিসারের কাছে। ভূতুড়ে ভোটার নিয়ে রাজ‌্যজুড়ে এই পদ্ধতিতে গ্রাউন্ড লেভেল স্ক্রুটিনির কাজ শুরু করে দিল তৃণমূল কংগ্রেস।

নতুন ভোটার তালিকার খসড়া প্রকাশ হলে তা যাচাইয়ের কাজ বরাবর করে থাকেন জনপ্রতিনিধিরা। এই প্রক্রিয়ায় নতুন কিছু নেই। কিন্তু গত ১০ ফেব্রুয়ারি মুখ‌্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ‌্যায় বিধায়কদের নিয়ে বৈঠকে এ নিয়ে কড়া বার্তা দেওয়ার পরই দলে নাড়াচাড়া শুরু হয়ে গিয়েছে। কোথাও জেলাশাসক, কোথাও এসডিও বা বিডিও-র দপ্তরে এ নিয়ে একাধিক জেলায় বা মহকুমায় ডেপুটেশন দেওয়ার কাজও শুরু করেছেন মন্ত্রী-বিধায়করা। ভোটার তালিকার কাজে সরাসরি যুক্ত থাকেন এমন একাংশের এসডিও বা বিডিওদের নিয়ে সন্দেহও সামনে এসেছে। সোমবার তারই রেশ টেনে সন্দেহের কথা বলেছেন বিধানসভার অধ‌্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ‌্যায়। তাঁর নিজের এলাকাতেও এমন কিছু ভূতুড়ে নাম মিলেছে। অধ‌্যক্ষর বক্তব‌্য, “আমার অঞ্চলেও অনেক ভুয়ো ভোটারের নাম আছে। কারও কারও বাড়ি শিলিগুড়ি। এসডিও, বিডিও অফিস থেকেই তো ভোটার তালিকা তৈরি করা হয়। আমাদের জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্ব খুব সীমিত। কোন নাম তোলা হবে বা বাদ দেওয়া হবে এটাই শুধু আমরা করতে পারি। কিন্তু এত ভুয়ো ভোটার আসছে কী করে তা সত্যিই চিন্তার!” এ নিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিও হতে পারে বলে আশঙ্কা তাঁর। বিজেপিকে নিশানা করে বলেছেন, “বিজেপি কি এই ঘটনায় যুক্ত? সবাই জানে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনকে কে পরিচালনা করে।” মঙ্গলবার অধ‌্যক্ষ নিজে বিডিও এবং এসডিও-র কাছে এ নিয়ে ডেপুটেশন দেবেন বলে জানিয়েছেন।

একই ইসুতে সোমবার নিজের কেন্দ্র খড়দহে ভোটার তালিকাভুক্তির আগে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের দাবি জানিয়ে উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক শরদকুমার দ্বিবেদীর কাছে ডেপুটেশন দিলেন পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, “মহারাষ্ট্র, দিল্লি, হরিয়ানায় ভূতুড়ে ভোটার নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। ভোটার তালিকায় নাম তোলার জন্য অনলাইন আবেদনের ক্ষেত্রে সঠিকভাবে যাচাই করা হচ্ছে না। বিজেপি এমন একটা ভোটার তালিকা তৈরি করতে চাইছে যাতে ছাব্বিশের নিবার্চনে তারা জিততে পারে। প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী-সহ একাধিক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে এনেও বাংলায় বিজেপি জিতছে পারেনি। তাই এই পথ নিয়েছে।” তাঁর সাফ কথা, “মুখ্যমন্ত্রীর এত পরিশ্রম মানুষের জন্য এত প্রকল্প চালুর পরেও অন্যায়ভাবে যদি কেউ ভোটে জেতার চেষ্টা করে তা প্রতিহত করা প্রয়োজন, এটা আমাদেরই দায়িত্ব।” শুধু ভুতুড়ে ভোটার খুঁজে বের করা নয়, তালিকায় মৃতের নামও এই সুযোগে বাদ দেওয়ার কাজ চলবে। একাধিক বিধায়কের কথায়, “বুথে যঁারা খসড়া তালিকা মেলানোর কাজ করেন তঁারা সাধারণভাবে এলাকার জেনুইন ভোটারদের চেনেন। নতুন ভোটার হলে তার নাম-ঠিকানা এমনিতেই যাচাই হয়। এবার সেই কাজই হবে আরও গভীরে বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে।”



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *